জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট কতটা যৌক্তিক?
সফিক ইসলাম । সূত্র : বণিক বার্তা, ০৮ মার্চ ২০২৫

গত ৫ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পেশ করেছে। এর আগে গত ৩ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনে সাবেক আমলা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে এ কমিশন গঠন হয়েছিল। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় ‘একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়িয়া তুলিবার লক্ষ্যে’ এই কমিশন গঠন করা হলো।
প্রসঙ্গত কোন পরিস্থিতিতে এই কমিশন গঠন করা হলো তা বিবেচনায় রাখতে হবে। ১৫ বছর ধরে দেশে একটি অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। আওয়ামী সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সাহায্য করেছিল বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র। তারা ফ্যাসিবাদী শাসনের দোসর হিসেবে কাজ করেছে। প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রায় সব অঙ্গই ফ্যাসিবাদী শাসনকে দৃঢ় ও সুসংহত করার প্রকল্পে নিযুক্ত ছিল।
একটি রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সংগত কারণেই এ অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে কার্যকর ও জনবান্ধব করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর। সেই লক্ষ্যে সরকার কয়েকটি কমিশন গঠন করে। এই কমিশন গঠনের পেছনে একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রের কোনো অঙ্গ যেন ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠার সহায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে না পারে সেই সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সরকারের এ বৃহত্তর লক্ষ্য সামনে রেখে জনপ্রশাসন কমিশন গঠন করা হয়। সেই কমিশন সম্প্রতি তাদের রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
সংগত কারণেই জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রদত্ত রিপোর্টের প্রতি সচেতন মানুষের প্রবল আগ্রহ রয়েছে। সরকার যে উদ্দেশ্যে এই কমিশন গঠন করেছিল, জনগণ যে আশা নিয়ে কমিশনের দিকে তাকিয়ে ছিল, কমিশনের রিপোর্ট কি তার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয়েছে? এ প্রবন্ধে আমরা নিরপেক্ষভাবে কমিশন প্রদত্ত রিপোর্টের নানা দিক মূল্যায়ন করব এবং এর যৌক্তিকতা তুলে ধরার চেষ্টা করব।
মুয়ীদ কমিশন ২০৫ পৃষ্ঠার এক বিশাল রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। ২০৫ পৃষ্ঠার এই রিপোর্টের সারসংক্ষেপই ৪৫ পৃষ্ঠার। কী আছে এই রিপোর্টে? এই রিপোর্টের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রস্তাবনা হলো:
১. জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নাগরিক কমিটি গঠন করা এবং এই নাগরিক কমিটিতে ছাত্র প্রতিনিধি রাখা
২. মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা ৪৩ থেকে কমিয়ে ২৫টিতে আনা
৩. দুটি নতুন বিভাগ (কুমিল্লা ও ফরিদপুর) গঠন করা
৪. ‘জেলা প্রশাসক’ ও ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার’ পদবি পরিবর্তন করে যথাক্রমে ‘উপজেলা কমিশনার’ ও ‘জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা কমিশনার’ করা,
৫. জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করা
৬. উপজেলা পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট স্থাপন করা
৭. চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করা
৮. জেলা পরিষদ বাতিল করা
৯. পৌরসভাকে শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে পরোক্ষ ভোটে (ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে) পৌরসভা চেয়ারম্যান নির্বাচন করা
১০. উপজেলা পরিষদকে শক্তিশালী করার জন্য ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বাতিল করা
১১. সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠন করা
১২. বিসিএস (তথ্য প্রকৌশল) সার্ভিসকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা
১৩. তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন প্রতিষ্ঠা করা ১৪. পিএসসির লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস পরিবর্তন করে গণিতকে বাদ দেয়া
১৫. সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস গঠন করে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করা
১৬. সকল ক্যাডারের লাইন প্রমোশন নিশ্চিত করা
১৭. প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হলে সরকারি চাকরির দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর পদে নিয়োগের জন্য একটি প্রাদেশিক কর্ম কমিশন গঠন করা
১৮. দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা
১৯. তথ্য কমিশনকে শক্তিশালী করা ইত্যাদি।
কমিশনের এ সুপারিশগুলোর প্রতিটি নিয়েই আলাদা করে নিবন্ধ রচনা করা যায়। কিন্তু আমরা স্বল্প পরিসরে সংক্ষিপ্তভাবে কমিশনের সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করব। আমরা যদি কমিশনের এ সুপারিশমালার দিকে একটু ভালোভাবে খেয়াল করি তাহলে দেখব, সুপারিশগুলোর পরিসর অত্যন্ত বিস্তৃত।
যেমন কমিশন বাংলাদেশকে এককেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা কেমন হবে তা পুরোপুরি একটি সাংবিধানিক বিষয়। এ লক্ষ্যে সরকার একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন করেছে—সাংবিধানিক সংস্কার কমিশন। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আওতা সুনির্দিষ্ট ও নির্ধারিত। তাছাড়া প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা একই সঙ্গে একটি ভয়ংকর ও সংবেদনশীল ইস্যু। কারণ এর সঙ্গে বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব জড়িত। কাজেই এর সঙ্গে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও জড়িত। সংগত কারণেই বলা যায়, কমিশন সম্ভবত এখানে তাদের এখতিয়ার ও সীমা লঙ্ঘন করেছে।
কমিশন যে কেবল এই একটি জায়গাতেই এমন এখতিয়ার-বহির্ভূতভাবে সুপারিশ করেছে তা নয়, আরো অনেক জায়গায়ই এ প্রবণতা লক্ষ করা যায়।
যেমন কমিশন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদানের সুপারিশ করেছে এবং তারা উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি ও ফৌজদারি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পুনঃস্থাপনেরও সুপারিশ করেছে। যদিও তারা এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ গ্রহণ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে। এটা যেন তাদের ঔদার্য। অথচ ম্যাজিস্ট্রেসি বা বিচারিক কার্যক্ষমতা প্রয়োগের একমাত্র দায়িত্ব হলো বিচার বিভাগের। সরকার এ লক্ষ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনও গঠন করেছে। কিন্তু জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এক্ষেত্রে তাদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে বিচার বিভাগের আওতাভুক্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এমন এখতিয়ার-বহির্ভূত সুপারিশ লক্ষ করা যায় দুর্নীতি দমনবিষয়ক কমিশনসহ আরো অনেক বিষয়েও।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে বেশকিছু স্ববিরোধিতাও লক্ষ করা যায়। তারা জেলা পরিষদ বাতিলের পক্ষে সুপারিশ করেছে। কারণ হিসেবে তারা বলেছে, ‘জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কখনই নাগরিকদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হননি। কিছু জেলা পরিষদ বাদে অধিকাংশেরই নিজস্ব রাজস্বের শক্তিশালী উৎস নেই।’ যেহেতু জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা সরাসরি নির্বাচিত নন, কাজেই এক্ষেত্রে তাদের একমাত্র যৌক্তিক সুপারিশ হওয়ার কথা ছিল সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনের সুপারিশ করা।
কিন্তু তারা তা না করে জেলা পরিষদই বাতিলের সুপারিশ করেছে। অন্যদিকে তারাই আবার ‘পৌরসভার চেয়ারম্যানকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে’ সরাসরি নির্বাচনের পরিবর্তে ওয়ার্ড মেম্বারদের ভোটে নির্বাচনের সুপারিশ করেছে। তাদের এ দুই সুপারিশ স্পষ্টতই একটি অন্যটির বিরোধী। পৌর চেয়ারম্যানরা সরাসরি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। তারা এ প্রথার বিলুপ্তি চান এবং মেম্বারদের ভোটে পৌর মেয়র নির্বাচন চান। এ যেন আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন।
অনেক ক্ষেত্রে তাদের সুপারিশ অজ্ঞানতার স্মারকও বহন করে। কমিশন আইসিটি কর্মকর্তাদের তথ্য সার্ভিসে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করেছেন। এক্ষেত্রে তারা বলেছেন, ‘সরকারি দপ্তরে আইসিটি সম্পৃক্ত বহু কর্মচারী এখন কাজ করেন। তাদের অনেকেই বেশ মেধাবীও বটে। অনেকে দেশের বাইরে গিয়েও বেশ সাফল্য দেখাচ্ছেন। এমতাবস্থায় সরকারি দপ্তরের আইসিটি কর্মকর্তাদেরকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করা হলো।’ তাদের প্রস্তাব এককালীন, টেকসই নয়। তাছাড়া এটা অদূরদর্শীও বটে। বর্তমান বিশ্ব পরিপূর্ণভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর। এ অবস্থায় তাদের সুপারিশ হওয়ার কথা ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামে একটি স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালু করা। কিন্তু তারা সেই যৌক্তিক পথে না গিয়ে এককালীন নিয়োগের প্রস্তাব করেছে এবং তথ্য ক্যাডারের সঙ্গে আত্মীকৃত করার প্রস্তাব করেছেন যা মোটের ওপর অগ্রহণযোগ্যই।
কমিশন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে আলাদা করার সুপারিশ করেছে। সবাই স্বীকার করবেন ফ্যাসিবাদী সরকার প্রতিষ্ঠায় এ দুই পেশার অংশগ্রহণ ছিল সবচেয়ে কম। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের তুলনতায়ও সরকারি কলেজের শিক্ষকদের দায় ছিল অনেক কম। কিন্তু তবুও কমিশন এই দুটি পেশাকে আলাদা করার সুপারিশ করেছে। সংগত কারণেই অনেকে একে দেখছেন একটি ষড়যন্ত্র হিসেবে।
কারণ সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বিসিএস চাকরি মর্যাদাকর চাকরি হিসেবে পরিগণিত হয়ে আছে। এ অবস্থায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের মানোন্নয়নে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ না দিয়ে কেবল ক্যাডার-বহির্ভূত করলে এ পেশার সদস্যদের মর্যাদাহানির সম্ভাবনা তৈরি হবে। কয়েকজন অশিক্ষক ও অচিকিৎসক এ দুই গুরুত্বপূর্ণ পেশার ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেললেন সম্পূর্ণ অযাচিতভাবে যা কারো কাছেই গ্রহণীয় হওয়ার কথা নয়। অথচ এ দুই পেশার মানোন্নয়নে অভিজ্ঞজনদের নিয়ে আলাদা শিক্ষা কমিশন ও স্বাস্থ্য কমিশন গঠনের সুপারিশ হতে পারত একটি যৌক্তিক প্রস্তাবনা।
কমিশনের ভয়াবহ অজ্ঞতা ধরা পড়ে পিএসসির সিলেবাস সংশোধনের প্রস্তাবে। তারা সম্পূর্ণ অযাচিতভাবে পিএসসির লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে। তারা গণিতকে বাদ দেয়ার মতো আত্মঘাতী সুপারিশ করেছে।
পিএসসি কেন প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের সিলেবাস প্রণয়নও সাবেক বা বর্তমান আমলার কাজ নয়। এটি পরিপূর্ণভাবে একটি টেকনিক্যাল বিষয় এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞজনরাই সিলেবাস প্রণয়নের ক্ষমতা রাখেন। কিন্তু কমিশন সেই অনধিকার চর্চাও অবলীলায় করেছে। শুধু পিএসসির সিলেবাসই নয়, এই কমিশন সরকারি কলেজে অনার্স চালুর জন্যও আমলাদের খবরদারি নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। কমিশন রিপোর্টে বলে, ‘অনার্স চালুর জন্য শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ সচিবের নেতৃত্বেই হতে হবে, কোনো খ্যাতিমান একাডেমিসিয়ান নয় কিন্তু।
কমিশনের রিপোর্ট থেকে এমন ধারণা তৈরি হবে না—বাংলাদেশের আমলাতন্ত্র ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের দোসর হবে না, বরং তারা যে ফ্যাসিবাদকেই পৃষ্ঠপোষকতা করবে তেমন বিশ্বাস জন্মানোর যৌক্তিক কারণ আছে। এ বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয় উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কথিত ‘নাগরিক কমিটি’তে ছাত্র প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাবেও।
কমিশন অত্যন্ত দায়সারাভাবে ‘অতীতে যারা ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, ভোট জালিয়াতি, অর্থ পাচার, দুর্নীতি, এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণহত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হয়ে জনপ্রশাসনের পেশাদারত্ব, ভাবমূর্তি ও একটি গণতান্ত্রিক দেশের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য’ একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করার সুপারিশ করেছে। অথচ প্রস্তাবিত কমিশনে এ সম্পর্কে বিশদ কোনো সুপারিশ নেই, এদের বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি এমনকি এ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও ফ্যাসিবাদের দোসর আমলাদের সম্পর্কে করণীয় কী তা সুস্পষ্টভাবে বলা হয়নি।
কাজেই বর্তমান জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট অনেক ক্ষেত্রেই স্বরিরোধী, এখতিয়ার-বহির্ভূত ও অগ্রহণযোগ্য। এমনকি তা অতীতের অনেক সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের তুলনায়ও অনেক দুর্বল। কাজেই কমিশনের অধিকাংশ সুপারিশই বাস্তবতার নিরিখে গ্রহণযোগ্য নয়, এমনকি তা ন্যয়সংগতও নয়। কাজেই যে লক্ষ্য সামনে রেখে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল প্রাথমিকভাবে সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বলে মেনে নেয়া কঠিন।
সফিক ইসলাম: সহযোগী অধ্যাপক, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ, মুন্সীগঞ্জ