কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

ড. ইউনূসের বিশ্বব্যাপী সুপার ডিপ্লোম্যাসি

অদিতি করিম। সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ড. ইউনূসের বিশ্বব্যাপী সুপার ডিপ্লোম্যাসি

৫ আগস্টের পর জুলাই বিপ্লবের গায়ে ‘পাকিস্তানি ট্যাগ’ লাগানোর একটা প্রকাশ্য চেষ্টা দৃশ্যমান। বিভিন্ন মহল বলার চেষ্টা করছে পাকিস্তানপন্থিরা আবার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে জোর অপপ্রচার। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে এ আলোচনায় সুশীল সমাজ বেশ আগ্রহী। বন্ধ্যত্ব কাটিয়ে দেশটির সঙ্গে নতুন করে উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ এবং পাকিস্তানপ্রীতি নিয়ে অনেকেরই তির্যক মন্তব্য শোনা যায়। বাংলাদেশ পাকিস্তানমুখী হয়ে যাচ্ছে, নতুন পাকিস্তান সৃষ্টি হচ্ছে, ইত্যাদি নানা গুজব এবং অপপ্রচারে সয়লাব ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এরকম একটি পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফরে এলেন গত বুধবার। দীর্ঘ ১৫ বছরের বিরতির পর অনুষ্ঠিত হলো সচিব পর্যায়ের বৈঠক। সামনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন।

 

 

সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ ন্যূনতম পাকিস্তানপ্রীতি দেখাল না। বরং চোখে চোখ রেখে কথা বলল। দীর্ঘদিনের দাবি পুনঃউচ্চারণ করল বাংলাদেশ। একাত্তরের গণহত্যার জন্য ক্ষমা, পাওনা টাকা ফেরত চাওয়া এবং আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফিরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গটি উত্থাপিত হলো আনুষ্ঠানিকভাবে। পাকিস্তানের সঙ্গে এটি ড. ইউনূসের এক ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের তাগিদ দিলেন। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নতুন কূটনীতির বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট হলো। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া হবে ঠিকই, কিন্তু কখনো আত্মমর্যাদা বিকিয়ে দিয়ে নয়, এ বার্তাটি আবার স্পষ্ট হলো। এটিই ড. ইউনূস সরকারের কূটনীতির বৈশিষ্ট্য। কূটনীতির পরিভাষায় একে বলা হয় ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’। বর্তমান টালমাটাল বিশ্বরাজনীতিতে ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’ বিষয়টির প্রচলন হয়েছে। একটি আশু সংকট নিরসনে কূটনৈতিক চ্যানেলের বাইরে গিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা যখন সরাসরি উদ্যোগ নেন, যখন একটি রাষ্ট্রের বরেণ্য কোনো ব্যক্তির আন্তর্জাতিক পরিচিতি, জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগানো হয় কোনো সংকট নিরসনে, তখন সেটাকে বলা হয় ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’। এটা হলো কূটনীতিতে চমক। প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে দেশের স্বার্থরক্ষায় এ ধরনের কূটনীতি এখন বেশ প্রচলিত।

 

 

গত বছর আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর কূটনীতির ক্ষেত্রে ড. ইউনূস প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চমক দেখাচ্ছেন। প্রচলিত কূটনীতির ধারার বাইরে গিয়ে নিজস্ব ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি ব্যবহার করে তিনি বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক জায়গায় শুধু নিয়ে যাননি, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’র সুফল ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। তিনি তাঁর অবস্থান থেকে বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং আবহাওয়াকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করছেন নিরন্তর। প্রচলিত ধারার দীর্ঘসূত্রতার কূটনীতির বদলে তিনি পারস্পরিক বিশ্বাস এবং সম্পর্কের আলোকে দেশের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের এই দ্বার উন্মোচন বিষয়টিই ধরা যাক না কেন, পাকিস্তানের কাছে আমরা ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পাই। এখানে আটকে পড়া পাকিস্তানিরা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন। তাদের নেওয়ার ব্যাপারে কোনোরকম অগ্রগতি নেই। একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। আমরা যদি দুই দেশের মধ্যে কথা বলা বন্ধ করে দিই, আমরা যদি তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না রাখি, তাহলে শেষ পর্যন্ত ক্ষতি হবে আমাদেরই। দেশের স্বার্থকে জায়গা দিতে হবে সবার আগে। কূটনীতিতে রাগ, মান-অভিমানের জায়গা নেই।

 

 

’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করেই আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আমরা উদাহরণ দিয়ে বলতে পারি, মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর আলাদা হয়ে গেছে। সিঙ্গাপুর এখন মালয়েশিয়ার চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ একটি দেশ। সিঙ্গাপুরের বেদনাও আছে, তাদের মালয়েশিয়া রীতিমতো ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছিল। কিন্তু সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেনি। বরং দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পারমাণবিক বোমায় জাপানকে বিধ্বস্ত করেছিল আমেরিকা। ওই ক্ষত এখনো বয়ে বেড়ায় জাপান। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন জাপানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বিশ্বে এরকম উদাহরণ অনেক। ’৭১-এর ভুলের প্রায়শ্চিত্ত পাকিস্তান ভোগ করছে। এখন আমাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কগুলো থাকতেই পারে। আন্তর্জাতিক কূটনীতি হলো একটি বাস্তবতা। কূটনীতির ধরন এমন হওয়া উচিত যাতে নিজের দেশে স্বার্থটি শেষ পর্যন্ত সংরক্ষিত হয়। ড. ইউনূস সেই ধারার সূচনা করেছেন। গত ১৫ বছরে পাকিস্তানবিদ্বেষ ছড়িয়ে পাকিস্তানকে গালাগালি করে আমরা কী পেয়েছি? আমরা কি ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত পেয়েছি? আমরা কি আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফেরত দিতে পেরেছি? আমরা কি পাকিস্তানকে ক্ষমা প্রার্থনার জন্য রাজি করাতে পেরেছি? বরং ক্ষতি হয়েছে আমাদের। অথচ ড. ইউনূসের সুপার ডিপ্লোমেসির কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে যেমন আমাদের এখন সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটছে তেমনি পাওনা টাকার ব্যাপারে আলোচনার দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে। আমরা জানি চটজলদি এই টাকা পাওয়া যাবে না। কিন্তু একটা প্রক্রিয়া শুরু হলো এবং বাংলাদেশ যে পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দাবিটি উত্থাপন করল এটি একটি বড় কূটনৈতিক বিজয়।

 

 

শুধু পাকিস্তানের কথা বললে ড. ইউনূসের সুপার ডিপ্লোমেসি পুরোটা বোঝা যাবে না। ড. ইউনূস সেই রকম একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, যিনি বিশ্বের যে কোনো সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। তাঁর পরিচিতি এবং অবস্থানের কারণে তিনি যে কোনো বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে দরকষাকষি করতে পারেন। এই যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন তখন আমরা ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’ দেখলাম। তিনি দ্রুত উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করলেন এবং সিদ্ধান্ত নিলেন যে দ্রুত চিঠি দিতে হবে। এটি অন্য কেউ হলে কি করতেন? আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা কী? এ ধরনের ঘটনার পর আমরা চুপ করে থাকি এবং অপেক্ষা করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। আমরা ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের দূতাবাসকে জিজ্ঞেস করতাম যে কী করা যায়, তারা অপেক্ষা করার পরামর্শ দিত। এভাবেই অতীতে সংকট সমাধানের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু ড. ইউনূসের সুপার ডিপ্লোমেসি তা বলে না। ড. ইউনূসের সুপার ডিপ্লোমেসির মূল তত্ত্ব হলো দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া, দেশের স্বার্থ রক্ষা করা। তিনি তাই করলেন। দ্রুত মার্কিন প্রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠালেন। বাণিজ্য উপদেষ্টা চিঠি দিলেন। তার ফল আমরা হাতেনাতে পেলাম। আমরা দেখলাম যে বাংলাদেশসহ ৭৫টি দেশের ওপর শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এটি যে ড. ইউনূসের জন্য হয়েছে এটি নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা অতীতে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক দেখেছি।

 

 

কিন্তু এই সম্পর্কের নামে আমরা দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিতেও দেখেছি। ভারতের সমর্থন এবং সহানুভূতি পেতে আমরা নিজস্ব আত্মমর্যাদা, আমাদের স্বার্থ সবকিছু জলাঞ্জলি দিয়েছি। নিজেদের ভারতের অনুগত রাষ্ট্র হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিত করিয়েছি। কিন্তু ড. ইউনূস সে পথে হাঁটেননি। তিনি একদিকে যেমন ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা বলছেন, ভারতের ‘চিকেন নেক’ বঙ্গোপসাগর ব্যবহার করে দুই দেশ কীভাবে উপকৃত হতে পারে তা তুলে ধরে বিশ্ব কূটনীতিতে একটি নতুন দর্শন সামনে এনেছেন। ঠিক তেমনিভাবে তিনি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থের বিষয়গুলো তুলে ধরছেন। এ ধরনের আত্মমর্যাদার কূটনীতি বহুদিন বাংলাদেশ দেখেনি। ভারত আমাদের নিকট প্রতিবেশী। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রাখতেই হবে। সবকিছু বদলানো যায়, প্রতিবেশী বদলানো যায় না। কিন্তু এই সম্পর্কের রূপরেখা কেমন হবে। এই সম্পর্ক কীভাবে বিকশিত হবে, আগে সে সম্বন্ধে কোনো স্পষ্ট ধারণা ছিল না। ভারত মানেই জুজু, তাদের ভয় পেতে হবে। তারা যেটা বলবে সেটাই করবে। কিন্তু ড. ইউনূস সে পথে হাঁটেননি। বরং তিনি দুটি রাষ্ট্রের সমান মর্যাদার চিন্তাকে সামনে এনেছেন। প্রচলিত কূটনৈতিক চ্যানেলের বাইরে গিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদির কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। ভারত আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু ভারত নিজেই বুঝবে যে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে বাংলাদেশের চেয়ে ভারতেরই বেশি ক্ষতি হবে। আর এ উপলব্ধির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

 

 

আমরা যদি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক দেখি, সেখানেও আমরা দেখব যে, ড. ইউনূস চীনে গিয়ে বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত উন্নয়নের বড় প্রস্তাবনাগুলো দিয়েছেন। কোন কোন খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ দরকার এবং কোন কোন ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশ চীনের সহায়তা পেতে পারে তা তিনি হাতেকলমে দেখিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বার্থ যেখানে ক্ষুণ্ন হচ্ছে সেখানে ড. ইউনূস প্রচলিত ধারার কূটনীতির বাইরে গিয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন। আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাতে দণ্ডিত বাঙালিদের কথা বলতেই পারি। তারা ৫ আগস্টের গণ অভ্যুত্থানকে সমর্থন করতে গিয়ে সেই দেশে বিক্ষোভ করেছিল। সেই দেশের আইন অনুযায়ী তাদের দণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং কারান্তরিন করা হয়েছিল। কিন্তু ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের কারণেই তাদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা দেশে ফিরে এসেছে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। কোনো বিদেশি দণ্ডিতকে এভাবে ছেড়ে দেওয়া নজিরবিহীন। এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে ড. ইউনূসের কারণে। আমরা লক্ষ্য করছি যে, গত আট মাসে অর্থনীতিতে নানা টানাপোড়েনের পরও আমাদের অর্থনীতি এখন পর্যন্ত সচল আছে। তার প্রধান কারণ হলো প্রবাসী ভাইয়েরা সবকিছু উজাড় করে দিয়ে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এটি হলো ড. ইউনূসের প্রতি প্রবাসীদের আস্থা এবং কৃতজ্ঞতা। এটি হলো সুপার ডিপ্লোমেসির একটি বড় লক্ষণ।

 

 

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল খুবই অনুল্লেখ্য। আন্তর্জাতিক কোনো ফোরামে বাংলাদেশকে সপ্রতিভ দেখা যায়নি, বরং বাংলাদেশের কূটনীতিকরা আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগদান করতে পারলেই যেন নিজেদের ধন্য মনে করতেন। সেই অবস্থান থেকেও সরে এসেছে বাংলাদেশ। সেটা সম্ভব হয়েছে ড. ইউনূসের কারণে। আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার ব্যাপারে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন খুব দ্রুত প্রতিবেদন দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের প্রতি দিচ্ছে অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহায়তা। এটি ড. ইউনূসের সুপার ডিপ্লোমেসির চমক। ড. ইউনূস শুধু একজন সরকারপ্রধান নন, তিনি একজন বিশ্বনেতাও বটে। এ কারণেই টাইম ম্যাগাজিন সেরা ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় ড. ইউনূসকে নির্বাচিত করেছে। ড. ইউনূস সম্পর্কে টাইম ম্যাগাজিনে লিখেছেন সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন। হিলারি শুধু সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নন, বিশ্বের একজন প্রভাবশালী নীতিনির্ধারকও বটে। হিলারি ক্লিনটন লিখেছেন, ‘ড. ইউনূস বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনছেন।’

 

 

ড. ইউনূস এখন বিশ্বনেতা। বিশ্বশান্তির দূত। জুলাই বিপ্লবের প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং আস্থা অর্জন সম্ভব হয়েছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বের কারণেই। বিশ্বে সব অপপ্রচার, ষড়যন্ত্র তিনি একাই রুখে দিচ্ছেন। আর সে কারণে তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্বে নতুন পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করছে। তিনি সব সময় বিশ্বকে বলছেন যে, বাংলাদেশের কাছ থেকে বিশ্বের অনেক কিছু নেওয়ার আছে, অনেক কিছু শেখার আছে। বাংলাদেশের যে একটি দুর্বল ভাবমূর্তি থেকে সরে ড. ইউনূস নতুন ব্র্যান্ডিং উপস্থাপন করছেন। যে ব্র্যান্ডিং হলো বাংলাদেশের উদ্দীপনা, তারুণ্যের শক্তি এবং সম্ভাবনা। ড. ইউনূসের ‘সুপার ডিপ্লোমেসি’তে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।