জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার বহাল
সূত্র : বণিক বার্তা, ১২ মার্চ ২০২৫

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিতে পপসম্রাট আজম খান, স্যার ফজলে হাসান আবেদ, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদসহ সাতজনকে এবার দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে সরকার। সেই সঙ্গে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে দেয়া মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের সিদ্ধান্ত রহিত করা হয়েছে।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে ২০০৩ সালে দেয়া স্বাধীনতা পুরস্কার বহাল রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। এ-সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের যে রায়ের পটভূমিতে ২০০৩ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে দেয়া স্বাধীনতা পুরস্কার সরকার বাতিল করে, সেখানে তাকে দেয়া স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের কোনো নির্দেশনা না থাকায় মহান মুক্তিযুদ্ধে তার অসাধারণ অবদান বিবেচনায় তার স্বাধীনতা পুরস্কার বাতিলের এ সিদ্ধান্ত সরকার রহিত করেছে।’
২০১৬ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিসভা কমিটি। একই সঙ্গে জাতীয় জাদুঘর থেকে ওই পুরস্কারের মেডেল ও সম্মাননাপত্র সরিয়ে ফেলার সুপারিশ করে। এ নিয়ে তখন রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এ বছরের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবারের তালিকার সাতজনের মধ্যে ছয়জনই মরণোত্তর এ সম্মাননা পাচ্ছেন। কেবল শিক্ষা ও গবেষণা ক্যাটাগরিতে বদরুদ্দীন উমর জীবদ্দশায় এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। তবে তিনি আগেই এক বিবৃতির মাধ্যমে পুরস্কার গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন।
এবার ‘প্রতিবাদী তারুণ্য’ নামে নতুন একটি ক্যাটাগরিতে মরণোত্তর এ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ছয় বছর আগে ছাত্রলীগ কর্মীদের নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। পুরস্কারের জন্য মনোনীত বাকিরা হলেন—বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম, সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (কবি আল মাহমুদ), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ, সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ, মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মাহবুবুল হক খান (আজম খান)। তারা সবাই মরণোত্তর এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
এদিকে ১৯৮৫ সালে স্বাধীনতা পদক পাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নাম ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
গতকাল এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় জীবনে অসাধারণ অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীকে (অব.) ১৯৮৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার প্রাথমিকভাবে তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। কিন্তু কোনো বাংলাদেশীর একাধিকবার রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার পাওয়ার নজির নেই। তাই এ পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়।