কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক নয়

ড. শামীম আহমেদ । সূত্র : জনকণ্ঠ, ৭ জানুয়ারি ২০২৫

হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক নয়

দেশের মানুষের মধ্যে Human Metapneumovirus বা হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস নিয়ে এক ধরনের চাপা আতংক ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে হলো। এই ভাইরাসকে সংক্ষেপে HMPV বা বাংলায় এইচএমপিভি বলে। সম্প্রতি চীনে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ, হাসপাতালে জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না- এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

 

এই  রোগের ব্যাপক প্রচার নিয়ে আমি মূলত সংবাদ শুনেছি ও দেখেছি ভারতের মিডিয়ায়। এছাড়া বাংলাদেশ ও ইরানের বেশকিছু মিডিয়া এ বিষয়ে সংবাদ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যের প্রধান মিডিয়ায় এ বিষয়ে কোনো সংবাদ নেই বললেই চলে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আমেরিকার প্রখ্যাত সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেন্সান সিডিসির ওয়েবসাইটেও এইচএমপিভি সংক্রান্ত কোনো সতর্কতা নেই। কোনো সংবাদও নেই।

 

জাপানের দুটো প্রধান পত্রিকা-দ্য ইয়োমিউরি সিমবুনের ইংরেজি পত্রিকা দ্য জাপান নিউজ এবং দ্য আসাহি সিম্বুন পড়লাম। এইচএমপিভি প্রাদুর্ভাবের কোনো খবর দুটো পত্রিকার কোথাও দেখলাম না। বরং বিদেশী খবরের মধ্যে তাদের প্রধান উপজীব্য ছিল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বুধবারের আগেই কেবিনেট এবং দলের প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারেন। চীনের কোনো পত্রিকা খোঁজারই চেষ্টা করিনি। কারণ জানি এমন কিছু ঘটে থাকলেও তারা বিশ্বকে এভাবে জানতে দেবে না।

 

বরং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা যেসব রোগের ওপর কড়া নজর রাখছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বার্ড ফ্লু বা H5N1 Virus. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি শিশুর মধ্যে বার্ড ফ্লু (H5N1) শনাক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে কোনো শিশুর মধ্যে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাস শনাক্ত হলো। শিশুটির উপসর্গ ছিল মৃদু এবং তাকে ফ্লুর ওষুধ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী পরীক্ষায় বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়নি, তবে সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস পাওয়া গেছে।

 

শিশুটি বর্তমানে সুস্থ হওয়ার পথে। ক্যালিফোর্নিয়ার জনস্বাস্থ্য বিভাগ শিশুটির সংক্রমণের উৎস অনুসন্ধান করছে। পরিবারের অন্য সদস্যদেরও পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে কারও মধ্যে H5N1 শনাক্ত হয়নি। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে সংক্রমণের প্রমাণ মেলেনি। এই সংক্রমণ প্রাণী পর্যবেক্ষণ এবং জাতীয় নজরদারির মাধ্যমে শনাক্ত হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়াসহ অন্যান্য রাজ্যে প্রাণীর মধ্যে বার্ড ফ্লুর বিস্তার নিয়ে CDC পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।

 

CDC সাধারণ জনগণের জন্য তা ঝুঁকি কম বলেই মনে করছে। তবে, আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন প্রাণীর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছে। প্রাণী বা পরিবেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত থাকবে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে H5N1 বার্ড ফ্লুর ৫৫টি মানব সংক্রমণ রিপোর্ট করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি ক্যালিফোর্নিয়ায়। অন্যদিকে পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডার ওয়েবসাইটে বর্তমানে আতংকিত হওয়ার মতো কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব নেই বলে জানিয়েছে।


তবু যেহেতু এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব হতে পারে বলে একটি আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে, এ রোগ সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো। হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV)  একটি সাধারণ ভাইরাস, যা সাধারণত সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে। এর সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি, নাক বন্ধ বা সর্দি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসে হাঁপানি, ও ত্বকে র‌্যাশ হওয়া।

 

যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি হালকা সমস্যা সৃষ্টি করে, কিন্তু পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে প্রবীণ এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকিতে থাকে। এইচএমপিভি সাধারণত শীতকাল ও বসন্তের শুরুতে বেশি দেখা যায় এবং এটি সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শ বা ভাইরাসে আক্রান্ত বস্তু স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। এই ভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই।

 

হালকা লক্ষণগুলো ঘরে বসেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে গুরুতর অবস্থায় অক্সিজেন থেরাপি বা হাসপাতালের সহায়তা প্রয়োজন হতে পারে। এখানে যেটি গুরুত্ব দিয়ে মনে রাখা প্রয়োজন তা হলে এই রোগে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু, ৬৫ বছরের অধিক বয়সী মানুষ এবং নানা জটিল রোগাক্রান্ত মানুষ যেমন- ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা। এর অর্থ হচ্ছে যেসব মানুষের স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্ণাঙ্গভাবে গড়ে ওঠেনি, বা ক্ষয়ে গেছে-  তারা এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।


এইচএমপিভি সেই একই ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়, যা হাম বা মাম্পস ছড়িয়ে থাকে। এর লক্ষণগুলো ঋতু পরিবর্তনের সময় যে ঠান্ডাজনিত জ্বরে দেখা যায়, মূলত তাই। সে কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বরে ভোগা মানুষেরও মনে হতে পারে তাদের এই রোগ হয়েছে। এমনকি করোনাভাইরাসের লক্ষণের সঙ্গেও এর তেমন কোনো পার্থক্য নেই। মনে রাখতে হবে, এ সব রোগই স্বাসনালীর ওপর বা নিচের অংশকে আক্রমণ করে। তাই ভুল বোঝা কিংবা আতংকিত হওয়া স্বাভাবিক।

 

এছাড়া করোনাভাইরাসের সময় আমরা দেখেছি শিশুরা মূলত এতে তেমন আক্রান্ত হয় না। অন্যদিকে এইচএমপিভিতে শিশুরাই প্রধানত আক্রান্ত হয় এবং মৃত্যুর হারও শিশুদের মধ্যে বেশি। কারও যদি শিশু থাকা অবস্থায় একবার এইচএমপিভি হয়, তাহলে পরবর্তী জীবনে এতে আক্রান্ত হলে তাদের তেমন ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। কারণ আক্রান্ত ব্যক্তি ইতোমধ্যে এই রোগের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে ফেলে।

 

যাদের ক্যান্সার, এইডস, অথবা এজমার মতো রোগ আছে, তারা এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এইচএমপিভি সাধারণ ফ্লু জ্বরের মতো শুরু হলেও ব্রঙ্কাইটিস, ব্রঙ্কাইওলাইটিস, নিউমোনিয়া, এজমা, কানের ক্ষত তৈরি করতে পারে। তবে এর কোনোটিই প্রাণঘাতী নয়।


স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীরা সাধারণত এইচএমপিভি রোগীর লক্ষণ এবং অতীত ইতিহাসের ভিত্তিতে এটি নির্ণয় করেন। এছাড়া করোনাভাইরাসের মতোই সোয়াব করে রোগীর নাক বা গলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ল্যাব নমুনাটি ভাইরাস বা অন্যান্য সংক্রমণের জন্য পরীক্ষা করে। তবে মনে রাখবেন, যদি আপনার লক্ষণগুলো খুব গুরুতর না হয়, তবে আপনাকে সাধারণত এইচএমপিভির জন্য পরীক্ষা করা হবে না।

 

কখনো কখনো চিকিৎসক ব্রঙ্কোস্কপি বা বুকের এক্সরে করতে পারেন শ্বাসনালীতে যেকোনো পরিবর্তন পরীক্ষা করার জন্য। এই ভাইরাসের জন্য কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা বাড়িতেই তাদের লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। যদি আপনি, আপনার সন্তান বা পরিবারের কেউ গুরুতরভাবে অসুস্থ হন, তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত এই রোগের প্রাদুর্ভাবের যে ইতিহাস, তাতে সেই সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

 

গুরুতর আক্রান্ত এইচএমপিভি রোগীকে প্রয়োজন হলে অক্সিজেন থেরাপি দেওয়া যেতে পারে, বিশেষত যদি তার শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। এছাড়াও আইভি ফ্লুইড দিয়ে রোগীকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করা যায়। মনে রাখতে হবে, এটি যেহেতু একটি ভাইরাস, তাই এতে কোন এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। এন্টিবায়োটিক শুধু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ চিকিৎসায় কার্যকর। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এইচএমপিভি থেকে নিউমোনিয়া হলে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণও হতে পারে। যদি চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দেন, তবে তা সেকেন্ডারি সংক্রমণের জন্য।

 


তবে যেকোনো সচেতন ব্যক্তি এইচএমপিভি প্রতিরোধের জন্য অন্যান্য সংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমাতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যেসব পরামর্শ দিয়ে থাকেন সেগুলোই অনুসরণ করতে পারেন। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও আমরা ভ্যাক্সিন আবিষ্কারের পূর্ব পর্যন্ত একই পরামর্শ দিয়েছিলাম। যেমন- সাবান ও পানির সাহায্যে নিয়মিত হাত ধোয়া। যদি সাবান বা পানি না থাকে, তাহলে অ্যালকোহলভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা।

 

হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় নাক ও মুখ কনুই দিয়ে ঢেকে রাখা, হাত দিয়ে নয়। কারণ হাত দিয়ে ঢাকলে, হাতে লেগে যাওয়া ভাইরাস অন্যান্য বস্তুতে ছড়িয়ে যেতে পারে। কেউ যদি ঠান্ডা বা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন, তবে একে অন্যের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। অসুস্থ অবস্থায় অন্যদের কাছাকাছি এড়ানো সম্ভব না হলে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। নিজের মুখ, চোখ, নাক এবং মুখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলা উচিত। নিজের খাবার বা খাওয়ার সরঞ্জাম (যেমন- কাঁটাচামচ, চামচ, কাপ) অন্যদের সঙ্গে শেয়ার না করা। এছাড়াও কারও মধ্যে যদি এইচএমপিভির লক্ষণ থাকে তাহলে অন্তত দু’সপ্তাহ তাদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ না করার চেষ্টা করা।

 

দেখা করতে হলেও অন্তত খোলা জায়গায় ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে দেখা করা, কথা বলার সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা। যে কোনো শ্বাসনালীর সংক্রমণজনিত রোগে নিয়মিত হাত ধোঁয়া, মাস্ক পরা, দূরত্ব বজায় রাখা, ঘরদোর পরিষ্কার রাখা, বদ্ধ জায়গায় আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে দেখা না করার চেয়ে কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা আর কিছু হতে পারে না।


কারও যদি এইচএমপিভি হয়েই যায়, তবু তাতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। এর মৃদু সংক্রমণ সাধারণত কয়েক দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। যদি আপনি খুব অসুস্থ হন, তবে সুস্থ হতে বেশি সময় লাগতে পারে। মাঝে মাঝে কাশির মতো কিছু লক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এমতাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করুন, যাতে পানিশূন্যতা এড়ানো যায়। দরকার হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাধারণ ব্যথানাশক, কফ এবং কাশির ওষুধ খেতে পারেন।

 

তবে শিশুরা আক্রান্ত হলে অবশ্যই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। বিশেষত যদি আপনার বা আপনার সন্তানের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয় বা পুরনো রোগের ইতিহাস থাকে এবং সেই সঙ্গে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ায়- এমন কোনো অন্তর্নিহিত সমস্যা থাকে। আর কারও যদি জ্বর ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে থাকে তাহলে তাকে অবশ্যই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে। সাথে শ্বাসকষ্ট, ত্বক, ঠোঁট বা নখের নীলচে রং এবং স্বাস্থ্যের ক্রমাবনতি হলেও রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া উচিত।


পুরো লেখাটার যদি সারসংক্ষেপ করি, তাহলে মনে রাখবেন এইচএমপিভি কোনো নতুন রোগ নয়। এটি প্রথম ২০০১ সালে শনাক্ত হলেও অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন এমন তথ্যপ্রমাণ আছে, যা নিশ্চিত করে এর প্রাদুর্ভাব ১৯৫৮ সালে প্রথম হয়েছিল। এটি একটি সাধারণ ভাইরাস যা সাধারণত ঠান্ডাজনিত লক্ষণের মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে। আপনি যদি পাঁচ বছরের বেশি বয়সী হন, তবে সম্ভবত একবার হলেও এটি আপনার ইতোমধ্যে হয়ে গেছে এবং আপনার মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতার সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, আপনি কয়েক দিনের মধ্যে বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে যাবেন।

 

 তবে কখনো কখনো এইচএমপিভি গুরুতর জটিলতার কারণ হতে পারে। ৫ বছরের নিচের শিশু, ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি, ক্যান্সার, এইডস ইত্যাদি গুরুতর রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য যেহেতু ঝুঁকি বেশি, তাদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। চীনে বর্তমানে যে প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে তা হয়ত খুব সাধারণ শীতকালীন ফ্লু, এইচএমপিভি নয়। যতদিন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা সিডিসির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে বলে জানান দিচ্ছে, ততদিন অহেতুক ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

 


তবে বাংলাদেশের মতো অধিক জনসংখ্যার দেশে অগ্রিম সতর্কতা গ্রহণ করা ভালো। এয়ারপোর্টে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা নেওয়া ও তথ্য সংগ্রহ করা একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হতে পারে। আর ৫ বছরের নিচের শিশুদের থেকে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দূরে রাখুন। যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, বা ভিড়ের মধ্যে মাস্ক পড়ুন- এই তো! এখনো আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, অন্তত এইচএমপিভি থেকে!