বিশ্বের যে ১০ শহরে সবচেয়ে বেশি ধনী মানুষের বসবাস
[সূত্র : প্রথম আলো, ২৭ মে ২০২৫]

শহরের কোন এলাকায় কে থাকেন, তা দিয়েই অনেক সময় কোনো মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার একটি চিত্র মেলে। আর যদি সেটি হয় বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহরগুলোর একটিতে, তবে তাঁর সম্পদ ও প্রভাব নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকে না। বিশ্বের যেসব শহরে অতিধনীরা থাকেন বা ধনীদের বসবাসের জন্য জনপ্রিয় যেসব শহর, সেগুলোর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র থাকে। বিশ্বজুড়ে যেসব শহর ধনীদের কাছে বসবাসের জন্য পছন্দের শীর্ষে, সেগুলো শুধু আর্থিক দিক থেকেই নয়, বরং জীবনমান, অবকাঠামো ও বৈশ্বিক সংযোগের দিক থেকেও উল্লেখ করার মতো। ২০২৫ সালের হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স ও নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথের এক যৌথ প্রতিবেদনে বিশ্বের এমন ১০টি শহরের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে ধনীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
নিউইয়র্ক সিটি
বসবাসের জন্য ধনীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি। এখানে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ মিলিয়নিয়ার, ৮১৮ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ৬৬ জন বিলিয়নিয়ার থাকেন। সেন্টিমিলিয়নিয়ার বলতে বোঝায়, যাঁদের সম্পদের পরিমাণ কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি ডলার। অর্থনীতির পাশাপাশি সংবাদমাধ্যম, ফ্যাশন ও প্রযুক্তির কেন্দ্র হিসেবেও খ্যাত শহরটি। উন্নত গণপরিবহন, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ শহরকে ধনীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো ও আশপাশের বে এরিয়া প্রযুক্তিশিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানে ৩ লাখ ৪২ হাজার ৪০০ মিলিয়নিয়ার, ৭৫৬ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ৮২ বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। সিলিকন ভ্যালি, উদ্ভাবনী পরিবেশ ও উচ্চ জীবনমান ধনীদের সেখানে বসবাসের জন্য আগ্রহী করে তোলে।
টোকিও
জাপানের টোকিও এশিয়ার অন্যতম ধনী শহর। শহরটিতে ২ লাখ ৯২ হাজার ৩০০ মিলিয়নিয়ার, ২৬২ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ১৮ বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। শহরটি উন্নত প্রযুক্তি, নিরাপদ পরিবেশ ও উচ্চমানের জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত। উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য টোকিওকে বসবাসের জন্য ধনীদের পছন্দের শীর্ষে রেখেছে।
সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুরে ২ লাখ ৪২ হাজার ৪০০ মিলিয়নিয়ার, ৩৩৩ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ৩০ বিলিয়নিয়ার রয়েছেন। শহরটি করসুবিধা, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ ও উন্নত অবকাঠামোর জন্য পরিচিত। এশিয়ার অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র হওয়ায় ধনীদের কাছে থাকার জন্য সিঙ্গাপুর আকর্ষণীয়।
লস অ্যাঞ্জেলেস
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ২ লাখ ২০ হাজার ৬০০ মিলিয়নিয়ার ও ৪৫ বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। শহরটি বিনোদন, প্রযুক্তি ও রিয়েল এস্টেট খাতের জন্য বিখ্যাত। উন্নত জীবনযাত্রা, সমুদ্রসৈকত ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির কারণে ধনীরা শহরটিকে বসবাসের জন্য বেছে নেন।
লন্ডন
লন্ডনে ২ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ মিলিয়নিয়ার, ৫১৬ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ৩৩ বিলিয়নিয়ার রয়েছেন। পুরোনো এ শহর আর্থিক, শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। উন্নত গণপরিবহন, ঐতিহাসিক স্থাপনা ও বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা লন্ডনকে ধনীদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
প্যারিস

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ১ লাখ ৬০ হাজার ১০০ মিলিয়নিয়ার, ২৭৭ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ২২ বিলিয়নিয়ার রয়েছেন। শহরটি ফ্যাশন, শিল্প, রন্ধনশিল্প ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত। পশ্চিম ইউরোপের প্রথম দিকের এ আধুনিক শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনা, উন্নত অবকাঠামো ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করে।
হংকং
চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০০ মিলিয়নিয়ার, ৩৪৬ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ৪০ বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। শহরটি এশিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। করসুবিধা, উন্নত অবকাঠামো ও বৈশ্বিক সংযোগ হংকংকে ধনীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
সিডনি

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ১ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ মিলিয়নিয়ার, ২২৪ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ২২ বিলিয়নিয়ার বসবাস করেন। শহরটি উন্নত জীবনযাত্রা, সমুদ্রসৈকত ও স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য পরিচিত। উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা ও নিরাপদ পরিবেশ সিডনিকে ধনীদের কাছে বসবাসের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
শিকাগো
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ১ লাখ ২৭ হাজার ১০০ মিলিয়নিয়ার, ২৯৫ সেন্টিমিলিয়নিয়ার ও ২৫ বিলিয়নিয়ার রয়েছেন। শহরটি আর্থিক, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রযুক্তি খাতের জন্য সুপরিচিত। উন্নত অবকাঠামো, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ শিকাগোকে ধনীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
সূত্র: হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স, নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথ