২৪-এর গণবিপ্লব ও জিয়ার প্রত্যাশিত জাতীয় ঐক্য
জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের গণ-অভ্যুত্থান তথা সৈনিক-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে জাতীয় সংহতির সৃষ্টি করেছিলেন, তা গোটা জাতির জন্য এখন পাথেয় হয়ে রয়েছে-ড. আবদুল লতিফ মাসুম [সূত্র: নয়া দিগন্ত, ৩০ মে ২০২৫]

প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ
জীবন বাংলাদেশ আমার মরণ বাংলাদেশ
এটি ছিল শহীদ জিয়ার প্রিয় গান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এটিকে তাদের দলীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করেছে। বস্তুত গানের প্রতিটি কলির সাথে জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্মের সম্পর্ক রয়েছে। সত্যিই বাংলাদেশ ছিল তার জীবন এবং বাংলাদেশ ছিল তার মরণ। তার জীবন আঙিনায়, প্রতিটি ধূলিকণায় মিশে ছিল স্বপ্নের বীজ। তার জীবন ছিল স্বল্প। ক্ষমতায় ছিলেন অল্প সময়ের জন্য। সব মিলিয়ে পাঁচ-ছয় বছর। এই অল্প সময়ের মধ্যে তিনি এমন সব মৌলিক আদর্শ, স্থায়ী সংস্কার ও জাতীয় ঐক্যের ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নির্মাণ করে গেছেন, বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র যত দিন বেঁচে থাকবে তত দিন জিয়ার জয়গান গাইবে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জাতিসত্তার পুনর্গঠন, গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্মাণ, পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ ও উন্নয়ন কৌশল- প্রতিটি ক্ষেত্র শহীদ জিয়ার স্পর্শে হয়েছে ধন্য। এ জাতির নেতৃত্ব, কর্মকৌশল ও জাতীয় স্বার্থে তিনি যে পথপ্রদর্শন করেছেন তা প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষের আরাধ্য বিষয়। তৃতীয় বিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা মুক্তিযুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দেন তারা নাগরিক সাধারণের কাছে সম্মোহনী নেতৃত্ব (ঈযধৎরংসধঃরপ খবধফবৎংযরঢ়) বলে কথিত হন। নিপাতনে সিদ্ধ ঘটনার মতো জিয়াউর রহমান সেই সম্মোহনী নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করেন। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, সঙ্ঘাত সমরে তৃতীয় অবস্থান, সুশাসন ও উন্নয়নের উদ্দীপনা দ্বারা তিনি গোটা জাতিকে আন্দোলিত করেন। সামরিক শাসকরা তাদের পতনের পর অথবা মৃত্যুর পর ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হন। বিস্ময়ের ব্যাপার, সেই ইতিহাসকেও অস্বীকার করে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের ইতিহাসে চির অক্ষয়, চির অব্যয় ভূমিকা রেখে গেছেন। সে জন্যই তাকে স্মরণ করতে হয় বাস্তব কারণে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব অভ্যুত্থান হলো তার সাথেও রয়েছে জিয়াউর রহমানের অদৃশ্য সংযোগ। ইতিহাস জানে, পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সিপাহি জনতার অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তিনি কোনো অভ্যুত্থান বা প্রতিবিপ্লবে নায়ক কিংবা খলনায়ক ছিলেন না। ঘটনার অনিবার্যতায় সিপাহি-জনতার আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিভূ হিসেবে তাকে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করতে হয়। তিনি যেন ইতিহাসের এক বরকতময় পুরুষ। আবারো সাযুজ্য খুঁজে পাওয়া যায় চব্বিশের গণবিপ্লবের সাথে। সেই ৭ নভেম্বরের সৈনিক জনতার বিপ্লবের মধ্যে, ভাবাদর্শের সাথে। সে দিন কর্নেল তাহের তার বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটাতে চেয়েছিলেন। সেভাবেই সব নীলনকশা প্রণীত হয়েছিল। কিন্তু সৈনিক-জনতা একাকার হয়ে স্লোগান দিয়েছিল- ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’। এ স্লোগানটি দিয়েছিল তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে, কর্নেল তাহেরের শিখিয়ে দেয়া ভাষার বিপরীতে।
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে বা বিপ্লবে কোনো কর্নেল তাহের ছিল না, ছিল অনেক অনেক আবু বকর, আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ফারহান ফাইয়াজ, ওয়াসিম আকরাম- এরকম আরো অনেকে। তাদের কেউ স্লোগান শিখিয়ে দেয়নি। কিন্তু জনতার মুখে ধ্বনিত হয়েছে ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’। কেউ তাদের শিখিয়ে দেয়নি মূর্তি উৎপাটনের কথা। বিশ্বাসের জোরে উৎপাটিত হয়েছে সেই লৌহ কঠিন মূর্তি। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরে একটি শক্তির পরাজয় হয়েছিল এবং জয়লাভ হয়েছিল ‘স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির’। এবারো এই বিপ্লবের মাধ্যমে জাতির দিক পরিবর্তন হয়েছিল। উচ্চারিত হয়েছিল স্লোগান- ‘ঢাকা না দিল্লি-ঢাকা ঢাকা’। জনতার এই স্লোগান স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রনীতিরও সমীকরণ বদলে দিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সেই সময়ের বৈশ্বিক বলয়েরও পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। বাংলাদেশ অর্জন করেছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা। একজন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দৃঢ়তার সাথে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের সক্ষমতার জানান দিতে পেরেছেন।
একাত্তরের স্বাধীনতার পর স্বাভাবিক ঐক্যের বদলে আওয়ামী লীগ সরকার অস্বাভাবিক অনৈক্যের সৃষ্টি করেছিল। তাদের বিভাজনের রেখা ছিল ‘মুজিবনগরীয়-অমুজিব নগরীয়’, মুক্তিযোদ্ধা বনাম পাকিস্তান ফেরত বাহিনী। বলতে গেলে আওয়ামী লীগ বনাম সাধারণ মানুষ। বিভাজন, দুর্নীতি ও দুঃশাসনে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস, জীবনবোধ ও বিশ্বাসের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিল। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলাম নির্বাসিত হয়েছিল। শেখ সাহেব ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলাম ও মুসলমানদের পরিচয়ের সব সূত্র মুছে দিয়েছিলেন। ইসলামের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার পরপরই অনুচ্চভাবে উচ্চারিত মুসলিম বাংলার সেন্টিমেন্ট ধারণ করতেন। জাতীয়তাবাদ যে শুধু ভাষানির্ভর নয় এবং শুধু ধর্মনির্ভর নয়, জিয়া তার ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধে তা উপস্থাপন করেন। পরবর্তীকালে জাতীয়তাবাদের আরো উপাদান- এই জাতির ভৌগোলিক সীমানা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, অর্থনীতি-রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধ সংযোগ করে সমন্বিত ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ এর দর্শন প্রচার করেন।
যেহেতু ধর্ম এই জাতির প্রাণ সেহেতু তিনি ধর্মীয় ভাবধারা ও ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে কাজ করার সুযোগ দেন। দুর্জনেরা বলে থাকেন, তিনি স্বাধীনতা-বিরোধীদের পুনর্বাসন করেছেন। কথাটি সত্য নয়। শেখ সাহেবই তাদের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করে গিয়েছিলেন। এ দেশে কিছু বদ মতলবের বুদ্ধিজীবী ইসলাম ও পাকিস্তান একাকার করে ফেলেন, আসলে ইসলামের বিরোধিতাকে যৌক্তিক করার জন্য। জিয়াউর রহমান সূচিত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ বিগত ৫০ বছরে স্থায়িত্ব লাভ করেছে, প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন করেছে। শেখ হাসিনা তার পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীতে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ সন্নিবেশিত করতে বাধ্য হন। বিগত আওয়ামী লীগের রাজত্বকালে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অনুসৃত ধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে ও আলেম ওলামাদের প্রতি নিপীড়নে প্রবলভাবেই ইসলাম ফিরে আসে চব্বিশের গণবিপ্লবে। বিপ্লবের ভাষা ও ভাবধারা যারা অনুধাবন করেন তারা তা স্পষ্টতই স্বীকার করেন। কিন্তু এ দেশের জীবনাদর্শের বিরোধী ‘বাম’ গোষ্ঠী চব্বিশে ইসলামী আদর্শের পুনঃউজ্জীবনে নিজেদের পরাজয় লক্ষ করেন। নানাভাবে তারা সরাসরি ইসলামের বিরোধিতা না করতে পারলেও আকারে প্রকারে সুযোগ বুঝে আওয়ামী জিকিরের পক্ষে বিবৃতি দেন।
জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান প্রতিটি সেক্টরে জাতীয় ঐক্যের পক্ষে কার্যক্রম শুরু করেন। সেনাবাহিনীতে বিরাজিত মুক্তিযোদ্ধা বনাম পাকিস্তান ফেরত দ্ব›দ্বটির অবসানে যার যা প্রাপ্য তিনি তা প্রদান করেন। তিনি দায়িত্ব লাভের পরপরই জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী সাংবিধানিক পরিবর্তন সাধন করেন। ক. সংবিধানে বিসমিল্লাহ সংযোজন করেন। খ. প্রতিবেশী নির্দেশিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের পরিবর্তে ‘আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থা ও বিশ্বাস’ স্থাপন করেন। গ. পরিত্যক্ত সমাজতান্ত্রিক সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থে গ্রহণ করেন। ঘ. বাকশালের অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রে ফিরে আসেন। মুসলিম বিশ্বের সাথে সম্পর্ক রক্ষাকে তিনি এতটাই গুরুত্ব দেন যে, এ ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি করেন। তার পররাষ্ট্রনীতিতে মুসলিম বিশ্ব সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব লাভ করে। তিনি তার সুফলও ফিরে পান। মুসলিম বিশ্ব ত্রাণ, অর্থায়ন, আমদানি-রফতানি এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে তার সময়কালে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার লাভ করে। মুসলিম বিশে^র আস্থার প্রতীক হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ‘আল কুদস’ কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ইরাক-ইরান যুদ্ধে একজন সম্মানীয় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিবেচিত হন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রæনাইয়ের সাথে নির্দেশিত নতুন নীতি খড়ড়শ ঊধংঃ চড়ষরপু বলে খ্যাতি অর্জন করেন। পরিবর্তিত সংবিধান এবং নিজের প্রতি জনগণের স্বীকৃতির বৈধতার জন্য তিনি গণভোট গ্রহণ করেন।
দেশের সব ধারার ডান, বাম নির্বিশেষে নেতারা গণভোটকে সমর্থন জানান। দেশজ পরিস্থিতি নেতৃত্বের শূন্যতা ও রাজনৈতিক নীরবতা তার শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য যথেষ্ট ছিল। এমনকি মওলানা ভাসানীর নিঃশর্ত নির্বাচন না দেয়ার পরামর্শ সত্তে¡ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্সিয়াল ভোট এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করেন। একটি বিষয় এখানে তাৎপর্যপূর্ণ যে, সংসদীয় নির্বাচনে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সব মত ও পথের প্রতিনিধিত্ব লক্ষ করা যায়। এই সংসদে ডান ধারার খান এ সবুর, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মাওলানা আব্দুর রহিমের মতো নেতাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। অন্য দিকে বাম ধারার প্রফেসর মুজাফফর আহমদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও তোয়াহার মতো বাম ধারার অবস্থান ছিল। বিগত ৫০ বছরেও সব মতের সব পথের এরকম সম্মিলন পরিদৃষ্ট হয়নি।
চব্বিশের গণ-আন্দোলন তথা গণবিপ্লবের মাধ্যমে এই সময়ে আবার ১৯৭৯ সালের মতো একটি সর্বজনীন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই বিপ্লবের পেছনে বাম ধারার সুস্পষ্ট সমর্থন ও অংশগ্রহণ যেমন ছিল তেমনি বাম ধারার দেশপ্রেমিক অংশের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব ধারার সব মতের সব পথের নেতাদের সমর্থনও দেশের ইতিহাসে আরেকটি অনন্য নজির।
জিয়াউর রহমান ছিলেন সঙ্কট সন্ধিক্ষণের নেতা। বাংলাদেশ জাতির প্রতিটি সঙ্কটে তিনি এবং তার উত্তরাধিকার দিয়েছে নির্দিষ্ট নির্দেশনা। ১৯৭১ সালে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখনকার মতো সে সময়ও পলায়ন করে, তখন জিয়াউর রহমান জাতির ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান। ঘোষণা করেন স্বাধীনতা। আবার ১৯৭৫ পরবর্তী টালমাটাল সময়ে সৈনিক জনতা তাকে ক্ষমতার কেন্দ্রস্থলে স্থাপন করে। তিনি সেনাবাহিনীতে ঐক্য ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। জনগণের মধ্যে বিতর্ক, বিভেদ ও বিদ্বেষের অবসান ঘটিয়ে জাতীয় শৃঙ্খলা ঐক্য নিশ্চিত করেন। পরবর্তীকালে ১৯৯০ সালে জিয়াউর রহমানের উত্তরাধিকার তার সহধর্মিণী গণতন্ত্রের সংগ্রামে আপসহীন নেত্রী হিসেবে অভিষিক্ত হন। নব্বই-পরবর্তীকালে জাতীয় ঐকমত্যের দিকে তাকিয়ে বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তন করেন। এখন বাংলাদেশের জন্য আরেকটি সঙ্কটময় সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার এবং প্রতিবেশীর নিত্যদিনের ষড়যন্ত্রে বাংলাদেশ আক্রান্ত। জাতি বিশ্বাস করতে চায়, এই সময়ও জিয়া পরিবার এবং তার উত্তরাধিকার জাতীয় সঙ্কটে উদ্ধারকারী হিসেবে জাতির ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে।
জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের গণ-অভ্যুত্থান তথা সৈনিক-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে জাতীয় সংহতির সৃষ্টি করেছিলেন, তা গোটা জাতির জন্য এখন পাথেয় হয়ে রয়েছে। পরবর্তীকালে মতাদর্শিক দ্ব›দ্ব বিরোধে না জড়িয়ে একটি মধ্যপন্থী নীতির মাধ্যমে তিনি জাতিকে একত্রিত করেন। চব্বিশ-পরবর্তী যে রাজনৈতিক বিভেদ, বিতর্ক, দ্বন্দ্ব ও বিদ্বেষ দেখা যাচ্ছে, একমাত্র জিয়াউর রহমানের জাতীয় সংহতির ধারণার মাধ্যমে তার অবসান হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান সৃষ্ট তার আদর্শে লালিত এ সময়ের নিরঙ্কুশ জনপ্রিয় দল বিএনপির ভূমিকা অনিবার্য। সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে জাতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের পথে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করবে- জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে দাঁড়িয়ে এমনটিই জাতির প্রত্যাশা।
লেখক : অধ্যাপক (অব:), সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়