কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

আমেরিকা, চীন, ভারত ও বাংলাদেশের কাছে রাখাইন গুরুত্বপূর্ণ কেন

মোবায়েদুর রহমান। সূত্র : যুগান্তর, ০৪ মে ২০২৫

আমেরিকা, চীন, ভারত ও বাংলাদেশের কাছে রাখাইন গুরুত্বপূর্ণ কেন

কক্সবাজার থেকে আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত মানবিক করিডর যখন ‘টক অব দি কান্ট্রি’, তখন যুদ্ধ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি মন্তব্য সমগ্র দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছে। মানবিক করিডর স্থাপন তো দূরের কথা, যখন সেটি নিয়ে কেবল ৪-৫ দিন হলো আলোচনা শুরু হয়েছে, তখন অনেক দায়িত্বশীল মহল অনেক দায়িত্বহীন উক্তি করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো কেন? কেউ কেউ তো এতদূরও বলছেন যে, এর ফলে নাকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্নও হতে পারে। যে ইউনূস বিশ্বে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন, তিনি কি এমন অবিবেচকের মতো কাজ করতে পারেন, যার ফলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে? তাদের সেই প্রশ্নের যোগ্য জবাব মিলেছে গত বুধবার ৩০ এপ্রিল বিমানবাহিনীর এক অনুষ্ঠানে।

 

 

৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠিত হলো। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা যা বলেছেন, একটি জাতীয় বাংলা দৈনিকে তার শিরোনাম করা হয়েছে নিুরূপ : ‘ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে-প্রধান উপদেষ্টা’। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি, যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী। তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যুগোপযোগী বিমানবাহিনী গড়ে তুলতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

 

 

আমাদেরই প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। সকালের খবরে দেখলাম, হয়তো গুজব, আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। কাজেই এ পরিস্থিতির মধ্যে যুদ্ধের প্রস্তুতি না নেওয়াটা আত্মঘাতী। প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই। এটা এমন এক পরিস্থিতি, জয়ই একমাত্র অপশন। পরাজয় এখানে কোনো অপশন হতে পারে না। কাজেই আমাদের প্রস্তুতি কত উচ্চ পর্যায়ে নিতে পারি, তার চেষ্টা থাকতেই হবে।

 

 

উদ্ধৃতিটা বেশ বড় হয়ে গেল। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাইন্ডসেট যেন জনগণ ভালোভাবে বুঝতে পারে, সেজন্যই এ লম্বা উদ্ধৃতি দিতে হলো। তার এ বক্তব্য থেকে এটা ধরে নেওয়া যায়, তিনি যদি লম্বা সময় রাষ্ট্রের দায়িত্বে থাকতেন, তাহলে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী অর্থাৎ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে হিসাবে ধরার মতো বাহিনী হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব হতো। যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা করেন, তারা কি দেখছেন না যে, বিগত সাড়ে ১৫ বছর পর এই প্রথম ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে বাংলাদেশের সরকার? ভারত হিটলারের গোয়েবলসের ডাহা মিথ্যাচারের মতো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যার বেসাতি শুরু করেছে। কিন্তু ইন্টেরিম সরকার গা করছে না। ওরা আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করেছে। কিন্তু সেটি পুনর্বহাল করার জন্য এ সরকার ভারতকে তোষামোদ করছে না। বরং আমাদের বিমানবন্দরগুলোর মাল পরিবহণ সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা তাৎক্ষণিকভাবে শুরু হয়েছে।

 

 

২.

ফিরে আসছি মানবিক করিডর প্রসঙ্গ নিয়ে। এ ব্যাপারে সরকারের তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কথা বলেছেন। প্রথমে গত ২৮ এপ্রিল সোমবার কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, নীতিগতভাবে আমরা রাখাইন রাজ্যে করিডরের ব্যাপারে সম্মত হয়েছি। কারণ এটি একটি মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে। সে ব্যাপারে বিস্তারিত আপাতত বলছি না। সেই শর্ত যদি পালন করা হয়, তাহলে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আমরা সহযোগিতা করব।

 

 

এরপর এ ব্যাপারে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গত মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল তিনি বলেন, যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ যৌক্তিক পরিকাঠামোগত সহায়তা দিতে প্রস্তুত থাকবে। তবে রাখাইনে সহায়তা পাঠানো নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

 

 

 

তবে এ ব্যাপারে তথ্যাভিজ্ঞ মহল প্রত্যাশা করছিলেন সেই ব্যক্তির মন্তব্য যিনি বিগত ফেব্রুয়ারি মাসে মন্ত্রী মর্যাদায় রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ নিযুক্ত হয়েছেন। কয়েক দিন আগে তাকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা বিষয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে পরামর্শ দেবেন। তিনি হলেন, ড. খলিলুর রহমান। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বাংলাদেশে বিগত ৫৪ বছরে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলে কোনো পদ ছিল না। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নিক্সন ড. হেনরি কিসিঞ্জারকে যুগপৎ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কয়েকদিন পর যখন ড. কিসিঞ্জার বলেন যে, দুটি দায়িত্ব যুগপৎ সামাল দিতে গিয়ে তিনি কোনোটার প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না, তখন প্রেসিডেন্ট নিক্সন তাকে শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। ভারতে আজ ১০ বছর হলো অজিত দোভাল নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্বে নিযুক্ত। তাকে ভারতের বেশ কয়েকটি পত্রিকায় বলা হয়, ‘ইন্ডিয়া কি জেমস বন্ড’। অর্থাৎ ভারতের জেমস বন্ড। আমি বলি, ড. খলিলুর রহমান বাংলাদেশের অজিত দোভাল। সেই খলিলুর রহমান যা বলেছেন, সেটি গত ৩০ এপ্রিল বুধবার ইংরেজি ডেইলি স্টারের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে। শিরোনাম ‘Govt willing if support to Rakhine is UN backed/ Says Khalilur’।

 

 

 

আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘ সমর্থিত মানবিক সাহায্য রাখাইনকে স্থিতিশীল করবে এবং রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তিনি আরও বলেন, করিডরের ব্যাপারটি আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে রয়েছে একাধিক অংশীজন। বিষয়টি চূড়ান্ত করার আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। যেহেতু বিষয়টি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি, তাই আমরা এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত রইলাম। তবে এ ব্যাপারে যারা মন্তব্য করেছেন, তাদের মধ্যে মেজর জেনারেল (অব.) মনিরুজ্জামানের মন্তব্য যৌক্তিক বলে মনে হয়েছে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার মতে এ কাজটি শর্তসাপেক্ষ। তাই এ মুহূর্তে কোনো কথা বলা যায় না।

 

 

তবে আমরা মনে করি যে, মানবিক করিডর ইস্যুতে রয়েছে তিনটি পক্ষ। এ তিনটি পক্ষ হলো বার্মার সামরিক জান্তা, যারা বর্তমানে বর্মি সরকার। দ্বিতীয়ত আরাকান আর্মি। যদিও তারা এখনো সমগ্র আরাকান দখল করতে পারেনি এবং তারা স্বাধীনতাও ঘোষণা করেনি বা কারও স্বীকৃতিও চায়নি, তবুও তারা রাখাইন বা আরাকানের ৮০ শতাংশ ভূখণ্ড অধিকার করেছে। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত না হলেও তারাও একটি পক্ষ। আর তৃতীয় পক্ষ হলো বাংলাদেশ। জাতিসংঘ যদি কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়, তাহলে এই ৩ পক্ষের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হতে হবে। বর্মি সরকার এবং আরাকান আর্মি রাজি হলে বাংলাদেশ চূড়ান্ত প্রস্তাব গ্রহণের আগে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবে।

 

 

৩.

বাংলাদেশ কী করবে, সেটি আলোচনাসাপেক্ষ। কিন্তু বিষয়টি শুধু আঞ্চলিকভাবেই নয়, এটি আন্তর্জাতিকভাবেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাখাইন পরিস্থিতি আসলে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এটি তাদের গৃহযুদ্ধ হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, পৃথিবীর তিনটি বড় শক্তি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এ ইস্যুতে জড়িয়ে পড়েছে। তিনটি শক্তি হলো চীন, ভারত ও আমেরিকা। বাংলাদেশ প্রত্যক্ষভাবে কোনো পক্ষে নেই। কিন্তু রাখাইনের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে ২৭১ কিলোমিটার বা ১৬৮.৪ মাইল অভিন্ন সীমান্ত। এর ফলে সেখানে যে যুদ্ধ চলছে, তার প্রভাব থেকে বাংলাদেশ মুক্ত নয়। এর আগে সেখানে যে গোলাগুলি হয়েছিল, তার দুটি গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ে এবং দুই ব্যক্তি মারা যান।

 

 

বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের যেমন ভূকৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে, তেমনি রয়েছে রাখাইনের। রাখাইনের সীমান্তে রয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক এরিয়া। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে এ এলাকায় চীনের প্রভাব দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। চীনের প্রভাব ঠেকানোর দৃষ্টিকোণ থেকে রাখাইন আমেরিকার কাছে ভূকৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

রাখাইন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ চীন ও ভারতের কাছে। চিকেন নেক বা শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে ভারতের সব সময় রয়েছে চীনভীতি। যদি কোনো সময় চুম্বিভ্যালি থেকে নেমে এসে চীন চিকেন নেক দখল করে নেয়, তাহলে ভারতের পশ্চিমাঞ্চল সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকবে পূর্বাঞ্চল থেকে। এজন্য চিকেন নেকের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য ভারত বেছে নিয়েছে দুটি দেশকে। একটি হলো বাংলাদেশ, অপরটি হলো বার্মার রাখাইন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ভারতকে বহুমুখী করিডর দিয়েছেন। স্থল, নৌ ও রেলপথে একাধিক করিডর দিয়েছেন। এসব করিডর দেওয়ার যে চুক্তি হয়েছে, সেসব চুক্তির কোনো বর্ণনা জনগণ তো দূরের কথা, শেখ হাসিনার রাবার স্ট্যাম্প জাতীয় সংসদেও পেশ করা হয়নি। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমনে শেখ হাসিনার সরকার কত প্রত্যক্ষভাবে ভারতকে সাহায্য করেছে, তারও বিস্তারিত আমরা জানি না। রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া নিয়ে আজ কোনো কোনো মহল যখন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন তোলেন, তখন পালটা প্রশ্ন ওঠে। ভারতকে বহুমুখী করিডর দেওয়ার বিনিময়ে আমরা কী পেলাম? শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেছেন, ভারতকে যা দিয়েছি, সেটি ভারত চিরদিন মনে রাখবে।

 

 

আজ যখন রাখাইনকে মানবিক করিডর দেওয়ার আগেই নিরাপত্তার প্রশ্ন ওঠে, তখন জনগণ দাবি করতে পারেন, ভারতের সঙ্গে বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যত গোপন ও দেশবিরোধী চুক্তি হয়েছে, তা হয় প্রকাশ করতে হবে, নয় তো সব চুক্তি বাতিল করতে হবে। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করেছে। শেখ হাসিনার আমলে গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে, সেই চুক্তি পানিপ্রাপ্তির প্রকৃত হিস্যা থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ২০২৬ সালে ওই চুক্তি রিনিউ করার কথা। যদি চুক্তি রিনিউ করতে হয়, তাহলে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ভারতের সঙ্গে যে পানি চুক্তি করেছিলেন এবং ওই চুক্তিতে যতখানি পানি বাংলাদেশ পেয়েছিল, ততখানি পানি নতুন চুক্তিতে থাকতে হবে।

 

 

৪.

বলছিলাম রাখাইনের ভূকৌশলগত গুরুত্বের কথা। আগেই বলেছি, চিকেন নেকের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে করিডর চুক্তি ছাড়াও ভারত মিয়ানমারের সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করেছে। এটার নাম কালাদান মাল্টি মোডাল প্রকল্প, যা ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা সমুদ্রবন্দরকে সংযুক্ত করবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তে সমুদ্রবন্দরকে। মিয়ানমারের মধ্যে কালাদান নদী দ্বারা চীন রাজ্যের (গণচীন নয়, মিয়ানমারের একটি প্রদেশ) পালেটওয়া শহর যুক্ত হবে সিত্তে বন্দরের সঙ্গে এবং তারপর উত্তর-পূর্ব ভারতে মিজোরামের রাজ্যের সঙ্গে সড়কপথে পালিতওয়া যুক্ত হবে।

 

 

প্রায় হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই আরাকান আর্মি যে ৮০ শতাংশ রাখাইনের ভূখণ্ড দখল করেছে, তার ফলে ভারত এ প্রকল্প আর শেষ করতে পারেনি। ওইদিকে ভারত মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছে। তার ফলে ভারতের সঙ্গে আরাকান আর্মির সম্পর্ক ভালো নয়।

 

 

অন্যদিকে চীন আমেরিকাকে মোকাবিলা করতে চায় বঙ্গোপসাগর এবং সেই সুবাদে ভারত মহাসাগরে। এজন্য তার প্রয়োজন বাংলাদেশ এবং রাখাইনকে। বাংলাদেশ এবং রাখাইনের মধ্য দিয়ে চীন বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতে চায়। প্রবেশ করতে পারলে মার্কিন প্রভাব বলয় সংকুচিত করা তার জন্য অপেক্ষাকৃত সহজ হবে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, রাখাইন এখন আমেরিকা, চীন, ভারত এবং বাংলাদেশের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর কিছুদিনের মধ্যেই সিত্তেসহ অবশিষ্ট তিনটি শহর দখল করার জন্য আরাকান আর্মি সামরিক অভিযান পরিচালনা করবে। সে মুহূর্তটি এ চারটি দেশের জন্যই অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল। সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তখন বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ড. ইউনূসকে।

 

মোবায়েদুর রহমান : সিনিয়র সাংবাদিক