কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

খাদ্যনিরাপত্তা : কৃষিতে বিনিয়োগ কমায় সাম্প্রতিককালে উৎপাদন বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে কমছে

ড. জাহাঙ্গীর আলম [সূত্র : বণিক বার্তা, ১০ মে ২০২৫]

খাদ্যনিরাপত্তা : কৃষিতে বিনিয়োগ কমায় সাম্প্রতিককালে উৎপাদন বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে কমছে

গত ৫৪ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে কৃষি খাতে। ৪০ বছর আগে যখন মাঠে-ঘাটে গিয়েছে তখন বড় বড় ধান গাছ দেখতাম এবং সেখানে ধানের ছড়া খুব ছোট দেখতাম। বর্তমানে ধান গাছ ছোট হলেও ধানের ছড়া খুব বড় দেখা যায়। ৪০ বছর আগে আমাদের যে গরুগুলো ছিল সেগুলো খুবই ছোট। ক্রস ব্রেড ক্যাটল অনেক বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিটি পুকুরে মাছের চাষ হয়। স্বাধীনতার পর আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল এক কোটি টন, যা এখন পাঁচ কোটি টন ছাড়িয়েছে। এ সময়ে দেশের কৃষি খাতের মোট উৎপাদন ৩ শতাংশ হারে বেড়েছে, যেখানে সারা বিশ্বে বেড়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ হারে।

 

 

 

উৎপাদন বৃদ্ধির দিক থেকে আমরা যথেষ্ট এগিয়েছি। তার পরও আমাদের খাদ্য সংকট ও সমস্যা রয়ে গেছে। প্রতি বছর ধান, গম, চাল, ভুট্টা ছাড়াও আমাদের মসলাজাতীয় ফসল এবং ডাল ও তেল নিয়মিত আমদানি করতে হয়। পরিমাণে তা প্রায় এক কোটি টনেরও বেশি। অনেকেই বলেন আমরা খাদ্যে স্বয়ম্ভর হয়ে গেছি। এটা কথার কথা, অনেকটা রাজনৈতিক, এর কোনো ভিত্তি নেই। যেখানে প্রতি বছর প্রায় ৬০-৭০ লাখ টন গম, ১০-১৫ লাখ টন চাল আমদানি করতে হয় এবং অন্যান্য ফসল আমদানি করতে হয়, সেখানে খাদ্যে স্বয়ম্ভর কথাটি খুব শোভা পায় না।

 

 

 

এখন আমরা যে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি, এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি। সবচেয়ে বড় সমস্যা উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি। গত নভেম্বরে ছিল ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ, যা মার্চে নেমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি কেন বৃদ্ধি হয়েছিল? বন্যা হয়েছিল। এর আগে খরা হয়েছিল। ফলে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বিঘ্নিত হয়েছিল। এ কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল। অপরদিকে গত কয়েক মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ও মোট মূল্যস্ফীতি কমেছে। এটা কেন হয়েছে? কারণ রবিশস্যের উৎপাদন ভালো হয়েছে। শাক-সবজি, আলু ও পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছে। একদিকে দাম কমে গেছে।

 

 

 

সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি এসেছে। মূল্যস্ফীতি কমেছে। কিন্তু দারুণ অস্বস্তিতে ভুগেছে আমাদের কৃষক। যেখানে আলুর উৎপাদন ১৭-১৮ টাকা, সেখানে কৃষক খামার প্রান্তে বিক্রি করেছে ১০-১২ টাকায়। উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির জন্য আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ বছর প্রায় ২৩ শতাংশ পর্যন্ত দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাবে। নিম্ন দারিদ্র্যে আরো প্রায় ৩০ লাখ নতুন মুখ যুক্ত হবে। এ উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও প্রতি বছর আমদানিনির্ভরতা বাড়ছে। এর মুক্তির একমাত্র পথ উৎপাদন বাড়ানো। উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া আমাদের স্বয়ম্ভরতা অর্জন করা সম্ভব নয় এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতিও দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। গত ১০ মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে ছিল। আমাদের মতো গরিব দেশে যেখানে আয় কম, যেখানে দারিদ্র্য বেশি, যেখানে মানুষের কর্মসংস্থান কম, যেখানে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কম, সেখানে ৯-১০ শতাংশ খাদ্য মূল্যস্ফীতি খুবই বেশি। যেকোনোভাবেই হোক খাদ্য মূল্যস্ফীতি ২-৩ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত। ফলে কৃষির উৎপাদন বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

 

 

 

সাম্প্রতিককালে কৃষির একটি বড় সমস্যা হচ্ছে উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু প্রবৃদ্ধির হার ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে কৃষিতে বিনিয়োগ কমছে। কৃষিতে সরকারি বরাদ্দ টাকার অংকে বাড়ছে কিন্তু সেটি অপেক্ষাকৃত কমে যাচ্ছে। গত ২০১১-১২ অর্থবছরে মোট বাজেটে কৃষির শরিকানা ছিল ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য মন্ত্রণালয়, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়—এ পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের ব্যয়কে একসঙ্গে যোগ করা হয় এবং উৎপাদন যখন দেখায় তখন সরকার একসঙ্গে দেখায়। এটি কেবল বাজেটের কথা। এখন ভর্তুকির কথা বলা দরকার। গত ২০১১-১২ অর্থবছরে ভর্তুকি ছিল মোট বাজেটের প্রায় ৫ শতাংশ। সেটি এখন ২ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

 

 

 

এ বছর ভর্তুকির জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হয়েছিল, সেটি এখন ১৭ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। চিরায়তভাবে আমাদের উৎপাদনশীল খাত হচ্ছে কৃষি খাত। অতীতে অর্থনীতিবিদরা বলতেন, কৃষি খাতে বেশি করে বিনিয়োগ করতে হবে। কৃষিপণ্যের দাম বেশি করে ধরে দাও। কৃষক বেশি লাভ করবে ও উপকৃত হবে। উৎপাদন বাড়বে ও টেকসই হবে। খাদ্যনিরাপত্তা অর্জিত হবে এবং কৃষির উদ্বৃত্ত শিল্পে যাবে। সেখানে শিল্প গড়ে উঠবে। তার সঙ্গে সেবা খাত গড়ে উঠবে। আজকেও এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। কাজেই খাদ্য সমস্যার সমাধান করতে হয় এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা অর্জন করতে হয় তাহলে কৃষির উৎপাদন ৩ দশমিক ২ শতাংশের পরিবর্তে ৪-৫ শতাংশ হারে বাড়াতে হবে। এর জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

 
 
 

বর্তমানে আমাদের কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে। গত ৩৫ বছরে কৃষিজমি ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হারে হ্রাস পাচ্ছে। দিনের পর দিন হ্রাস পাওয়ার মাত্রা কমছে। কারণ মানুষ সচেতন হচ্ছে। তবে এখনো যে হারে কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে, সেটিও উদ্বেগজনক। বলা হয়, আইন আছে। আইনের বাস্তবায়ন নেই। আইনকে খুব শক্তভাবে প্রয়োগ করা উচিত।

 
 
 

আরেকটি কৃষিতে যে কাঠামোগত পরিবর্তন এসেছে, সেটি হলো বড় ও মাঝারি খামারগুলো ধীরে ধীরে ছোট হয়ে যাচ্ছে। আর ছোট ও প্রান্তিক খামারগুলো টিকে আছে। যখন আধুনিকায়ন হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছোট খামারগুলো চলে যায় এবং বড় খামারগুলোর আকার আরো বৃদ্ধি পায়। কৃষকের সংখ্যা যেখানে ৮০ বা ৮৫ শতাংশে ছিল, সেটি দুই কিংবা দেড় শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু বাংলাদেশে সেটি হচ্ছে না। ছোট ও প্রান্তিক কৃষকের সংখ্যা বাড়ছে। এখন ছোট ও প্রান্তিক কৃষক ৯২ শতাংশ। বড় কৃষকের সংখ্যা কমছে এবং তাদের আওতাধীন জমির পরিমাণ কমছে। এখন ছোট ও প্রান্তিক কৃষকের আওতাধীন জমির পরিমাণ প্রায় ৭০ শতাংশ। কাজেই আধুনিক চাষাবাদ ও যান্ত্রিকীকরণ এক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। কিন্তু মাঝখানে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে আমাদের তরুণ সমাজের অনেক সদস্য। যারা লেখাপড়া করেছে তারা গ্রামে গেছে এবং আধুনিক চাষাবাদ করছে। তারা ১০০-১৫০ বিঘা জমি লিজ নিচ্ছে এবং চাষাবাদ করছে। ভালো মুনাফা অর্জন করছে। এটিকে কীভাবে আমরা উৎসাহিত করতে পারি সেটি বিবেচনার বিষয়। কারণ কো-অপারেটিভের কথা আমরা বলি কিন্তু সাকসেসফুল কো-অপারেটিভ পরিচালনা করে দেখিনি বা করতে পারছি না।

 

 

একটি সমস্যা হচ্ছে কৃষি উপকরণ, যার বেশির ভাগ বিদেশের ওপর নির্ভরশীল ও আমদানি নির্ভরশীল। ইউরিয়া সারের ৭০-৮০ শতাংশ দেশে উৎপাদন হতো। এখন ৭০-৮০ ভাগ আমদানি করতে হয়। মাত্র ২০ শতাংশ দেশে উৎপাদন হয়। সার কোম্পানির অধিকাংশই বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা যান্ত্রিকীকরণের কথা বলছি। এ যান্ত্রিকীকরণের বেশির ভাগ মেশিন আমদানি করতে হয়। দেশে অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, দেশেই সেগুলো করতে পারে। সরকার এক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। বিদেশী যেসব কোম্পানি রয়েছে, তাদের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাজ করা যেতে পারে। এসব আমাদের বিবেচনার বিষয়।

 

 

 

আমাদের বাজার নিয়ে অনেক কথা আছে। কখনো দাম কমে, কখনো দাম বাড়ে। তখন আমরা বলি অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি। অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করবে সেটাই স্বাভাবিক। সরকার সেই কারসাজি নিয়ন্ত্রণ করবে। তেলের বাজারের কথা আমরা প্রায়ই বলি। তেলের বাজার একটি অলিগোপলিস্টিক বাজার। কিন্তু যখন তারা দাম বাড়ায় তখন তারা এক হয়ে যায় এবং মনোপলিস্টিক মুনাফা অর্জন করে। চালের বাজারে অসংখ্য ব্যবসায়ী আছেন। কিন্তু যাদের করপোরেট হাউজ আছে তাদের দোষ দেয়। আবার বড় বড় চাতালের মালিক যারা আছেন তাদের দোষ দেন ছোট ব্যবসায়ীরা। যখন লাভ নিংড়ে নিয়ে যায় তখন তারা সবাই এক হয়ে যায়। এর কারণ কী? কারণ হলো আমাদের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে ব্যবসায়ী সমাজ। আমাদের বেসরকারি খাতে চালের গুদামের ধারণক্ষমতা এক কোটি টন। আবার সরকারি ক্ষেত্রে ধারণক্ষমতা আছে মাত্র ২০-২২ লাখ টন। পাকিস্তান আমলে আমাদের চালের ধারণক্ষমতা ছিল ১৫-১৬ লাখ টন।

 

 

স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ধারণক্ষমতা মাত্র ৫-৬ লাখ টন বাড়িয়েছি। খুব দ্রুতই ধারণক্ষমতা ৪০-৫০ লাখ টন হওয়া উচিত। সরকার যদি বাজারে পর্যাপ্ত হস্তক্ষেপ না করতে পারে তাহলে ছোটখাটো হস্তক্ষেপ দিয়ে বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না এবং বাজারে অন্যদের ভূমিকাকে দমানো যাবে না। কাজেই বাজারে যদি হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে বড় করেই হস্তক্ষেপ করতে হবে। তার জন্য প্রচুর মজুদ রাখা দরকার। আমাদের যে উৎপাদন হয় কমপক্ষে তার ১০ শতাংশ সরকারিভাবে মজুদ রাখা দরকার। 

 

 

এ বছর আমরা ধান-চাল সংগ্রহ করছি। এর মধ্যে সাড়ে তিন লাখ টন ধান সংগ্রহ করেছি। অন্যদিকে ১৪ লাখ টন চাল সংগ্রহ করেছি। ধান সংগ্রহ করি কৃষকদের কাছ থেকে এবং চাল সংগ্রহ করি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। অর্থাৎ অন্যভাবে বলা যায়, আমরা মোটামুটি ব্যবসায়ীদের ওপরই নির্ভরশীল। আমরা বারবার বলেছি বেশি করে ধান সংগ্রহের কথা। এ বছর বোরো মৌসুমে মোট উৎপাদন হয়েছে প্রায় তিন কোটি টন। ১০ শতাংশ করে হলে আমাদের ৩০ লাখ টন ধান সংগ্রহ করা দরকার। সেখানে আমরা সাড়ে তিন লাখ টন ধান সংগ্রহ করেছি। অথচ ১০ বছর আগে সাত লাখ টন ধান সংগ্রহ করা হতো। ধীরে ধীরে ধান সংগ্রহ কমিয়ে দিয়েছি। কারণ ধান সংগ্রহ করতে যেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়, তার সিকিভাগও অর্জন করা সম্ভব হয় না। কেন সম্ভব হয় না? কারণ কৃষকরা তার সারা দিনের কর্মসংস্থান ফেলে দিয়ে সরকারি গুদামে ধান দিতে চায় না। কাজেই ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হয়, তাহলে কৃষকের দোরগোড়া ও খামার প্রান্ত থেকে ধান সংগ্রহ করতে হবে। যেমনিভাবে আমাদের ব্যবসায়ীরা, তাদের প্রতিনিধিরা ও এজেন্টরা ধান সংগ্রহ করেন, তেমনিভাবে সরকারের এজেন্ট ও ইন্সপেক্টরদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে খামার প্রান্ত থেকে ধান সংগ্রহ করতে হবে।

 

 

আমরা বলেছি, এগ্রিকালচার প্রাইস কমিশন করা দরকার। সেক্ষেত্রে প্রাইস কমিশন গঠন করা হয়নি। বিগত সরকার একটি প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করেছে, যার প্রভাব খুবই কম। তারা নিজেরাই স্বীকার করে যে আমরা তো শুধু প্রতিযোগিতা করতে চাই। কিন্তু প্রতিযোগিতা তো বাজারে নেই। আমরা বলেছি একটি এগ্রিকালচার কমিশন গঠন করা দরকার। কৃষি খাতে পুনর্মূল্যায়ন বা রিভিউ করা দরকার। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় স্বাধীনতার পর বৃহৎ আকারে একটি এগ্রিকালচার রিভিউ কমিশন গঠন করা হয়েছিল। দুই ভলিউমে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল, যা দেশের বিভিন্ন গ্রন্থাগারে রয়েছে।

 

 

 নব্বইয়ের দশকে অধ্যাপক রেহমান সোবহান প্ল্যানিং কমিশনের উপদেষ্টা হয়েছিলেন, তখন তার অধীনে একটি রিভিউ হয়েছিল, অনেকগুলো কমিশন হয়েছিল এবং সেখানে কৃষিও ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে ১১টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। কৃষি একটি বড় খাত এবং এর একটি বড় রিভিউ হওয়া দরকার। এর জন্য একটি কৃষি কমিশন গঠন হওয়া জরুরি। আজকালের মধ্যে কমিশন গঠন সম্ভব না হলেও দুই-একদিন পরও করা যেতে পারে। এ সরকারের সময়ে এর সুপারিশ বাস্তবায়ন করা না গেলেও পরবর্তী নির্বাচিত সরকারে যারা আসবে, তাদের টেবিলে সেটি রেখে দেয়া যাবে। তারা সেটি বিবেচনা করবে।

 

 

কৃষি বৈচিত্রীকরণ নিয়েও কথা বলা দরকার। ৪০ বছর আগে শস্য খাতই ছিল সবচেয়ে বড় খাত। কৃষি জিডিপির ৭৫ শতাংশ আসত শস্য খাত থেকে। বর্তমানে সেই দিনটি নেই। বর্তমানে ৫০ শতাংশ আসছে শস্য খাত থেকে এবং আর ৫০ শতাংশ আসছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং বনসম্পদ থেকে। কাজেই আজকের যে উন্নয়ন, বাজেট বরাদ্দ ও ভর্তুকি, এটি সমানভাবে সবার জন্য ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিতরণ করা উচিত।

 

 

ড. জাহাঙ্গীর আলম: সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট