গাজার গণহত্যা ও মেরুদণ্ডহীন বিশ্ব
মুহাম্মদ কামাল হোসেন । সূত্র : নয়া দিগন্ত, ০৬ এপ্রিল ২০২৫

গাজা এখন মৃত্যুপুরী। প্রতিদিন সেখানে লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে, শিশুরা অনাহারে কাঁদছে, হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শিশুর কান্না, মায়ের আর্তনাদ, ধসেপড়া ভবন আর রক্তাক্ত পথঘাট- এটিই ফিলিস্তিনের দৈনন্দিন বাস্তবতা। গাজার ছোট্ট শিশুরা আজো বুঝতে পারে না, কেন তার বাবা আর ফিরে আসে না। কয়েক দিন আগেও যে বাবার কোলে চড়ে বাজারে যেত, এখন মায়ের আঁচলেই লুকিয়ে থাকে সারাদিন। পাশের বাড়ির আমাল খেলতে ডাকলে সে আর সাড়া দেয় না, কারণ তার খেলার জায়গাটা এখন ধ্বংসস্তূপ। রাতে বোমার শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বলে, ‘মা, আজকেও কি আমরা মরে যাব?’ মা কিছু বলে না, শুধু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। সকালে দেখা যায়, এক গলিতে সারি সারি লাশ পড়ে আছে, চেনাজানা অনেকের বাড়িটি নেই। নিষ্পাপ শিশুরা বুঝতে পারে, তাদের বন্ধুরা আর বেঁচে নেই। কিন্তু এরাও জানে না, আগামীকাল হয়তো তাকেও এভাবে পড়ে থাকতে হবে। গাজার শিশুরা এখন আর স্বপ্ন দেখে না, শুধু অপেক্ষা করে মৃত্যুর জন্য!
এখানে প্রতিদিন বোমার আঘাতে প্রাণ যাচ্ছে শত শত নিরীহ মানুষের, কিন্তু তথাকথিত সভ্য বিশ্ব নিশ্চুপ। গাজায় যা ঘটছে, তা কোনো যুদ্ধ নয়, এটি সরাসরি একতরফা গণহত্যা। আন্তর্জাতিক আইনে এটি যুদ্ধাপরাধ, কিন্তু ইসরাইলকে থামানোর মতো কেউ নেই। জাতিসঙ্ঘ, মানবাধিকার সংস্থা, এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কেউই কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। যুদ্ধবিরতির আহ্বান করা হলে, তা অবজ্ঞা করা হয়।
পশ্চিমা বিশ্ব যখন ইউক্রেন ইস্যুতে সরব হয়, তখন তারা মানবাধিকারের বুলি তোলে, নিষেধাজ্ঞা দেয়, অস্ত্র সহায়তা পাঠায়। কিন্তু গাজার শিশুদের রক্ত যখন রাজপথ রঞ্জিত করে, তখন তারা ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ নিয়ে কথা বলে। এই দ্বৈতনীতি কি মানবতার প্রতি এক নির্মম উপহাস নয়? মানবাধিকার, ন্যায়বিচার আর শাস্তির বুলি আওড়ানো বিশ্বশক্তিগুলো গাজার রক্তস্নান দেখেও নির্বিকার। তাদের নীরবতা প্রমাণ করে, এ বিশ্ব আসলে মেরদণ্ডহীন ক্ষমতার সামনে নতজানু, সাম্রাজ্যবাদের কাছে আত্মসমর্পণকারী। গাজা আজ আর শুধুই একটি ভূখণ্ডের নাম নয়।
এটি হয়ে উঠেছে এক অবিরাম মৃত্যুর মিছিলের প্রতিচ্ছবি। শিশুর কান্না, বিধবার আর্তনাদ আর ধ্বংস্তূপের নিচে চাপাপড়া অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার মিলেমিশে এক নির্মম বাস্তবতার জন্ম দিয়েছে। অথচ বিশ্ব যেন বধির হয়ে গেছে, তাদের কান এই কান্না শুনতে পায় না, তাদের চোখ এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে না। যতবারই গাজায় আগ্রাসন চালানো হয়, ততবারই একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে, ‘শান্তির আহ্বান’ জানায়, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না। এই নিষ্ক্রিয়তা, এই নিষ্পৃহতা আসলে কিসের ইঙ্গিত দেয়? এটি কি আসলেই অক্ষমতা, নাকি ইচ্ছাকৃত চুপ থাকা?
গাজা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকা। প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি সেখানে বাস করে, অথচ তাদের ওপর চেপে বসেছে অবরোধের শেকল। একদিকে সমুদ্র, অন্যদিকে সীমান্ত সবদিক থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে যেন এটি একটি খোলা কারাগার। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা প্রতিটি মৌলিক চাহিদার ওপর রয়েছে কঠোর নিয়ন্ত্রণ।
এই অবরোধ বছরের পর বছর ধরে চলছে, কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিবেক কি একবারও জেগে উঠেছে? একবারও কি তারা প্রশ্ন করেছে, কেন একটি জনগোষ্ঠীকে এভাবে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে? গাজার প্রতিটি শিশুর জন্ম এক যুদ্ধক্ষেত্রে। তারা কখনো শান্তির স্বাদ পায় না, কখনো নিরাপদ শৈশব পায় না।
গাজায় ইসরাইলি হামলা নতুন কিছু নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক হামলাগুলোতে বর্বরতার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির- সব জায়গাতেই চলছে নির্বিচার বোমাবর্ষণ। শুধু সামরিক লক্ষ্যবস্তু নয়, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সরাসরি আঘাত করা হচ্ছে। এটিকে আর যুদ্ধ বলা চলে না, এটি একটি পরিকল্পিত গণহত্যা। জাতিসঙ্ঘের একাধিক বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংস্থা বলছে, ইসরাইলের এই আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি কেবল নিন্দা জানিয়েই দায়িত্ব শেষ করবে?
ইসরাইলি হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু ও নারী। গাজার আকাশে যে যুদ্ধবিমান উড়ে, তার নিচে একটি শিশুর স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়। তার স্কুল, খেলার মাঠ, তার পরিবারের সদস্য- সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। বিশ্ব কি একবারও চিন্তা করেছে, এই শিশুদের ভবিষ্যৎ কী হবে? আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই, তবে দেখতে পাবো, যখন কোনো জাতিকে পরিকল্পিতভাবে নিঃশেষ করা হয়, তখন সেই জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে এক ধরনের প্রচারযুদ্ধও চলছে। মূল ধারার অনেক পশ্চিমা গণমাধ্যম গাজার বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে চায় না। তারা ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষা’ তত্ত্ব প্রচার করে, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের যন্ত্রণার কথা এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই সত্য কি চিরকাল চাপা দেয়া যাবে? সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে এখন অনেকেই গাজার বাস্তব চিত্র দেখতে পাচ্ছে। বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলছে। কিন্তু এসব প্রতিবাদ কি কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে?
ক্ষমতাধর দেশগুলো মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের কথা বললেও বাস্তবে তারা নিজেদের স্বার্থেই নীতিগত অবস্থান নেয়। পশ্চিমা বিশ্ব মানবাধিকারের বড় বড় বুলি দেয়। কিন্তু বাস্তবে এই নীতির প্রয়োগ হয় বেছে বেছে। যখন ইউক্রেনে যুদ্ধ হয়, তখন তাদের মানবিকতা জেগে ওঠে, সেখানে অর্থ, অস্ত্র আর শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হয়। কিন্তু গাজার শিশুরা যখন বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়, তখন তাদের মানবতাবোধ ঘুমিয়ে পড়ে। ইসরাইলের আগ্রাসনকে তারা আত্মরক্ষা বলে বৈধতা দেয়, অথচ গাজার প্রতিরোধকে সন্ত্রাসবাদ আখ্যা দেয়। এই দ্বৈতনীতি কি সত্যিই সভ্যতার প্রতিচ্ছবি? নাকি এটি বিশ্ব রাজনীতির নগ্ন স্বরূপ? জাতিসঙ্ঘ, মানবাধিকার সংস্থাগুলো নিন্দা জানায়, বিবৃতি দেয়, বাস্তবে কিছুই করে না। কারণ ইসরাইলের পেছনে আছে শক্তিশালী মিত্র, আর বিশ্বসংস্থাগুলো তাদের চাপের কাছে অসহায়।
আমরা এখন গভীরভাবে বিশ্লেষণ করব, কেন বিশ্ব এতটা নীরব? এই গণহত্যা বন্ধ করতে কী করা যেতে পারে? এবং আমাদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অন্যতম সামরিক ঘাঁটি। এই কারণে তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নিতে চায় না। তাদের মিডিয়াগুলোও ইসরাইলের পক্ষে ব্যাখ্যা দাঁড় করায়, যেখানে গাজার নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু কেবল ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা’ হিসেবে দেখানো হয়, কিন্তু ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপকে ‘আত্মরক্ষা’ হিসেবে বৈধতা দেয়া হয়। এই দ্বৈতনীতি শুধু পশ্চিমা সরকারগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মধ্যেও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। জাতিসঙ্ঘ বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে। নিরাপত্তা পরিষদের যেকোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে আটকে যায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, ইসরাইলের সামরিক পদক্ষেপ যুদ্ধাপরাধের শামিল। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া এতটাই ধীর যে, বাস্তবে কোনো ফলাফল আসে না। আরব ও মুসলিম দেশগুলো ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না। কেউ আবার কেবল বিবৃতি দিয়ে দায় সারছে। অথচ এই ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধভাবে শক্ত অবস্থান নেয়া দরকার।
গাজার ঘটনা নিয়ে মূলধারার পশ্চিমা গণমাধ্যমে ইসরাইলের ক্ষতির দিকটা তুলে ধরে, গাজার হাজার হাজার নিহত মানুষ নিয়ে তাদের আগ্রহ কম। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উত্থান এই প্রোপাগান্ডাকে অনেকাংশে চ্যালেঞ্জ করছে। সাধারণ মানুষ এখন সরাসরি গাজার বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছে। বোমার আঘাতে ধসেপড়া ঘরবাড়ি, ধোঁয়ার কুণ্ডলী, আহত শিশুদের আর্তনাদ- এসব দৃশ্য এখন দুনিয়ার নানা প্রান্তে ভাইরাল হচ্ছে। সত্য চিরকাল চাপা দেয়া যায় না।
ইসরাইলি পণ্য ও প্রতিষ্ঠান বয়কট প্রতিবাদের একটি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে। বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট এবং স্যাংশন (বিডিএস) আন্দোলন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটি ঠিক সেই কৌশল যা দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী সরকারকে চাপে ফেলতে ব্যবহৃত হয়েছিল।
ইসরাইলের অর্থনীতি বহুলাংশে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল। অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান তাদের সাথে ব্যবসা করে এবং অনেক বহুজাতিক কোম্পানি ইসরাইলি পণ্য বিক্রি করে। সাধারণ মানুষ যদি এসব কোম্পানির পণ্য বয়কট করে, তাহলে এটি ইসরাইলের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের সরকার যদি ইসরাইলের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তা হলে ইসরাইলের উপর আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়বে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন জনগণের চাপ। সরকারগুলো সাধারণত তখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়, যখন তাদের জনগণ আন্দোলনে নেমে পড়ে।
পশ্চিমা দেশগুলোতে এখন প্রতিবাদ হচ্ছে। নিউইয়র্ক, লন্ডন, প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে মানুষ রাস্তায় নেমে আসছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বড় ভূমিকা রাখছে। তারা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনকে চাপে ফেলছে, যাতে তারা ইসরাইলের সাথে থাকা সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এ ছাড়া মুসলিম বিশ্বেও বৃহৎ জনসমাবেশ হচ্ছে, যদিও এসব প্রতিবাদ এখনো তেমন কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ আনতে পারেনি। প্রতিবাদ শুধু রাস্তায় নামার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। অনলাইনেও আন্দোলন হচ্ছে। হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড, গণস্বাক্ষর অভিযান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য ছড়িয়ে দেয়া এ সবই গাজার পক্ষে জনমত তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিশ্বের শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীরা যদি গাজার পক্ষ নিয়ে অবস্থান নেন, তা হলে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আগেও দেখা গেছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কোনো বড় মানবাধিকার ইস্যুতে সোচ্চার হলে তা ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া কূটনৈতিকভাবেও চাপ সৃষ্টি করা দরকার। মুসলিম ও উন্নয়নশীল দেশগুলো যদি জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তা হলে পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব।
গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে আমাদের ভূমিকা কী হওয়া উচিত? প্রথমত, আমাদের সচেতন হতে হবে এবং অন্যদেরও সচেতন করতে হবে। আমরা যদি নীরব থাকি, তা হলে এটি ইসরাইলের বর্বরতাকে আরো উৎসাহিত করবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের অর্থনৈতিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বয়কট আন্দোলনকে আরো বিস্তৃৃত করতে হবে, যাতে ইসরাইলের পক্ষে থাকা কোম্পানিগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তৃতীয়ত, আমাদের রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে। সরকারগুলোর নীতিতে পরিবর্তন আনার জন্য নাগরিকদের আন্দোলনে যুক্ত হতে হবে। গাজার মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদান, তহবিল সংগ্রহ করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো এ সবই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তা একদিন ইতিহাসের ভয়ঙ্কর অধ্যায় হয়ে থাকবে। আজ যারা নীরব, ভবিষ্যতে তাদেরও বিচার হবে। মেরুদণ্ডহীন বিশ্ব বিবেক যদি এখনো জাগ্রত না হয়, তা হলে হয়তো একদিন এই নিষ্ক্রিয়তার মূল্য পুরো মানবজাতিকে দিতে হবে। গাজায় যা ঘটছে, তা কেবল একটি অঞ্চল বা জাতির বিষয় নয়, এটি একটি মানবিক সঙ্কট। এটি মানবাধিকারের জন্য এক কঠিন পরীক্ষা। বিশ্ব কি সত্যিই একদিন জেগে উঠবে? নাকি তারা আজীবন বধির হয়েই থাকবে? আজ যারা নীরব, ভবিষ্যতে তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। আজ যারা নীরব, ভবিষ্যতে তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে। তাই সময় এসেছে দাঁড়ানোর, প্রতিবাদ করার এবং গাজার পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে জাগানোর। কারণ এই কান্না কেবল গাজার নয়, এটি পুরো মানবতার কান্না।
লেখক : কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট