কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

এআইয়ের চমকে বদলে যাচ্ছে আবুধাবি

[সূত্র : কালের কণ্ঠ, ২৫ মে ২০২৫]

এআইয়ের চমকে বদলে যাচ্ছে আবুধাবি

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে তৈরি হবে বিশ্বের প্রথম এআই সিটি (শহর)। অত্যাধুনিক শহরটি মানুষকে ক্রমাগতভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার শেখাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় নিয়ন্ত্রিত এ শহর মানুষের অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবে। এতে দৈনন্দিন জীবনের সব ক্ষেত্রেই এআইয়ের প্রভাব বাড়বে।

 


বাড়িঘর হয়ে উঠবে স্মার্ট, গণপরিবহন হবে স্বচালিত। স্বাস্থ্যসেবায়ও বাড়বে এআইয়ের ব্যবহার। শহরটির নির্মাণ প্রকল্প শেষ হবে ২০২৭ সালে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩৩০ কোটি ডলার।

 

 

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আবুধাবি সরকার চুক্তি করেছে ইতালিয়ান ডেভেলপার কম্পানি মাই আইয়ন ইনকরপোরেশনের সঙ্গে। কম্পানিটির সিইও ড্যানিয়েল মেরিনেলি বলেন, শহরটি শুধু স্মার্ট হবে না, প্রতিনিয়ত এটি বাসিন্দাদের চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে। শুধু তথ্য সংরক্ষণ নয়, তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য নিয়েও শহরটি স্মার্ট হয়ে উঠবে।

 


এআইয়ের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সমন্বয় ঘটাবে মোবাইল এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ‘এমএআইএ’ অ্যাপ।

 

 


এর মধ্যে শহটির সব সেবা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ‘এমএআইএ’ ব্যবহারকারীদের একটি ব্যক্তিগত গ্রাফ তৈরি করবে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অভ্যাস, চাহিদা, পছন্দ ও সম্পর্ক তাৎক্ষণিকভাবে বুঝতে পারবে। কোনো রকম কমান্ড ছাড়াই ব্যবহারকারীর বিবাহবার্ষিকীতে পছন্দসই রেঁস্তোরা বুক করতে পারবে।
অর্থাৎ কমান্ড দেওয়ার আগেই পুরনো তথ্যের ভিত্তিতে প্রয়োজন বুঝতে পারবে।

 

 

এ ছাড়া শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য আলাদাভাবে বিশ্লেষণেও সক্ষম হবে। বিদ্যুতের খরচ কমাতে ব্যয় সাশ্রয়ের উপায় জানাবে। রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে যানজট বিষয়েও তথ্য দেবে। মোট কথা, শহুরে জীবনে আরো স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেবে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করা ‘এমএআইএ’ অ্যাপ। শহরের অবকাঠামোগুলোর প্রতিটি ধাপ নিয়ন্ত্রিত হবে এআই দিয়ে। স্বচালিত যানগুলো তাৎক্ষণিক চাহিদা অনুযায়ী নিজেই সময়সূচিতে পরিবর্তন আনতে পারবে। এতে যানজট কমবে, সময়ও বাঁচবে। স্বাস্থ্যগত তথ্য ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করবে ‘এমএআইএ’ অ্যাপ। ফলে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হওয়ার আগেই মিলবে জরুরি সেবা। তা ছাড়া বাসাবাড়িতে আলো ও তাপমাত্রা ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী ঠিক করে দেবে অ্যাপটি। পাইপ দিয়ে পানি চুইয়ে পড়লেও তা শনাক্ত করতে পারবে। এতে বড় ধরনের বিপত্তি এড়ানো যাবে।

 


‘আইয়ন সেন্টিয়া’ শহরটির অর্থনৈতিক প্রভাব হবে বিশাল। এআই শহর নির্মাণের ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জিডিপিতে যোগ হবে ৬৫০ বিলিয়ন ডলার। এতে এআই, রোবটিকস ও সাইবার নিরাপত্তা খাতে পাঁচ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। দক্ষ জনবল তৈরিতে এরই মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ডেভেলপারদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। নতুন প্রজন্মকে এআই বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে তুলতে এই ডেভেলপাররা প্রশিক্ষণ দেবেন। ভবিষ্যতের শহরগুলো কেমন হবে, তার প্রাথমিক উদাহরণ হবে ‘আইয়ন সেন্টিয়া’ শহর।

 

 

অগ্রগামী নীতিমালার জন্যই সর্বপ্রথম এআই শহর নির্মাণের জন্য আবুধাবিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাদের নীতিমালা এআই উদ্ভাবনের জন্য সহায়ক হবে। সাইবার নিরাপত্তা শক্তিশালী হওয়ায় স্পর্শকাতর তথ্য থাকবে সুরক্ষিত। শহরটির অত্যাধুনিক ডিজিটাল অবকাঠামোও এআই সংযুক্তির শক্ত ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রেও এই ধরনের অত্যাধুনিক শহর তৈরি করা হবে।

 

 

সূত্র : খালিজ টাইমস