চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব
সোলায়মান আহসান । সূত্র : নয়া দিগন্ত, ১৮ মার্চ ২০২৫

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কম কথার মানুষ। ধীরস্থির, মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং হুমকি-ধমকির স্বরে কথা না বলা লোক। এক যুগের বেশি চীনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে চীনা জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তার সময়কালে যেভাবে চোখে পড়ার মতো চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেছে, তেমনি সামরিক শক্তি হিসাবে আমেরিকাসহ অন্যান্য পরাশক্তির নজর কেড়েছে। সেই চীনা প্রেসিডেন্ট শি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সতর্ক’ করে বলেছেন, ‘যেকোনো ধরনের’ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বেইজিং।
উল্লেখ্য, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকাবস্থায় ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। নির্বাচিত হওয়ার পর বলেন ২৫ শতাংশের কথা। শপথগ্রহণ করার পর ওভালে বসার পরই ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দেন। এরপর সাম্প্রতিককালে ১০ থেকে ২০ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে বেইজিং থেকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এমন কঠিন বক্তব্য দিলেন। সেই সঙ্গে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং ঘোষণা করেন, চীন চলতি বছরও তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় ৭ দশমিক ২ শতাংশ বাড়াবে। বলা বাহুল্য, চীনের প্রেসিডেন্ট শির যুদ্ধ করার ইচ্ছা ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা ব্যয়-সংক্রান্ত ঘোষণার সঙ্গে অবশ্যই একটি কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।
বিগত ১০ বছরে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান হারে চীনের অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মেনে নিতে পারছে না। নব্বই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে বিশ্বের কর্তৃত্ব লাভের মজা উপভোগ করছিল। এমন সময় চীনের উপদ্রব দেখা দেয় ২০১৬ থেকে (যুক্তরাষ্ট্রের কাছে)। দক্ষিণ-চীন সাগরের কর্তৃত্ব নিয়ে। ফিলিপাইনের পানিসীমায় একটি দ্বীপ (স্পার্টলি) চীনারা দখলে নেয়াকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিরোধ বাধে। ফিলিপাইন হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘আজ্ঞাবাহী’ বন্ধু দেশ।
আন্তর্জাতিক আদালতের রায় অস্বীকার করে চীনারা যখন ফিলিপাইনের দ্বীপটির কর্তৃত্ব ছাড়তে অস্বীকৃতি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র বন্ধু দেশের সমর্থনে বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়ে ধমক দেয়। কিন্তু চীনারা মার্কিনি ধমক অস্বীকার করে দক্ষিণ-চীন সাগরের ওপর কর্তৃত্ব মজবুত করে। একটি নয়, আরো তিনটি কৃত্রিম দ্বীপ সৃষ্টি করে চীন। এমনকি এসব দ্বীপে চীন সামরিক স্থাপনা তৈরি করে। সেখান থেকেই শুরু চীন-মার্কিন বিরোধ। এরপর থেকেই মার্কিনিদের সাথে কোথাও পরোক্ষভাবে, কোথাও প্রত্যক্ষভাবে চীনের টক্কর লেগেই আছে। মার্কিনিরা প্রকাশ্যভাবেই এখন স্বীকার করে চীন তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী।
বিগত সময়ে (২০১৬) প্রথমবার ট্রাম্প যখন ওভালের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখনো চীনের সাথে তাইওয়ান নিয়ে বাকযুদ্ধ বেধেছিল। চীনের সোজাসাপ্টা কথা- ‘একচীন নীতি’ মেনে না নেয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নয়। সে সময় ঘটল আরেক ঘটনা। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর, চীন আপত্তি তোলে। চীন এটিকে এতটাই গুরুত্বের সাথে নেয় ‘চীনা ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হস্তক্ষেপ’ বলে মনে করে। উভয় দেশের মধ্যে টেনশন ছড়িয়ে পড়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ওয়াশিংটনকে দক্ষিণ চীন সাগরের দিকে নিয়ে আসা হয়। চীন ঘোষণা দেয়, নির্দিষ্ট পানিসীমায় মার্কিনি অনুপ্রবেশ ঘটলেই আক্রমণ। অপর দিকে চীন তাইওয়ানের কাছাকাছি ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করে। চীনের ফাইটার বিমান জে-১১ উড়ে যায় তাইওয়ানের ওপর দিয়ে। চীনা সরকারি বার্তা সংস্থা গ্লোবাল টাইমস জানায়, চীনের সিনিয়র সামরিক কমান্ডারদের সাথে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৈঠক করে সিদ্ধান্ত দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সামরিক যোগাযোগের চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেয়ার।
উল্লেখ্য, একটি দেশ অন্য দেশের সাথে যেভাবে কূটনৈতিক মিশন খোলার মাধ্যমে দু’দেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চালু রাখে, তেমনি সামরিক বাহিনীও দু’দেশের সাথে তথ্য আদান-প্রদান ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে সম্পর্ক বজায় রাখে। আর এ সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া মানে দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার পূর্বাভাস। ঠিক এতটাই শীতল হয়েছিল চীন-মার্কিন সম্পর্ক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন অনেকটা মিরাকল। প্রথমবার (২০১৬-২০) ট্রাম্প এতটাই বিতর্কিত হয়ে হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে পরপর দু-টার্ম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার যে একটি কনভেনশন চলে আসছিল তা ব্রেক করল। ট্রাম্প ইমপিচমেন্টের মুখে পড়তে যাচ্ছিলেন। কোনো সফলতা ছিল না ওই মেয়াদে ট্রাম্পের। সৌদি আরবের সাথে ১২০ বিলিয়ন ডলার আর কাতারের সাথে ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি চুক্তি ছাড়া। এ ছাড়া দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় জর্জরিত ছিলেন- রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়েও ছিল বিতর্ক ট্রাম্পকে ঘিরে।
ট্রাম্প ভাগ্যবান পুরুষ। ২০১৬ তে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ছিলেন একজন মহিলা (হিলারি ক্লিনটন) তেমনি ২০২৪ এ স্বাস্থ্যগত কারণে জো বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে পেয়ে যান ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭ জন প্রেসিডেন্টের এ পর্যন্ত কোনো মহিলার নাম আসেনি। তাই, হিলারি ক্লিনটনের মতো যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থীও (যিনি ৩৩ লাখ বেশি পপুলার ভোট পান) ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হন। আর দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন ঘটে একেবারে রাজসিকভাবে।
ট্রাম্প গদিতে বসার আগেই বললেন, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি করতে হবে। হলো। বললেন, ক্ষমতা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করবেন। এখনো পারেননি। চলমান আছে প্রক্রিয়া। এখানে জড়িয়ে পড়েছেন নানা জটিলতায় ট্রাম্প। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে ধমক-ধামক দিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করিয়ে নেবেন, খনিজসম্পদের ৫০ শতাংশ ভাগ নিয়ে নেবেন- তা এখনো করে উঠতে পারেননি। জেলেনস্কির পাশে ইউরোপের দেশগুলো দাঁড়িয়েছে। তারা জেলেনস্কিকে আশ্বস্ত করছেন। অতীতেও পাশে ছিলেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন। ইউরোপীয় দেশসমূহের ভয়, যদি পুতিন ইউক্রেনে আক্রমণ করে কৃতকার্য হয় তবে ইউরোপের অন্যান্য দেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। রাশিয়ার মোকাবেলায় ইউক্রেনকে যেভাবে সামরিক ও অন্যান্য ইন্ধন দেয়া দরকার ছিল তারা এ পর্যন্ত তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এককভাবে যে সাহায্য দিয়ে এসেছে যুদ্ধ চালাতে এতদিন জেলেনস্কি শক্তি পেয়েছে। ট্রাম্প এসে আগের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনেক নীতির কঠোর সমালোচনা করছেন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইউটার্ন নিয়ে নীতির পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন। সেভাবেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী ট্রাম্প উইন উইন সিচুয়েশনে রেখে ইউক্রেনকে নতি স্বীকার করিয়ে যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু রাশিয়াকে উইন করানো নয়, নিজের লাভ তুলে নিতে ইউক্রেনের খনিজসম্পদে ভাগ বসাতে চুক্তি সম্পাদনে এগিয়ে গেছেন। অনেকটা চাপের মুখে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে খনিজসম্পদ উত্তোলনের চুক্তি সম্পাদনে সম্মত হয়েছেন।
এদিকে, ৩২ দেশের সামরিক জোট ন্যাটো এখন অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়েছে বলে দৃশ্যমান। ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিধর দেশ তুরস্ক এক যুগ আগেই জোটহীনতা ঘোষণা দিয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক ক্যুর সাথে যুক্ত ছিল। এ ছাড়া তুরস্কের অনেক নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান গ্রহণ করে থাকে। এসব কারণে আঙ্কারা ন্যাটোর সাথে সম্পর্ক আলগা করে আসছে।
এদিকে ইউক্রেন প্রশ্নে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো নড়েচড়ে বসলে ট্রাম্পও খানিকটা বিপদ মনে করে গলার স্বর নিচে নামিয়ে বলেন, ন্যাটোর মিত্রদেশগুলো যদি প্রতিরক্ষায় পর্যাপ্ত খরচ না করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সুরক্ষা দিতে পারবে না।
উল্লেখ্য, ইউক্রেন ন্যাটো জোটের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করলে রাশিয়া বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়। অথচ নব্বই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ১৪ দেশের সৃষ্টি হলে এদের অধিকাংশ ন্যাটোর সদস্যভুক্ত হয়। সেভাবে ইউক্রেন ন্যাটোভুক্ত হতে চেয়েছিল। প্রকৃত কারণ অন্য জায়গায়, রাশিয়ার কর্তৃত্ব ভ্লাদিমির পুতিনের (এককালের কেজিবি অফিসার) হাতে আসার পর, নীতির পরিবর্তন ঘটে। চীনের যৌথ সহায়তায় রাশিয়া সামরিক শক্তি যেভাবে বাড়াতে সক্ষম হয় তেমনি অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা মাজা সোজা করে দাঁড়াতে পারে রাশিয়া যা নব্বই দশকে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল।
পুতিন নানা কারণে আলোচিত হন। সিরিয়ার পতিত স্বৈরাচার বাশারকে টিকিয়ে রাখা, ইউক্রেনের উপদ্বীপ ক্রিমিয়া দখল, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আল কায়েদা, আইএস খেলা বন্ধ করে দেয়া, এমনকি ২০১৬ তে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের নির্বাচনে সাইবার ঘটকালি করা সর্বশেষে ইউক্রেনে আক্রমণ ও যুদ্ধে জড়ানো পুতিনের এক যুগের বেশি শাসনামলকে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে। এছাড়া ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে পুতিন এমন কিছু দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটান যার প্রেক্ষিতে গোটা বিশ্বের মার্কিন স্বার্থ প্রশ্নের মধ্যে পড়ে। ইউক্রেনের যুদ্ধে চীন যেভাবে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশগুলো সুবিধা করতে পারেনি। চীন ইতোমধ্যে ইরানের সাথে ২৫ বছরের সামরিক চুক্তি সম্পাদন করেছে। ইরানও রাশিয়ার পাশে ড্রোন সহায়তা নিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। তেমনি রাশিয়ার সাথে ইরানেরও সামরিক সহায়তার চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক এখন সম্প্রসারিত হয়েছে। দক্ষিণ-এশিয়া প্রশ্নে শুধু নয়, মধ্যপ্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অনেক ইস্যুতে সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক, মিসর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া চীনের মধ্যস্থতায় একমত পোষণ করে।
এসব আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি, সামরিক সক্ষমতা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক চীনের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে ধরা পড়ছে, যা যুক্তরাষ্ট্র মেনে নিতে পারছে না। বিগত শাসনামলে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার সাথে সম্পর্ক এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে নিয়ে গিয়েছিলেন, ধারণা করা হয়েছিল যুদ্ধ বেধে যাবে। কিন্তু চীন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক এমন অটল ছিল- ট্রাম্প পিছপা হতে বাধ্য হন।
চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে বহু বছর ধরেই। কিন্তু চীনকে কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না। স্বল্পমূল্যে উন্নতমানের পণ্য সরবরাহ করে চীন ইতোমধ্যে ইউরোপসহ মার্কিন বাজারে আধিপত্য প্রমাণ করেছে। আমেরিকার তৈরি আইফোন এখন চীনের দখলে। কারণ চীনের তৈরি আইফোনের মূল্য যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষা অর্ধেক। এভাবেই চীন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে বিশ্ববাণিজ্য বাজারে। এটিকেও যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পরাজয় হিসাবে দেখছে। পেরে না উঠলে মার্কিন নীতি হচ্ছে শক্তি প্রয়োগ করা। সেই শক্তি কি প্রয়োগ করতে যাচ্ছে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র। সে আশঙ্কাই ব্যক্ত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প-তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ খুব বেশি দূরে নয়। অবশ্য তিনি আরো বলেছেন, বিশ্বযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে না।
এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ২০১৭ থেকেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে আসছেন। তিনি তার বিমানবাহিনীর পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া বিগত বছরে অক্টোবর মাসে জর্জিয়া, চেচনিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সর্বাত্মক লাইফ ফায়ার মহড়া অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে সে-ই লক্ষ্যবস্তু সামনে রেখে।
সবকিছু দেখে শুনে আন্তর্জাতিক ঘটনার বিশ্লেষকরা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মন্তব্য গুরুত্বের সাথেই দেখছেন। চীনকে যদি যুক্তরাষ্ট্র ধরতে চায় সে ক্ষেত্রে ভারতকে লাগবে। কারণ এতগুলো সাগর মহাসাগর পেরিয়ে চীনের নাগাল পাওয়া সম্ভব না। সে জন্য চাই সন্নিহিত দেশের সাথে সম্পর্ক। বাংলাদেশ সে কারণেই গুরুত্ব পাচ্ছে কি?