কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

বৈদেশিক সহায়তা বন্ধে কি অর্থনীতিতে ধাক্কা?

জাকির হোসেন । সূত্র : দেশ রূপান্তর, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বৈদেশিক সহায়তা বন্ধে কি অর্থনীতিতে ধাক্কা?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এসব আদেশ শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এতে নানা ইস্যুতে চাপ বেড়েছে বিভিন্ন দেশে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী সব অংশীজনকে তাদের অধীন চলমান সব প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ অথবা স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে। যা ইউএসএইডের সুবিধাভোগী দেশগুলোর জন্য বড় দুঃসংবাদ। বাংলাদেশের জন্য তো বটেই। সংস্থাটি অবশ্য বলেছে রোহিঙ্গাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

 

 

এদিকে বাংলাদেশসহ তিন দেশে উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড সরকার। অন্য দুটি  দেশ হলো আলবেনিয়া ও জাম্বিয়া। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম সুইস ইনফোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈদেশিক সহায়তার জন্য সুইস সরকার যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছিল, তার চেয়ে কম অর্থ বরাদ্দ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিন দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইজারল্যান্ডের সরকার। এর ফলে সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) ২০২৮ সালের পর বাংলাদেশ, আলবেনিয়া ও জাম্বিয়ায় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধ করে দেবে। এসব সহায়তা বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা গুঞ্জন চলছে।

 

 

দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে চাউর উঠেছে আমেরিকা সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে আমেরিকা আর সাহায্য দেবে না। আবার বিজ্ঞমহলের কেউ কেউ বলছে, ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ হলে নানামুখী সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশ। দেশের অর্থনীতিতে বড় সংকট দেখা দেবে। আবার সুইজারল্যান্ডের বিষয়েও একই কথা চলছে। তবে যতটা বলা হচ্ছে, বিষয়টি ততটা নাও হতে পারে। একটু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ প্রয়োজন আছে। অপেক্ষা করার বিষয় আছে, আদৌ ইউএসএইড আমাদের দেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় কি না। এ ছাড়া এও আমাদের খুঁজতে হবে, ইউএসএইড আমাদের দেশে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করে তা আমাদের অর্থনীতির কোন কোন ক্ষেত্রে সংকট তৈরি করবে, বা আমরা কী পরিমাণ সুবিধা ভোগ করি এই সংস্থার কার থেকে।

 

 


তিন বছর ধরে দেশে অর্থনৈতিক স্থবিরতা চলছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি আমাদের বেশ ভোগাচ্ছে। কিন্তু নানা কারণে অর্থনৈতিক মন্দাকে কাটিয়ে উঠতে পারছে না বাংলাদেশ। বিশে^র বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির লাগাম শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও আমরা পারিনি। বিগত সরকার এ বিষয়ে বরাবরই উদাসীন ছিল। উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরলেও সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার জায়গায় নিতে পারেনি। দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক আধিপত্য, চাঁদাবাজি ও মুনাফাকারবারীর কারণে করোনা কালের পর দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। মুনাফাভোগীরা ছিল বিগত সরকারেরই দোসর। এতে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা যায়নি। উল্টো নানা রেসিপির হাস্যরসে ভেসেছি।

 

 

গত ৫ আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নানা সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দাবির বাহারে প্রতিদিন দেনদরবার করতে হচ্ছে। ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়ে খুব বেশি মনোযোগী হতে পারছে না। আর হওয়ারও তো উপায় নেই। বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীরা সব ক্রিম খেয়েছে। এখনো তো তারাই ব্যবসার লাগাম টানছে। বিগত ১৫ বছরে তাদের মুনাফার টাকা দিয়ে কয়েক বছর ব্যবসা না করেও টিকে থাকতে তাদের কোনো সংকট হবে না। এসবও মোকাবিলা করতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। এর মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সহায়তা পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা কিছুটা শঙ্কিত করেছে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।  

 

 

 

ইউএসএইড বাংলাদেশ থেকে পাঠানো চিঠিতে অংশীদারদের তাদের অধীন সব চুক্তি, কার্যাদেশ, মঞ্জুরি, সহযোগিতামূলক চুক্তি কিংবা অন্য সব প্রকল্পের সব ধরনের কাজ বন্ধ, জব্দ বা স্থগিত রাখতে বলেছে। সেই সঙ্গে অংশীদারদের তাদের জন্য বরাদ্দ খরচ কমাতে সব যুক্তিসংগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছে। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ  থেকে পরবর্তী নির্দেশ (উল্লিখিত নির্দেশনা বাতিল করার) লিখিত আকারে না পাওয়া পর্যন্ত অংশীজনদের তাদের কাজ আবার শুরু না করতে বলেছে। গত ২৪ জানুয়ারি ইসরায়েল ও মিসর বাদে সব দেশে সহায়তা তহবিল স্থগিত করে ট্রাম্প প্রশাসন।

 

 

আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বিদেশি সহায়তার বিষয়গুলো রিভিউ করা হবে। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য দেশটি ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে। কিন্তু আমেরিকা ফার্স্ট নীতিকে প্রাধান্য দেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম দিনেই প্রায় সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করার নির্বাহী আদেশ জারি করেন। সহায়তার আওতায় থাকা প্রকল্পগুলো বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা এ সময়ের মধ্যে পর্যালোচনা করে দেখা হবে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশকে প্রতি বছর দেওয়া সহায়তার পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। ২০১৮ সাল থেকে তারা এ সহায়তা দিচ্ছে। এর আগের বছরগুলোতে ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ।

 

 

 সবশেষ ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটা প্রায় ৪৯০ মিলিয়ন ডলার। ইউএসএইডের তথ্যমতে, এই অর্থ যেসব খাতে ব্যবহৃত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, পরিবেশ ও জ¦ালানি এবং মানবিক সহায়তা। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের জরুরি সহায়তার জন্যও বরাদ্দ ছিল এতে। অন্য বরাদ্দ বন্ধ হয়ে গেলেও রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের অর্থায়ন বজায় থাকবে, ইউএসএইডের উদ্ধৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। প্রশ্ন হচ্ছে, তিন মাসের জন্য অন্যান্য সহায়তা প্রকল্পগুলো থমকে যাওয়া বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে? জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংকের মতো বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমেও বিভিন্ন দেশে সহায়তা দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। এর উল্লেখযোগ্য অংশ আসে ইউএসএইডের মাধ্যমে।

 

 

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই প্রান্তিক পর্যায়ের কর্মতৎপরতা চালিয়ে আসছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো। বিদেশি অর্থায়নে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করে তারা। এসব প্রকল্পে ক্রমে বেড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন। কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা কিংবা জলবায়ু সংক্রান্ত যে প্রজেক্টগুলো আমেরিকার অর্থে চলছে, এগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায়, এই তিন মাসে তো একটা সমস্যা হবেই, যদি রিভিউর পরও কন্টিনিউ করে সেটা কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যও ব্যাপক চাপ তৈরি করবে। কারণ বাংলাদেশ সরকারকে তখন এসব খাতের জন্য অর্থবরাদ্দ দিতে হবে। সে অর্থের উৎসব খুঁজে বের করাও হবে মুশকিল। শুধু তাই না, এসব ইউএসএইডের অধীনে আমাদের বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয় আছে।

 

 

প্রকল্প বন্ধ হলে সেখানেও তো ধাক্কা লাগবে। সুইস সরকারের ফেডারেল কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন সহযোগিতা কাটছাঁটের বাস্তবায়ন করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী চার বছরের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা কর্মসূচি ধাপে ধাপে বন্ধ করা হবে এবং ২০২৮ সালের শেষে বাংলাদেশ আর সুইস উন্নয়ন সহযোগিতার (এসডিসি) অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত দেশ থাকবে না। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সুইজারল্যান্ডে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক (ডব্লিউইএফ) সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। যদিও অর্থায়ন বন্ধের মতো সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়া আরও আগে থেকে শুরু করা হয়। এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের জন্য বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।

 


সুইস সরকারের সংসদের বাজেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে। ২০২৫ সালের বাজেট থেকে ১১০ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ এবং ২০২৬-২৮ অর্থবছরের জন্য ৩২১ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার। যা ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়ন সহযোগিতার বাজেট কাটছাঁটের বাস্তবায়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো হয়। ২০২৮ সালের মধ্যে সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশসহ তিনটি দেশে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ করবে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ২০২৫ সাল থেকেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধ করা হবে, যেমন জাতিসংঘের জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো), জাতিসংঘের এইড কর্মসূচি (ইউএনএইড) ও গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর এডুকেশন (জিপিই) ।

 

 

জাতিসংঘের আরও বেশ কিছু সংস্থা, বিভিন্ন সুইস বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ব্যাংক ও অভিবাসন সংক্রান্ত আন্তঃবিভাগীয় তহবিলেও ধাপে ধাপে কাটছাঁট করা হবে। এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে সুইস ফেডারেল কাউন্সিলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। বাংলাদেশে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে উপস্থিতি বজায় রাখলেও ২০২৮ সালের পর বাংলাদেশ আর সহযোগিতার অগ্রাধিকারে থাকবে না বলা হয়েছে সে লিখিত বক্তব্যে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের যে ধারা তুলে ধরা হয়েছিল তা অনুযায়ী বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে পূর্ণ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ সুইস অর্থায়নের দিক দিয়ে একদম শীর্ষ না হলেও মোটামুটি শীর্ষ পর্যায়ের ১৫ দেশের একটি বলা যায়।

 

 

সুইজারল্যান্ডের উন্নয়ন সহযোগিতার তালিকায় ২০২৩ সালে এশিয়ায় সর্বোচ্চ অর্থায়নে দখলকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চল, সিরিয়া, মিয়ানমার ও আফগানিস্তানের পরে ছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশে ওই বছর ৩৪১ লাখ সুইস ফ্রাঁ বরাদ্দ ছিল। এশিয়ার বাইরে ধরলে এর চেয়ে বেশি অঙ্কে ইউরোপে ইউক্রেন, মলদোভা ও আফ্রিকায় মালি, বুরকিনা ফাঁসো, সোমালিয়া ও চাঁদ ছিল। অর্থাৎ ২০২৩ সালের হিসাব দেখলে সুইস অর্থায়নের অন্তত ১১২টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ছিল ১১তম। এ তথ্য সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র দপ্তরের ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাটিস্টিকস ইউনিটের। বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ড সম্পর্ক নিয়ে সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাণিজ্য ছাড়াও বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মসূচি পরিচালনা করে দেশটি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক উন্নয়ন, রোহিঙ্গা সংকট, দুর্যোগ ও জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা শক্তিশালী করার মতো অনেক ক্ষেত্রেই কাজ করছে সুইজারল্যান্ড। 

 

 


বাংলাদেশে অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা সামনের দিনগুলোতে বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি করার শঙ্কা সৃষ্টি করছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের পরপরই অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে উন্নয়ন সংস্থাগুলো প্রকল্প বন্ধ বা স্থগিত করেছে। অনেক ক্ষেত্রে পরিসর সীমিত করে আনা হয়েছে। সুইস সিদ্ধান্তেও ধীরে ধীরে এমন প্রভাব আরও আসার আশঙ্কা রয়েছে। দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে বহুমুখী সংকট সামনে আনছেন ব্যবসায়ীরা। দেশের অর্থনীতির জন্য এগুলোকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সবাই।

 

 

দেশের দীর্ঘদিন ধরে চলমান মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু শিল্প কারখানা বন্ধ হয়েছে, আবার সম্ভাবনাময় অনেক শিল্পকারখানাও অর্থাভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এ ছাড়া অর্থায়ন সংকট, ঋণ সহায়তা, ঋণ ও কর হার বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ জানাচ্ছেন নিয়মিত। সার্বিকভাবে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়েও দুশ্চিন্তা ফুটে উঠছে ব্যবসায়ীদের মাঝে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে না পারলে ডাউন ওয়ার্ড অর্থনীতি টেনে তোলা সম্ভব না। আমাদের বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদরা নিশ্চয়ই একমত হবেন।

 


লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক সংবাদ বিশ্লেষক