কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বগ্রহণ করল বাংলাদেশ

সূত্র : আমাদের সময়, ০৫ এপ্রিল ২০২৫

বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্বগ্রহণ করল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। গতকাল শুক্রবার সম্মেলনের শেষে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা বিমসটেক চেয়ারম্যানশিপ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন। এই জোটের লক্ষ্য দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে আঞ্চলিক সংযোগ, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং উন্নয়ন বাড়ানো।

 

 

 

ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল শুক্রবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক নেতাদের সঙ্গে যোগ দেন। বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা (সরকারপ্রধানরা) সর্বসম্মতিক্রমে ব্যাংকক ঘোষণাপত্র এবং বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন গ্রহণ করেছেন, যা একটি কৌশলগত রোডম্যাপ। এটি সংগঠনটিকে টেকসই উন্নয়ন এবং গভীর অর্থনৈতিক একীকরণের দিকে পরিচালিত করবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বিমসটেকের জন্য বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি এবং অগ্রাধিকারগুলো তুলে ধরেন। তার সরকারের অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি আশ্বস্ত

করেন, বাংলাদেশ তার সব নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অবিচল।

 

 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস মুক্তবাজার এলাকা চুক্তি- এফটিএ-সংক্রান্ত বিমসটেক ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি বাস্তবায়নের জরুরি প্রয়োজনীয়তা এবং পরিবহন সংযোগ সম্পর্কিত বিমসটেক মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করার জন্য বিমসটেককে আরও দৃশ্যমান এবং সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের ভূমিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।

 

 

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সভাপতিত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কর্মমুখী বিমসটেকের প্রতি স্বীকৃতির বিবৃতি দেন। এ ছাড়া সকালে প্রধান উপদেষ্টা থাই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠক করেন।

 

 

বিমসটেকে যুব উৎসব আয়োজনের আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বিমসটেক সচিবালয়কে সদস্য দেশগুলোর তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য ‘বিমসটেক যুব উৎসব’ আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সম্মেলন শেষে সংস্থাটির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি মহাসচিব ইন্দ্র মণি পা-েকে এ নির্দেশনা দেন।

 

 

ভারতের সাবেক কূটনীতিক ইন্দ্র মণি সম্মেলনের শেষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংগঠনের ভবিষ্যৎ উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিমসটেকের পরবর্তী সম্মেলন যখন দুই বছর পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে, তখন একটি আলাদা যুব সমাবেশ আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘যখন বিমসটেক নেতারা এক সঙ্গে মিলিত হবেন, তখন আমাদের একটি আলাদা যুব সমাবেশ আয়োজন করা উচিত। যাতে সদস্য দেশগুলোর তরুণরা একত্রিত হতে পারে।

 

 

মণি এসব প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এই ধারণাগুলো দারুণ। আমরা পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে এ বিষয়ে কাজ করব।’ এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিমসটেক মহাসচিবের কাছে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তিসংক্রান্ত আলোচনার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও জানতে চান।

মহাসচিব জানান, তারা বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ে একটি বৈঠক আয়োজনের উদ্যোগ নিচ্ছেন, যা ২১ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ এ ধরনের বৈঠক হয়েছিল ২০০৪ সালে।

 

 

প্রধান উপদেষ্টা বিমসটেক সচিবালয়কে প্রতিবছরের জন্য পরিকল্পিত বৈঠকসমূহের একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার তৈরি করার নির্দেশ দেন। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত বিমসটেক আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বিশেষ করে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পরিবহন, জ্বালানি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।