ইসরাইলের ইরান আক্রমণ : আইনসম্মত আত্মরক্ষা নাকি অবৈধ বলপ্রয়োগ
যদি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরাইলবিরোধী নিন্দার আইনি ও বাস্তব ভিত্তি তুলে ধরত, তাহলে এটি ভবিষ্যতে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারত। এহসান এ সিদ্দিক [সূত্র : নয়াদিগন্ত, ২১ জুন ২০২৫]

২০২৫ সালের ১৩ জুন ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা চালানোর মাধ্যমে ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলের দাবি, এর মাধ্যমে ‘আত্মরক্ষার’ অধিকার প্রয়োগ করেছে সে। তেল আবিবের যুক্তি হলো- ইরান তাদের নিরাপত্তার জন্য একটি ‘আসন্ন’ ও ‘অস্তিত্ব সঙ্কটাপন্ন’ হুমকি তৈরি করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ইসরাইলি গোয়েন্দা তথ্যে (যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি) প্রমাণ মিলেছে, ইরান একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল, যা অচিরেই ইসরাইলের ওপর হামলার জন্য ব্যবহৃত হতো। ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জগও বলেন, এ হামলা ইসরাইলি জনগণকে একটি ভয়াবহ ও তাৎক্ষণিক বিপদ থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ছিল। ইসরাইল আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের কথাও উল্লেখ করেছে, যেখানে ইরানকে পূর্ণ সহযোগিতা না করার এবং তার পারমাণবিক কর্মসূচিতে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থতায় সমালোচনা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা যায়নি, যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়- ইরান আসলে ইসরাইলের ওপর আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ নিবন্ধে আমরা ইসরাইলের এই সামরিক পদক্ষেপ আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে বৈধ ছিল কি না, তা আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে বিশ্লেষণের চেষ্টা করব।
ইসরাইল দাবি করেছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ইরানের ওপর তাদের হামলা বৈধ ছিল, কারণ এগুলো ‘আত্মরক্ষার’ জন্য পরিচালনা করা হয়েছিল। আত্মরক্ষার ধারণাটি জাতিসঙ্ঘ সনদের ৫১ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে। এটি এমন একটি প্রধান আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলো কখন বলপ্রয়োগ করতে পারে; তার নিয়ম নির্ধারণ করে দিয়েছে।
৫১ ধারার প্রথম অংশে বলা হয়েছে- ‘জাতিসঙ্ঘের কোনো সদস্যদ্যের ওপর কোনো আক্রমণ ঘটলে, যতক্ষণ পর্যন্ত না আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাদি নিরাপত্তা পরিষদ গ্রহণ করছে, ততক্ষণ সে রাষ্ট্রের একক সহজাত অধিকার বা যৌথ আত্মরক্ষার অধিকার সম্বন্ধে বর্তমান সনদের কোনো অংশ অন্তরায় হবে না।’
সহজ ভাষায় এর অর্থ হলো- একটি দেশের আত্মরক্ষার অধিকার আছে কিন্তু শুধু যদি তাকে প্রথমে অন্য কোনো দেশ আক্রমণ করে। এ ধারার ভাষ্য থেকে এটি স্পষ্ট, আত্মরক্ষা শুধু একটি প্রকৃত সশস্ত্র আক্রমণ ঘটার পরে অনুমোদিত (যেমনটি বলা হয়েছে- ‘যদি কোনো সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আক্রমণ ঘটে’), আক্রমণের আগে নয়। এটি এ জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে, এর মাধ্যমে আমারা জানতে পারি ‘পূর্ব ধারণাভিত্তিক’ বা ‘প্রতিরোধমূলক’ আত্মরক্ষা হিসেবে কোনো দেশ কেবল অনুমানের ভিত্তিতে প্রথমে কোনো দেশকে আক্রমণ করবে, এটি জাতিসঙ্ঘ সনদ অনুমোদন করে না।
আন্তর্জাতিক আইনের ৫১ নম্বর ধারার এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে এমন উদাহরণও রয়েছে। ১৯৮১ সালে ইসরাইল দাবি করে, ইরাক একটি পারমাণবিক স্থাপনা নির্মাণ করছিল, যা ভবিষ্যতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এ যুক্তিতে তারা ইরাকের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। তবে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করে এবং ৪৮৭ নম্বর প্রস্তাবের মাধ্যমে ইসরাইলকে কঠোরভাবে নিন্দা জানায়। এমনকি ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যও তেল আবিবের যুক্তি গ্রহণ করেনি। তারা বলেছিল, ইরাক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, এমন কোনো শক্ত প্রমাণ তাদের কাছে ছিল না এবং কোনো আক্রমণও ঘটেনি। ফলে ৫১ নম্বর ধারার অধীনে ইরাকের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের কোনো বৈধ অধিকার ইসরাইলের ছিল না।
২০২৫ সালে ইরান সম্পর্কে ইসরাইল একই ধরনের যুক্তি উপস্থাপন করেছে। তারা দাবি করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল এবং ইসরাইলের উপর হামলার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রকাশিত হয়নি, যা প্রমাণ করে, ইরান আসলে ইসরাইলের ওপর হামলা চালিয়েছে বা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। জাতিসঙ্ঘ সনদের ৫১ নম্বর ধারার ভাষ্য এবং অতীত ঘটনার প্রদত্ত ব্যাখ্যা অনুসারে (বিশেষ করে ১৯৮১ সালের ইরাক আক্রমণের ঘটনায়) বিবেচনা করলে দেখা যায়, ইরানের উপর ইসরাইলের এ হামলা আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে বৈধ বলে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ নেই।
তবে, উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে এমন কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে, যাতে প্রতীয়মান হয়, পূর্বাভাসভিত্তিক বা প্রতিরোধমূলক আত্মরক্ষা অনুমোদিত হতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব সতর্কতামূলক আত্মরক্ষার অধিকার শুধু তখন প্রযোজ্য; যখন কোনো আক্রমণ এতটা আসন্ন ও অপ্রতিরোধ্য হয় যে, প্রতিকারের কোনো বিকল্প পথ বা বিবেচনার সময় অবশিষ্ট থাকে না। অনেক আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ মনে করেন, পূর্বাভাসভিত্তিক আত্মরক্ষার অধিকার না থাকলে নির্দোষ রাষ্ট্রগুলো সামরিকভাবে অসুবিধায় পড়বে। তাই তারা এ অধিকারকে স্বীকৃতি দিলেও বলেন, এটি কেবল ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে প্রয়োগযোগ্য, যখন হুমকি নিশ্চিত বা আসন্ন। বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘ সনদের ৫১ নম্বর ধারার ভাষ্য বিবেচনায় এটি আরো গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেখানে বলা হয়েছে- আত্মরক্ষা কেবল তখন অনুমোদিত, যখন একটি রাষ্ট্র ইতোমধ্যে আক্রমণের শিকার হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে আমাদের বিশ্লেষণ করা দরকার, ইরান সত্যি ইসরাইলের ওপর পারমাণবিক হামলা চালাতে যাচ্ছিল কি না।
এটি সত্য, ইরানের কাছে এমন বহু দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা ইসরাইল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এবং দেশটি একাধিক পারমাণবিক চুল্লিও পরিচালনা করে। জাতিসঙ্ঘের অধীন পারমাণবিক কর্মসূচি তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শকদের সাথে ইরানের সীমিত সহযোগিতা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। তবে এতসব সন্দেহ ও উদ্বেগ সত্ত্বেও, এখনো পর্যন্ত এমন কোনো স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায়, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ করছে।
২০২৫ সালের ১২ জুন আইএইএ তাদের ১৭৬৯তম অধিবেশনে বসে এবং একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব গ্রহণ করে। যদিও প্রস্তাবে বলা হয়, ইরানের সহযোগিতা ‘অসন্তোষজনক’, তবু সেখানে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি, ইরান পারমাণবিক উপাদান অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। এর অল্প কয়েক দিন পর, ২০২৫ সালের ১৯ জুন, আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেন, সংস্থাটি ইরানে কোনো সক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির প্রমাণ পায়নি।
এটি স্পষ্ট হয়েছে, পারমাণবিক কার্যক্রম তদারকিতে একমাত্র আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ), এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ খুঁজে পায়নি যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। তা সত্ত্বেও ইসরাইল সরকার ঘোষণা করেছে, ইরানের পারমাণবিক হামলা আসন্ন; অর্থাৎ যেকোনো মুহূর্তে পারমাণবিক হামলা ঘটতে পারে। কিন্তু এ দাবির পক্ষে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে কোনো শক্ত প্রমাণ ইসরাইল উপস্থাপন করতে পারেনি। এ প্রমাণের অভাব ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের খ্যাতনামা আন্তর্জাতিক আইনবিদ অধ্যাপক মার্কো মিলানোভিচের মতো অনেক আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাধ্য করেছে যে, ২০২৫ সালের ১৩ জুন ইরানের ওপর ইসরাইলের হামলা পূর্বাভাসভিত্তিক আত্মরক্ষার নিয়ম অনুযায়ী বৈধ ছিল না। কারণ ইরানের হামলা আসন্ন ছিল, এমন কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। তাই অধ্যাপক মিলানোভিচের মতে, ইসরাইলের এ বিমান হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
কৌতূহলোদ্দীপক হলো- যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল রিচার্ড হারমার ব্রিটিশ সরকারকে এ বলে সতর্ক করেছেন, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাজ্যের কোনো ধরনের অংশগ্রহণ অবৈধ হতে পারে। হারমার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন যুক্তরাজ্যের সম্পৃক্ততা কেবল মিত্রদের ওপর হামলা প্রতিরোধে সীমিত রাখা হয়। এটি স্পষ্ট, যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করছে যা জাতিসঙ্ঘ সনদের ২(৪) ধারার লঙ্ঘন।
এ যুদ্ধের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো- ২০২৫ সালের ১৪ জুন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্বীকার করেছেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা তাদের শীর্ষ প্রযুক্তিবিদদের সরিয়ে দিয়েছি, যারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং আমাদের জন্য হুমকি হয়ে উঠছিলেন।’ কিন্তু বিজ্ঞানীরা বেসামরিক নাগরিক এবং তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে বৈধ নয়। কেবল অস্ত্র কর্মসূচিতে গবেষক হিসেবে কাজ করলে কেউ সরাসরি শত্রুতায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে বিবেচিত হন না। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মার্কো মিলানোভিচ যুক্তি দেখান, ১৯৪৫ সালে বিশ্বের প্রথম পরমাণু বোমা তৈরির ম্যানহাটন প্রকল্পে কাজ করা শত শত বেসামরিক বিজ্ঞানী বা প্রকৌশলীকে (বর্তমান আইন অনুযায়ী) যোদ্ধা বা শত্রুতায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী বেসামরিক নাগরিক হিসেবে শ্রেণীকৃত করা যাবে না। তারা যে স্থাপনায় কাজ করতেন, তা সামরিক লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে বিজ্ঞানীরা লক্ষ্যবস্তু হতে পারেন না। সুতরাং নেতানিয়াহু যখন বলেন, তিনি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করেছেন, তখন তিনি কার্যত যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের কথা স্বীকার করছেন।
ইসরাইলের হামলার পর বাংলাদেশ দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, এটি প্রশংসনীয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, সেখানে ইসরাইলের এ হামলাকে জাতিসঙ্ঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতিমালার লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তের পেছনে যে আইনি ভিত্তি রয়েছে, তা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এতে বোঝা যায়, বিজ্ঞপ্তি প্রস্তুতকরণের সময় বিশেষজ্ঞ আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের পরামর্শ নেয়া হয়নি। যদি এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে খসড়া করা হতো, তাহলে নীতিমালা লঙ্ঘনের নির্দিষ্ট দিকগুলো তুলে ধরা যেত। লক্ষ্য করুন, যুক্তরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কিভাবে যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। যদি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসরাইলবিরোধী নিন্দার আইনি ও বাস্তব ভিত্তি তুলে ধরত, তাহলে এটি ভবিষ্যতে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিচারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দলিল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারত। কেবল নৈতিক নিন্দা জানিয়ে, আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে তার ভিত্তি উপস্থাপন না করলে, এর গুরুত্ব অনেকটা কমে যায়। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিবৃতি প্রণয়নের সময় নৈতিক দৃঢ়তা ও আইনি স্পষ্টতা উভয় নিশ্চিত করা অপরিহার্য, যাতে বাংলাদেশের গর্জন কেবল শোনার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না থেকে; তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত ও স্মরণীয় হয়ে থাকে।
লেখক : বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এবং হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নিবন্ধিত কৌঁসুলি