বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক : অতীত বর্তমান
নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ বা আফগানিস্তানের তথা ‘সার্ক’ ঐক্যজোটের মধ্যে পাকিস্তানের সাথে সদ্ভাব, সুসম্পর্ক, ভ্রাতৃত্ব ও পিপল-টু-পিপল সম্পর্কের উন্নয়নই এখন সামরিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিচার্য বিষয়। অভিন্ন ইতিহাস, ধর্মীয় বন্ধন, ক্ষুধা-বিমারের যৌথ প্রতিকার সংগ্রাম আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের আদর্শিক ভিত্তি। এই সুসম্পর্ককে আরো অনেকটা উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াই এখন সময়ের দাবি। পাকিস্তানের সাথে আমাদের সুসম্পর্কের আরেক বড় নিয়ামক হলো গণচীন। চীন আমাদের বন্ধু; পাকিস্তানেরও পরীক্ষিত বন্ধু। প্রতিরক্ষার কৌশলপটে আমাদের এই দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কে নতুন বিন্যাস বা নবজন্ম সূচনার এখনই সময় যে সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে প্রজন্ম পরম্পরায়-খন্দকার হাসনাত করিম। সূত্র : নয়া দিগন্ত, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দু’টি ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। ইতিহাসের শিকড়ে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত এই দু’টি দেশের বন্ধুত্বের সম্ভাবনা এবং উভয়ের জন্য উভয়ের পরিপূরকতার ক্ষেত্র অসংখ্য। বাংলাদেশে ভারতের বশংবদ আওয়ামী স্বৈরাচার উৎখাত ও উচ্ছেদের পর দুই দেশের জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে এসেছে। ‘শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’ এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ভারতের আজন্ম শত্রু পাকিস্তান সঙ্গতকারণেই আমাদের মিত্র হওয়ার এবং মিত্র থাকার যাবতীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন। জনগণের সম্পর্কের নিরিখে পাকিস্তানের জনগণ ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে কখনোই বিরোধ-সঙ্ঘাত ছিল না।
কারণ আমাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও সমগ্র যুদ্ধ চালিয়েছিল পাকিস্তানের গণতন্ত্র হত্যাকারী প্রতিরক্ষা বাহিনী; আমরাও স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ৯ মাসের আট মাসের মধ্যেই পাকিস্তান বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে ফেলি। ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পাক-ভারত যুদ্ধের ঘোষণার পর বিপর্যস্ত পাকবাহিনী যে ১৩ দিন যুদ্ধ করেছে, সেই যুদ্ধেও অগ্রসেনানি ছিল আমাদের বীর প্রতিরক্ষা অফিসার ও জওয়ান, ইপিআর, মুজাহিদ, আনসার ও দেশজুড়ে লাখ লাখ প্রশিক্ষিত ও সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা। দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও সহযোগিতায় এই যুদ্ধে তৎকালীন বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী পাকবাহিনীর যুদ্ধের অবস্থান আক্রমণাত্মক থেকে রক্ষণাত্মক পর্যায়ে নেমে আসে।
শেষপর্যায়ে তারা তৃতীয় কোনো দেশ বা জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় আত্মসমর্পণের জন্য তৈরি হতে থাকে। কিন্তু যুদ্ধের সেই প্রলয়ের মধ্যেও পাকিস্তানের জনগণ তাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, লোকাচার ও কৃষ্টির প্রতি এ দেশের জনগণের মধ্যে কোনো গালমন্দ, কটাক্ষ, অপপ্রচার বা হিংসা-বিদ্বেষের লক্ষণ দেখেনি, যেটি হয়েছে দেশ স্বাধীনের পর আওয়ামী-বাকশালী ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের তৈরি করা বিষাক্ত বয়ানে এবং পাকিস্তানবিরোধী, পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে বিষোদগারে। এরা ধরেছিল হিটলারের যুদ্ধমন্ত্রী গোয়েবলসের সেই নীতি, যদি তুমি একটি মিথ্যা হাজারবার বলতে থাকো তাহলে মিথ্যাটিই সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হবে।
আগেই বলেছি, বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক ও সদ্ভাব বাড়ানোর আঙ্গিনা অনেক বড় এবং সুবিধাও বিস্তর। এর মধ্যে রয়েছে ১. প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ২. দুই দেশের জনগণের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগ, ৩. বাণিজ্য, পর্যটন; ৪. শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়; ৫. ক্ষুধা অপুষ্টি ও রোগ বিমারির বিরুদ্ধে যৌথভাবে প্রকল্পভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ; ৬. বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষা; ক্রীড়া সহযোগিতা; ৭. অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা; ৮. গণতান্ত্রিক প্রথা-প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়নে যৌথ প্রয়াস; ৯. চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশ নিয়ে আঞ্চলিক জোট গঠনপূর্বক ‘সার্কে’র চেতনা পুনরুদ্ধার; ১০. ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখে দিতে বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গঠন ও মজবুত করা; ১১. দুই দেশের মধ্যে বিবদমান সব ঝুলন্ত ইস্যুর ন্যায়সঙ্গত সুরাহা করা; ১২. যুব সংহতি ও সম্প্রীতি গড়ে তোলা; ১৩. অতীতের সব ভুলভ্রান্তি ভুলে গিয়ে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং বৃহত্তর মুসলিম ঐক্যের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্প্রীতি গঠনে ব্রতী হওয়া তথা অতীতের দায় বর্তমানের ওপর চাপিয়ে দেয়ার মানসিকতা বদলে ফেলার মাধ্যমে আঞ্চলিক ইসলামী ঐক্যের নববিন্যাস সাধন করা ইত্যাদি ছাড়াও সময়ে সময়ে উদ্ভূত সুযোগ গ্রহণ ও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা।
অতীতের রক্তরঞ্জিত স্মৃতি পাশ কাটিয়ে এমন বহু নজির আছে দু’টি দেশ নতুন করে সুসম্পর্ক এবং দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় প্রীতিবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার। যে ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র ২১ বছর ধরে যুদ্ধ করেছে তারা এখন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় থিয়েটারে অন্যতম প্রধান মিত্র। জাপান ও কোরিয়া রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্মৃতি নিয়েও আজ দূরপ্রাচ্যের সুসম্পর্কের বড় দৃষ্টান্ত। ইরান-ইরাকের মধ্যে প্রায় ১০ বছর ধরে চলেছে প্রাণঘাতী যুদ্ধ। আজকের সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ইরাকের সাথে ইরান পরম বন্ধু। ইরান ও চীন জগতের ক্ষমতা ভারসাম্য বদলানোর ক্ষেত্রে বন্ধু হয়ে কাজ করছে। রেড ইন্ডিয়ানদের কাছ থেকে কার্যত টেক্সাস ছিনিয়ে নিয়েছিল আমেরিকা। আজ সেই টেক্সাস যুক্তরাষ্ট্রের গর্বিত অঙ্গরাজ্য। যেমন- লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যও। যে রাশিয়া আমেরিকার চরম বৈরী তাদের কাছ থেকে আলাস্কা কিনে নিয়েছিল আমেরিকা।
স্পেন ও আমেরিকা ছিল চরম বৈরী অথচ সেই স্পেন আজ আমেরিকার পরম মিত্র। হিটলার-মুসোলিনির অক্ষশক্তিভুক্ত দেশগুলোর প্রায় সব ক’টা দেশই এখন ‘ন্যাটো’ মৈত্রী জোটের সদস্য। কাজেই ভূরাজনীতির কৌশলপটে স্থায়ী বন্ধু যেমন কিছু নেই; স্থায়ী শত্রু বলেও কিছু নেই। রাষ্ট্রের স্বার্থে, এলাকার স্বার্থে, আদর্শ ও মতবাদের স্বার্থে বন্ধুত্ব এবং বৈরিতার পারদ ওঠানামা করেই। এটিকেই বলে Dynamics of Foreign Policy (বা বিদেশ নীতির গতি-প্রকৃতি)। জগতজুড়ে যখন এটিই প্রচলিত ধারা তখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অতীতের তিক্ততা ভুলে নতুন আঞ্চলিক মিত্র হতে বাধা কোথায়? বাধা একটি প্রবলভাবেই বিদ্যমান আর সেই বাধার প্রাচীরের নামটিই হলো আগ্রাসী ও আধিপত্যবাদী হিন্দু শাসনাধীন ভারত। আজ সময় এসেছে সেই ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে চীন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান মিলে একটি দক্ষিণ-পূর্ব সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আঞ্চলিক জোট গঠনের ডাক দেয়া।
এই আহ্বানটি আজ ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে মালদ্বীপ সৈকত থেকে নেপালের গিরিপর্বত পর্যন্ত। কেননা, দেশের জনগণকে ভুখানাঙ্গা রেখেও ভারত গত ৬২ বছর ধরে প্রবল সামরিক শক্তিধর আগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তাদের ক্রমবর্র্ধমান সামরিক শক্তি, একের পর এক দেশ দখল ও এলাকা দখলের বাসনা উদগ্র হয়ে উঠছে যাকে খুব সঙ্গতকারণেই ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং ন্যায্য অধিকারের ওপর হুমকি বলে মনে করছে। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের যে মহাপরিকল্পনা, তাকে শতাব্দীর নিকৃষ্টতম ধ্রুপদ আধিপত্যবাদ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সামনে এখন একটিই পথ খোলা : শক্তি অর্জন ও ঐক্যের মাধ্যমে আপন আপন রাষ্ট্রস্বার্থ সুরক্ষিত করা। এই আত্মরক্ষা প্রয়াসে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নতুন নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে এবং ইনশা আল্লাহ করতে পারবে।
আমাদের উভয় দেশের রাষ্ট্র চালন বাহনের স্টিয়ারিংয়ে বসা এখন দুই দেশের তরুণ-যুবসমাজ। রাজপথে তারাই : জাতিগঠন ও রাজনীতির পুনর্বিন্যাসেও তারাই রাহাগির। তাদের কাছে অতীতটা ধূলিধূসর; বর্তমান বাস্তবতার কষাঘাতটাই তাদের অনুভূমিতে প্রবল। তা যেমন বাংলাদেশে, তেমনি পাকিস্তানে। এরাই আজকের তরুণ তুর্কি (Young Turks)। এরাই আমাদের ভবিষ্যৎ এরাই স্বৈরাচার ও সামরিক ক্ষমতাবলয়ের বাইরে নতুন বাস্তবতার কাণ্ডারি।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশবাদের জিঞ্জির থেকে উপমহাদেশের মুসলমানদের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা। এমনকি ১৪ আগস্ট ১৯৪৭ স্বাধীনতা লাভের পরপরই ভারতে থেকে যাওয়া ব্রিটিশ সেনারা ফিল্ড মার্শাল অচিনলেকের নেতৃত্বে কাশ্মিরে পাকিস্তানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তখন সেই সঙ্কটকালও মোকাবেলা করেছিলেন রাজনীতিবিদরা। অথচ পাকিস্তানের সামরিক নেতারা রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করার যে ষড়যন্ত্র শুরু করে তার শিকার হন খোদ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা কায়েদে আজম মো: আলী জিন্নাহ এবং প্রধানমন্ত্রী নবাবজাদা লিয়াকত আলী খান। যে হায়দারাবাদ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম তহবিল জোগান দিয়েছিল, সেই স্বাধীন প্রিন্সলি অঙ্গরাজ্য জবরদখল করে নেয় ভারত। সেই সাথে প্রায় ৪৫০টি স্বাধীন রাজ্য, যেগুলোতে ২০০ বছরে ব্রিটিশ পতাকা ওঠেনি, সেগুলোকেও ছলেবলে-কলেকৌশলে দখল করে নেয় আগ্রাসী ভারত, যেমন স্বাধীন ফিলিস্তিন ও জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও গোলান মালভূমি ছলেবলে-কলেকৌশলে দখল করে নেয় আগ্রাসী ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল।
স্বাধীনতা, স্বাধিকার বা কনফেডারেশন যে পথেই হোক স্বাধীনতা আমরা ঠিকই পেতাম। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক নেতৃত্বের কারণেই লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ধর্ষিতা হতে হয়েছে আমাদের অসংখ্য মা-বোনকে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর এত প্রাণহানি ও ধ্বংলীলার জন্য দায়ী পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তাদের আত্মঘাতী ভূমিকা। তারা পাকিস্তানের সেই প্রদেশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে যে প্রদেশের মানুষই ভোট দিয়ে পাকিস্তান এনেছিল, ’৬৫ সালের যুদ্ধে রণাঙ্গণে প্রাণপণ লড়াই করে, ভারতীয় ট্যাংকের সামনে বুকে মাইন পেতে খেমকরণ রণাঙ্গণে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ট্যাংকের বধ্যভূমির মতো ভারতীয় ট্যাংক বহরের গোরস্তান বানিয়েছে। পাকিস্তানের সাধারণ মানুষকে তারা জানতেও দেয়নি বাংলাদেশে কী ঘটেছিল ১৯৭১ সালে। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ চালানোর দায়ে বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত বিচার ট্রাইব্যুনালের তদন্তপত্রও প্রকাশ করতে দেয়নি পাক সামরিক বাহিনী।
ষড়যন্ত্রের নাটের গুরু জুলফিকার আলী ভুট্টোকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলে তার অপকর্ম ও ক্ষমতালিপ্সার প্রায়শ্চিত্য করে যেতে হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় আধিপত্যবাদের বয়ানে বিভ্রান্ত হয়ে আমরা দেশ হিসেবে পাকিস্তানের প্রতি বৈরিতাকে (Pathdogical Hatred) আর এক দিনও অব্যাহত রাখতে রাজি নই। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের কোনো ঘাটতি থাকার সামান্যতম কারণ নেই। বরং নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, মালদ্বীপ বা আফগানিস্তানের তথা ‘সার্ক’ ঐক্যজোটের মধ্যে পাকিস্তানের সাথে সদ্ভাব, সুসম্পর্ক, ভ্রাতৃত্ব ও পিপল-টু-পিপল সম্পর্কের উন্নয়নই এখন সামরিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বিচার্য বিষয়। অভিন্ন ইতিহাস, ধর্মীয় বন্ধন, ক্ষুধা-বিমারের যৌথ প্রতিকার সংগ্রাম আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের আদর্শিক ভিত্তি। এই সুসম্পর্ককে আরো অনেকটা উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াই এখন সময়ের দাবি। পাকিস্তানের সাথে আমাদের সুসম্পর্কের আরেক বড় নিয়ামক হলো গণচীন। চীন আমাদের বন্ধু; পাকিস্তানেরও পরীক্ষিত বন্ধু। প্রতিরক্ষার কৌশলপটে আমাদের এই দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কে নতুন বিন্যাস বা নবজন্ম সূচনার এখনই সময় যে সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকবে প্রজন্ম পরম্পরায়।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক