কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

আলাস্কা সম্মেলনে কে জয়ী হলো

জেমস বে [প্রকাশ : যুগান্তর, ১৭ আগস্ট ২০২৫]

আলাস্কা সম্মেলনে কে জয়ী হলো

আমার মনে হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মূল বার্তাটি হলো : পরিস্থিতি তত খারাপ হয়নি। তারা তাদের সব চাওয়া পায়নি। কিন্তু, আপনারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা শুনেছেন-তারা ব্যাপারটিকে বড় করে দেখাচ্ছিল-এটি পুতিনের সঙ্গে অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি বৈঠক ছিল, এবং এটি একটি প্রক্রিয়ার শুরু।

 

 

আমাকে বলতে হবে, আমি সন্দেহ করি, এটি আটলান্টিকের অপর প্রান্তে একেবারে ভিন্নভাবে দেখা হবে। কারণ ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ বৈঠক থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আশা করেছিলেন। প্রথমত, একটি যুদ্ধবিরতি। কিন্তু কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি। দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় একটি বৈঠক। এটিকে বর্ধিত করা এবং ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে আনা। ট্রাম্প, জেলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে একটি তিন পক্ষীয় বৈঠক।

 

 

এ বিষয়েও কোনো চুক্তি হয়নি। আসলে, দ্বিতীয় বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তবে সেটি হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মস্কো যাত্রা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের পুনর্বাসন...যদি মার্কিন নেতাকে মস্কো সফর করতে হয়।

 

অন্যদিকে, ইউরোপীয় নেতারা চেয়েছিলেন, এ বৈঠক সম্পূর্ণভাবে হোক ইউক্রেনের ওপর কেন্দ্রীভূত। তারা চাননি এটি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার দিকে সম্প্রসারিত হোক।

 

বস্তুত এ বিষয়গুলোই এ বৈঠকে ঘটেছে। সুতরাং, আমার মনে হয় ইউরোপে এটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য বড় একটি জয় হিসাবে দেখা হবে, এবং ইউক্রেনবিষয়ক কূটনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হবে।

 

 

ট্রাম্প বলেছেন, পুতিন ও জেলেনস্কি যুদ্ধবিরতি বৈঠক করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও পুতিন যুদ্ধবিরতি আনার জন্য একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ফক্স নিউজের শন হ্যানিটির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এখন একটি বৈঠক নির্ধারণ করা হচ্ছে; প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং আমিও সম্ভবত সেখানে থাকব।’

 

 

তিনি বলেন, ‘এখন আসল বিষয় হলো, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যে পর্যন্ত না এটি শেষ করছেন। আমি আরও বলব, ইউরোপীয় দেশগুলোকেও এতে কিছুটা জড়িত হতে হবে। কিন্তু সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির হাতে...আর যদি তারা চান, আমি পরবর্তী বৈঠকে থাকব।’

 

সোভিয়েত পাইলটদের সমাধিতে পুতিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট গতকাল সন্ধ্যায় আলাস্কা ত্যাগের আগে সেখানে একটি সমাধিক্ষেত্রে সোভিয়েত পাইলটদের প্রতি সম্মান জানিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বেশ কয়েকজন সোভিয়েত পাইলট আলাস্কা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া কয়েকটি বিমান প্রশিক্ষণ বা পরিবহণের সময় মারা গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেরই ফোর্ট রিচার্ডসন ন্যাশনাল সেমেটারিতে দাফন হয়েছে, যা শীর্ষ সম্মেলনের স্থান অ্যাঙ্কোরেজের কাছে। পুতিন যুদ্ধকালীন পাইলটদের ত্যাগকে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অতীতের সহযোগিতার একটি উদাহরণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

 

অন্যদিকে অ্যাঙ্কোরেজে ডেলেনি পার্ক স্ট্রিপে একটি বিশাল ইউক্রেনীয় পতাকা উড়ছিল, যা ছিল ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুতিনকে শহরে আমন্ত্রণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ। তবে ট্রাম্প সমর্থকরাও উপস্থিত হয়ে পতাকা নেড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন।

 

এদিকে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পুতিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের লাল গালিচা অভ্যর্থনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন, ‘পশ্চিমা মিডিয়া এমন এক অবস্থায় আছে, যাকে পাগলামো বলা যেতে পারে। তারা গত তিন বছর ধরে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলছে; আর আজ তারা দেখল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রুশ প্রেসিডেন্টকে লাল গালিচা দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে।’

 

আলজাজিরা থেকে ভাষান্তরিত

জেমস বে : নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে কর্মরত আলজাজিরার কূটনৈতিক সম্পাদক