৩৬ জুলাই : জাতীয় ঐক্যের প্রতীক
ড. এ কে এম মাকসুদুল হক । সূত্র : নয়া দিগন্ত, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫

৩৬ জুলাই একটি কাব্যিক আবিষ্কার। ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট এই ৩৬ দিনে পৃথিবীর ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব সফল অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে। সরকারি হিসাবে এই অভ্যুত্থানে ১৩২ জন শিশু-কিশোর এবং ১১ জন নারী নিহত হয়েছেন। মোট ৮৬৫ জন শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬৫৯ জন। এর মধ্যে পঙ্গু হয়েছেন ৫৫৫ জন। শহীদদের মধ্যে বরিশালে ১০৪ জন, চট্টগ্রামে ১২০, খুলনায় ৬৮, ময়মনসিংহে ৭৪, রাজশাহীতে ৫৪, রংপুরে ৬১, সিলেটে ৩২ এবং বাকিরা ঢাকার (প্রথম আলো : ১৯/১২/২০২৪)।
মাত্র ৩৬ দিনে সফলতা এলেও এটা ৩৬ দিনের আন্দোলন ছিল না। স্বৈরাচারবিরোধী এই আন্দোলন ছিল দীর্ঘ এক যুগের। ভারতের প্রেসক্রিপশনে জেনারেল মইন ইউ আহমেদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তবে তারা বুঝতে পারে অতীত কর্মকাণ্ডের কারণে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা তাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা তাই তারই উচ্ছিষ্টভোগী প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের সহযোগিতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রথা বাতিল করে দেয়।
সেই থেকেই (২০১৩ সালে) শুরু হওয়া এই স্বৈরাচার হটানোর আন্দোলনে অসংখ্য বিরোধী নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। আন্দোলন দমানোর জন্য সরকার ব্যবহার করে এ দেশের মুখচেনা একশ্রেণীর বুদ্ধিজীবী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া, পুলিশ, র্যাব এবং প্রশাসনকে। আর প্রতিবেশী দেশ পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী সরকারকে সহযোগিতা করতে থাকে। ফলে ‘বিএনপি-জামায়াতের’ অগণিত নেতা-কর্মী আন্দোলনের বলি হয়। সরকার বুঝতে পারে, ‘বিএনপি-জামায়াতের’ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে তারা টিকতে পারবে না। ফলে সরকার দ্বিমুখী আক্রমণ চালায়।
এক দিকে ‘বিএনপি-জামায়তে’র ঐক্যে ভাঙন ধরানোর জন্য নানা কূটচাল চালতে থাকে। অন্য দিকে রাজপথে চালায় পুলিশ-র্যাবের আক্রমণ। প্রথমেই তারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের একে একে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে। অন্যদের জেলে পুরে ‘কাস্টডিয়াল ডেথে’র ব্যবস্থা করে। সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড়, গুম, খুনের শিকার হতে থাকেন জামায়াত-শিবিরসহ বিরোধী নেতা-কর্মীরা। ‘বিএনপি’র শীর্ষ নেত্রীকে ফরমাইশি বিচারে কারাবন্দী রাখা হয়। আরেকজন প্রভাবশালী নেতাকে যুদ্ধাপরাধের বিতর্কিত আদালতের মাধ্যমে ফাঁসি দেয়া হয়। শীর্ষ নেতাদের অনেককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে পুরে রাখা হয়।
জেল-জুলুম মাথায় নিয়েই বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন অব্যাহত রাখে। সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের কার্যালয় তালাবদ্ধ রাখা হলেও নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। এর মধ্যে বিএনপি বেশ কয়েকটি আন্দোলন সফলতার দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছিল; কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি এবং গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় সরকার বিএনপির আন্দোলন নস্যাৎ করে দেয়।
দীর্ঘ ১২ বছরের আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াত’সহ অন্যান্য গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মী হতাহত হন। অনেকে গুম হন, কেউ বা জেলেই কাটিয়ে দেন দীর্ঘ দিন। আর বাকিরা দিনে আদালতের বারান্দায় এবং রাতে পালিয়ে বেড়ানোর মাধ্যমেই ১২টি বছর কাটান। এভাবে দীর্ঘ ১২ বছরের এক রক্তক্ষয়ী এবং জীবন-সম্পদ উৎসর্গকৃত আন্দোলনের মাধ্যমে ময়দান প্রস্তুত করা হয়েছিল। আন্দোলনের এই ভূমি অত্যন্ত উর্বর হয়ে উঠেছিল। ফসলও বোনা হয়েছিল। শুধু পাকা ফসল আহরণের ক্ষণটুকুই বাকি ছিল।
২০১৮ সালের কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বাতিল হওয়া কোটা-প্রথা পুনরায় ফিরিয়ে আনার কূটচাল চালে সরকার। এবার তারা আদালতের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার পাঁয়তারা করে। জুনের প্রথম সপ্তাহে উচ্চ আদালত হঠাৎ করেই কোটা-প্রথা বিলুপ্তির সরকারি প্রজ্ঞাপন বাতিলের আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে ছাত্ররা পয়লা জুলাই থেকে আন্দোলন শুরু করেন নিয়মতান্ত্রিকভাবে। ১৪ জুলাই স্বেচ্ছাচারী প্রধানমন্ত্রীর বিরূপ মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ করেন। এই সময় ছাত্রীরাও ব্যাপকভাবে আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন ছাত্রী হলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্রীদের ওপর বর্বরোচিত এবং কাপুরুষোচিত হামলা করে। প্রতিক্রিয়ায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ব্যাপকভাবে আন্দোলনে অংশ নেন। ফলে ছাত্র আন্দোলন একধাপ সফলতার দিকে এগিয়ে যায়।
জুলাইয়ের ১৫ এবং ১৬ তারিখে কোটাবিরোধী আন্দোলন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের গুলিতে সারা দেশে ছয়জন ছাত্র নিহত হন। এতে কোটাবিরোধী আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এ সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্ররা আন্দোলনে শরিক হন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাজপথে নামলে আন্দোলনের তীব্রতা শত গুণ বেড়ে যায়। রাজধানীসহ সারা দেশ অচল হয়ে পড়ে। ফলে সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে ওঠে।
এ দিকে সরকারও তাদের অবস্থান আরো কঠোর করতে থাকে। সরকারের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী : পুলিশ, র্যাব, আর্মড পুলিশ ইত্যাদি সবাই প্রকাশ্যে জীবন্ত বুলেট ছুড়ে আন্দোলন থামানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে। হেলিকপ্টারে আকাশ থেকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। এতে বহুতল ভবনের বারান্দায়-ঘরে নারী-শিশু নিহত হয়। অন্য দিকে রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা, উত্তরায় মুগ্ধ হত্যা, সাভারে ইয়ামিনকে এপিসি থেকে রাস্তায় ফেলে হত্যা ইত্যাদি ঘটনার ভিডিও-চিত্র দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে তোলে। পুলিশ-র্যাবের বর্বরতায় পুরো জাতি বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ফলে নারী-শিশু নির্বিশেষ পেশাজীবী, শ্রমিক, শিক্ষক, অভিভাবক সবাই সরকার পতনের আন্দোলনে শরিক হয়। আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে দ্রুত এগোতে থাকে।
ছাত্ররা সামনে থেকে আন্দোলন পরিচালনা করতে থাকেন। আর পেছন থেকে ‘বিএনপি-জামায়াত’সহ সব বিরোধী রাজনৈতিক দল তাতে সমর্থন দেয়। তারা লজিস্টিক, মনোবল, জনবল, বুদ্ধি-পরামর্শ ইত্যাদি দিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে থাকেন। ফলে ছাত্রদের সব ভয় দূর হয়ে যায়। তারা অকাতরে গুলি উপেক্ষা করে এগিয়ে যান।
আন্দোলনের এই পর্যায়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরাও যুক্ত হন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলেন। এমনকি তারা আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে স্বৈরাচার সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দেন। ফলে আন্দোলনকারীরা দ্বিগুণ উজ্জীবিত হন।
আন্দোলন গভীরতর হতে থাকলে বেশকিছু বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রকাশ্যে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন এবং ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানান। বুদ্ধিজীবী-সাংবাদিকরা তীব্র ভাষায় সরকারের জুলুম ও ছাত্রহত্যার নিন্দা জানান। তাদের এমন সাহসিকতা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করে। ফলে গ্রামগঞ্জে আন্দোলনের বিস্তৃতি ঘটে এবং সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
প্রবাসী সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। তারাও এক যুগ ধরে স্বৈরাচারের বিপক্ষে জনমত গড়ে তুলেছিলেন অবিরাম। তাদের আন্দোলনটিই আসলে প্রবাসীদেরকে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়ানোর উৎসাহ জুগিয়েছে। সাংবাদিক কনক সারোয়ার, পিনাকি ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন, মাহমুদুর রহমান এবং অন্যদের লড়াইটা ছিল অন্যরকম। তারা পুরো সময়টাজুড়ে দেশী এবং প্রবাসী আন্দোলনকারীদের রসদ জুগিয়েছেন লাগাতারভাবে।
শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক ভূমিকা। ১৯ জুলাই সরকার কারফিউ জারি করে এবং সেনাবাহিনী মাঠে নামায়। কিন্তু সেনাসদস্যরা অত্যন্ত সাবধানী পদক্ষেপ নেন। তারা শুধু ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে আন্দোলন দমাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু নিরস্ত্র নাগরিকদের বুকে গুলি চালাতে অস্বীকার করেন। ৩ আগস্ট দেশব্যাপী সব সেনা অফিসারকে নিয়ে সেনাপ্রধান দরবার করেন। এতে সরাসরি এবং অনলাইনে সেনাবাহিনীর সব কর্মকর্তা যোগদান করে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
কেউ কেউ ‘পুলিশ-র্যাবের’ ছাত্র-জনতা হত্যার বর্ণনা দিয়ে আবেগী বক্তব্য রাখেন। অন্য দিকে সেনাবাহিনীর নিজস্ব গোয়েন্দা অফিসার ও জোয়ানরা তাদের মনোভাব সত্যনিষ্ঠভাবে সেনা সদরে জানিয়ে দেন। ফলে সেনাবাহিনী হত্যাযজ্ঞের বিপক্ষে দাঁড়ায় এবং আন্দোলনকারীদের সাথে রাজপথে ভাই-বন্ধুসুলভ আচরণ করেন। এতে সরকারের মেরুদণ্ড ভেঙে পড়ে। সরকারের পতন একরকম নিশ্চিত হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা পরিস্থিতি বুঝে দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেন।
স্বৈরাচারী সরকারের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকে দেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসাররা। তারা ৪ আগস্ট ‘রাওয়া’ অডিটোরিয়ামে গণহত্যাবিরোধী সমাবেশ করেন। প্রাক্তন দু’জন সেনাপ্রধান জেনারেল নুরুদ্দীন খান এবং জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়াসহ অনেক জ্যেষ্ঠ নাগরিক সেনাকর্মকর্তা এই সভায় যোগ দেন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) সাখাওয়াত বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া অত্যন্ত আবেগঘন বক্তব্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানান এবং প্রিয় সেনাবাহিনীকে দূরে থাকার আহ্বান জানান। পরদিন ৫ আগস্ট তারা মিছিল করে চূড়ান্ত আন্দোলনে শরিক হন। অন্য দিকে ২ আগস্ট মিরপুর ‘ডিওএইচএস’-এর অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তারা পরিবার-পরিজনসহ গণহত্যার বিরুদ্ধে মিছিল করেন। এসব তৎপরতা সেনাবাহিনীকে সরকারের অন্যায় আদেশ অমান্য করতে সাহসী করে তোলে।
এভাবে দীর্ঘ দিনের আন্দোলনের ফসল তোলার সময়টি চলে আসে। আন্দোলন চূড়ান্ত বিজয়ের একটি বড় উপাদান ছিল ছাত্রদের কৌশলগত নেতৃত্ব। তারা একক নেতৃত্বের পরিবর্তে সমন্বয়কদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিলেন। ফলে সরকার নেতৃত্বের কোনো তল খুঁজে পাচ্ছিল না। কোন নেতাকে গুম করলে আন্দোলন থেমে যাবে, সরকার সেটিই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। একজনকে ধরে তো আরেকজন সমন্বয়ক দাঁড়িয়ে যান।
তিনজন প্রথম সারির সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটক রাখার পর দেখা যায় অন্য সমন্বয়করা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে এই কৌশলগত নেতৃত্বের কাছে সরকারের গোয়েন্দা, তাদের সহযোগী বিদেশী গোয়েন্দাসহ সব রাষ্ট্রযন্ত্র পরাভূত হয়।
সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে তারুণ্যের সাহসিকতা। মিছিলে পাশের লোকটি গুলিতে নিহত হয়ে পড়লেও কেউ দমে যাননি বা পালাননি। নিহত-আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে বাকিরা দ্বিগুণ সাহস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ছেলেদের অনেকেই মা-বাবার কাছে শেষ বিদায় নিয়ে রাজপথে নেমেছেন। এভাবে জাতির এক অভূতপূর্ব ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়েই আপামর জনতার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার সূর্য দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের আকাশে উদিত হয়।
তরুণ প্রজন্ম বুদ্ধিমত্তা ও সাহসের সাথে সফলতা নিয়ে আসে। প্রথমেই তারা চিত্তাকর্ষক আধুনিক ঢঙে আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। আন্দোলনের নাম দেয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এতে আন্দোলনটি সর্বজনীনতা পায়। এরপর তারা একটির পর একটি
‘স্মার্ট’ প্রোগ্রাম দিতে থাকে। প্রথমে সাধারণ কর্মসূচি দেয়া হয়।
এরপর ‘শাটডাউন’, ‘রোড মার্চ’, ‘মার্চ টু বঙ্গভবন’, ‘প্রেসিডেন্টকে স্মারকলিপি প্রদান’, ‘কমপ্লিট শাট ডাউন’ ইত্যাদি প্রোগ্রামের মাধ্যমে আন্দোলকে বিজয়ের বন্দরের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। চূড়ান্তভাবে তারা ৬ আগস্ট ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ নামের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কিন্তু ৪ আগস্ট হঠাৎ করে ‘লংমার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি এক দিন এগিয়ে তা ৫ আগস্ট পালনের ঘোষণা দেন। মূলত এটিই ছিল আন্দোলন বিজয়ে পৌঁছার শেষ মোড়। এই হঠাৎ পরিবর্তনে ইতোমধ্যে পিছু হটা সরকার দিশেহারা হয়ে পড়ে।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক