কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

ই-কমার্স ইকোনমি: আগামীর বাংলাদেশের রূপরেখা

ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান [সূত্র : বনিক বার্তা, ০৭ মে ২০২৫]

ই-কমার্স ইকোনমি: আগামীর বাংলাদেশের রূপরেখা

আমাদের ই-কমার্স এখন আর শুধু অনলাইনে পণ্য কেনা-বেচার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ইকোসিস্টেম—যেখানে রয়েছে উদ্যোক্তা, ক্রেতা, ডেলিভারি, পেমেন্ট, মার্কেটিং ও ডেটা বিশ্লেষণ। এটি গ্রাম-শহরের ব্যবধান ঘুচিয়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ সৃষ্টি করছে।

 

 

 

গত এক দশকে বাংলাদেশে ই-কমার্স খাতটি এক বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। হাজারো তরুণ-তরুণীর উদ্যোগ, লাখো ভোক্তার আস্থা এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশনের সমন্বয়ে একটি নতুন অর্থনৈতিক জগৎ গড়ে উঠছে—যাকে আমরা বলি ‘ই-কমার্স ইকোনমি’। এটি শুধু একটি খাত নয়, বরং একটি বিকাশমান অর্থনৈতিক দর্শন, যা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে।

 

 

 

ই-কমার্স: একটি নতুন অর্থনৈতিক বাস্তবতা

আমাদের ই-কমার্স এখন আর শুধু অনলাইনে পণ্য কেনা-বেচার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি ইকোসিস্টেম—যেখানে রয়েছে উদ্যোক্তা, ক্রেতা, ডেলিভারি, পেমেন্ট, মার্কেটিং ও ডেটা বিশ্লেষণ। এটি গ্রাম-শহরের ব্যবধান ঘুচিয়ে দেশের প্রতিটি প্রান্তে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ সৃষ্টি করছে।

 
 
 

আমাদের লক্ষ্য: একটি সুনির্দিষ্ট জাতীয় ই-কমার্স নীতি

আমরা চাই—একটি সুসংহত, স্বচ্ছ ও বাস্তবভিত্তিক ই-কমার্স পলিসি, যা আমাদের ভবিষ্যতে পথ দেখাবে। এতে অগ্রাধিকার পাবে:

বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ: স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগ উৎসাহিত করা।

বিশ্বায়ন ও রফতানি সক্ষমতা: বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের ডিজিটাল পণ্যের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।

ডিজিটাল লেনদেন ও স্মার্ট বিডিআইডি: স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সবার জন্য নিরাপদ ও স্বয়ংক্রিয় ডিজিটাল ট্রেড লাইসেন্স চালু করা।

যুব ও নারী নেতৃত্ব: তরুণ ও নারীদের নেতৃত্বে স্বাবলম্বী ই-কমার্স সম্প্রদায় গড়ে তোলা।

ট্রাস্ট বিল্ডিং ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা: ই-কমার্সে আস্থা ফিরিয়ে আনতে দক্ষতা, নৈতিকতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরিচালিত সংগঠন গঠন।

 

 

 

আমাদের স্লোগান: ‘স্মার্ট বিডিআইডি’ ও ‘এক পরিবার এক উদ্যোগ’

আমরা বিশ্বাস করি, ‘এক পরিবার এক উদ্যোগ’ হলে পুরো দেশই একটি উদ্যোক্তা সমাজে পরিণত হবে। প্রত্যেক ঘরে যদি একজন উদ্যোক্তা গড়ে ওঠে, তবে দেশের অর্থনীতির চেহারাই পাল্টে যাবে। আর ‘স্মার্ট বিডিআইডি’ হবে এ ডিজিটাল অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি।

 

 

 

কেন এ রূপান্তর জরুরি?

প্রতিদিন বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দিকে। যদি আমরা এখনই সাহসী ও সমন্বিত পদক্ষেপ না নিই, তবে এ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব। আমাদের প্রয়োজন একটি সক্রিয় ও প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় ই-কমার্স সংগঠন, রাষ্ট্রীয় সহায়তা, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন ব্যবস্থা।

আমরা এখন ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। ই-কমার্স এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং দেশের অর্থনীতির প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় অংশ। আমরা যদি এখনই ‘ই-কমার্স ইকোনমি’ ধারণাকে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করি, তাহলে এটি হতে পারে—ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ভিত্তি।

 

 

বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত—যেখানে প্রত্যেক নাগরিক হবে উদ্যোক্তা ও প্রতিটি ক্লিক হবে এক নতুন সম্ভাবনার সূচনা।

আমি বিশ্বাস করি—সদস্যের কণ্ঠস্বরই সংগঠনের প্রাণ। তাদের সমস্যা, অভিজ্ঞতা ও প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংগঠন পরিচালিত হওয়া উচিত।

আমি ই-ক্যাবের নেতৃত্বে এলে ‘নেতৃত্ব নয়, অংশীদারত্বের সংস্কৃতি’ গড়ে তুলব।

 

 

ড. মোহাম্মদ নূরুজ্জামান: ড্যাফোডিল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা