কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

মধ্যপ্রাচ্য সংকট : সংকুচিত অর্থনীতি

গোবিন্দ শীল [সূত্র : দেশ রূপান্তর, ১৮ জুন ২০২৫]

মধ্যপ্রাচ্য সংকট : সংকুচিত অর্থনীতি

করোনা মহামারীর পর বিশ্বঅর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবার সুযোগ পাওয়ার আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অতি সম্প্রতি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘর্ষ বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মনে করছে। পাল্টাপাল্টি আক্রমণ যে চলতে থাকবে, সেই আশঙ্কা থেকে মনে করা হচ্ছে, কানাডায় জি-৭ দেশগুলোর যে বৈঠক শুরু হয়েছে, তাতে মধ্যপ্রাচ্য সংকট একটি বিশেষ স্থান অধিকার করবে। শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল কর্র্তৃক তেহরানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ হামলার পরই বিশ্ববাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রধান অশোধিত ব্রেন্ট তেলের মূল্য ১০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৭৫ ডলারে দাঁড়ায়। তবে, ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম এখনো এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১০ ভাগ কম রয়েছে। তিন বছর আগে ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর ব্রেন্টের সর্বোচ্চ মূল্য ১৩০ ডলারে পৌঁছেছিল। তেলের মূল্যের সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস ও তরল গ্যাসের দামও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে এবং অন্যান্য দেশ এই সংঘাতে কোনোভাবে জড়িয়ে পড়লে, তা পৃথিবী জুড়ে মন্দা ডেকে আনতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

 

 

কোনো কারণে তেলের সরবরাহ কমে গেলে তা ওপেকপ্লাস সদস্য দেশগুলোর মধ্য থেকেকেবল সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতই পারে ঐ ঘাটতি পূরণ করতে, বার্তা সংস্থা রায়টার্সকে এমনটাই বলেছেন জ্বালানি তেল বিষয়ক একজন শীর্ষ কর্মকর্তা (লন্ডন)। অনেকে আশঙ্কা করছেন, ইরান যদি তার দক্ষিণ উপকূলের জলপথ হরমুজ প্রণালিতে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়, তাহলে জ্বালানি তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেলের পরিবহন ঘটে এই প্রণালি ব্যবহার করে। সমীর পুরী, প্রাক্তন কূটনীতিক (যুক্তরাজ্য), যিনি একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক এবং সিঙ্গাপুরে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (এশিয়া)’র জন্য কাজ করেছেন, তিনি ‘ওয়েস্টলেসনেস’ নামে একটি বই লিখেছেন। বইটিতে তিনি বলেছেন, বিশ্বের অর্থনৈতিক ভারসাম্য যে এশিয়ার দিকে আসছে, তা স্পষ্ট হচ্ছে চীন ও ভারতের উত্থানের মাধ্যমে। এমনকি ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোও ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত। তিনি এও বলছেন, বিশ্বের পুনঃভারসাম্যকরণ ‘এশিয়ার উত্থানের’ মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সৌদি আরব, তুরস্ক এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো নিজেদের উত্থান জানান দিতে বৈশ্বিক বিষয়ে যে কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন দেখিয়েছে, তা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।

 

 

নানা কারণে ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বের অর্থনীতি : গত শুক্রবার ইরানে ইসরায়েলের আক্রমণের মুখে সেরা আর্থিক বাজারগুলোর লগ্নিকারীরা তাদের বিনিয়োগ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আর্থিক বাজারের কপালে যে ভাঁজ পড়েছে, তা থেকে বোঝা যায় যে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন সংঘাত বিশ্বের জন্য ঝঃধমভষধঃরড়হ বা স্থবির মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাষ দিচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, কমবে কর্মসংস্থান আর বৈশ্বিক অর্থনীতি সংকুচিত হবে, তা বলাই বাহুল্য। এই বিষয়টি এমন এক ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে হাজির হলো, যখন বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন টালমাটাল পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। কেননা ট্রাম্প প্রশাসন কর্র্তৃক অর্পিত হয়েছে নানাবিধ উচ্চশুল্ক যা পরে অন্যান্য দেশও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে নিজেদের অর্থনীতিকে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছে। বিবিসির সাংবাদিক লুসি হুকার এক প্রতিবেদনে বলেছেন, যে কোনো জ্বালানির দাম কত বাড়বে এবং এর বৃহত্তর প্রভাব কী হবে, তা নির্ভর করছে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত কোন দিকে মোড় নেয়, তার ওপর। অ্যাসেট ম্যানেজার অ্যালিয়াঞ্জের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মোহাম্মদ এল-এরিয়ানের বরাত দিয়ে লুসি লিখেছেন, ‘এটি একটি খারাপ সময়ে বিশ্বঅর্থনীতির জন্য একটি খারাপ ধাক্কা।’ এরিয়ান মনে করেন, ‘আপনি যেভাবেই দেখুন না কেন, এটি স্বল্পমেয়াদে নেতিবাচক, এটি দীর্ঘমেয়াদেও নেতিবাচক।’

 

 

বাংলাদেশের অবস্থা কী হবে : পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গগনচুম্বী দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২৫-২৬ সালে মোটামুটি ৩.৫ শতাংশ হতে পারে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। এ সময় জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেলে, তা হবে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। তেলের দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ কিছু নেতিবাচক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। স্বভাবতই জ্বালানি তেলের আমদানি খরচ বাড়বে, যা কিনা শিল্পপণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেবে। এতে করে মুদ্রাস্ফীতি, যা প্রায় ৯ শতাংশ রয়েছে, তা আরও বাড়বে। যুদ্ধের কারণে ডলার ও স্বর্ণকে উন্নত দেশের মানুষ বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ মনে করছেন। ফলে, সেগুলোর দাম ঊর্ধ্বমুখী হবে। ডলারের দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয়ও বাড়বে। পোশাক শিল্পের মালিকরা মনে করছেন, আমেরিকা ও ইউরোপেও তেলের উচ্চমূল্য তাদের নিজেদের দেশের মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। এতে করে মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দিয়ে অহেতুক পোশাক কেনা থেকে বিরত থাকবে। ফলে মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতে কাজ করেন আনুমানিক ৪০ লাখ শ্রমিক। রপ্তানি সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয় ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৬৪ কোটি ১ লাখ ডলারে। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিলে আয় ছিল ২ হাজার ৯৬৭ কোটি ১৯ লাখ ডলার।

 

 

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন : মুস্তাফিজুর রহমান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর বিশিষ্ট ফেলো একটি শীর্ষ ইংরেজি দৈনিককে বলেছেন, ইরানের ওপর ইসরায়েলি আক্রমণ তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে কি না তা দেখার বিষয়। ‘আমাদের দেখতে হবে ইরানের প্রতিশোধের ধরন এবং ইরানি হামলার পর ইসরায়েল কী প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেই সঙ্গে অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সাড়া দেয়। এই সমস্ত কিছু একত্র করলে, পরিস্থিতি যে কোনো দিকেই যেতে পারে, উত্তেজনা বৃদ্ধি বা হ্রাস পেতে পারে।’  তিনি বলেন, ‘জ্বালানি আমদানি নির্ভর দেশ হিসেবে, তেলের দাম বৃদ্ধি আমাদের দেশের জন্য কষ্টের কারণ হবে। তার ওপরে, তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যদি এর প্রভাব অব্যাহত থাকে তবে দেশের বাণিজ্যিক ভারসাম্য এবং চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০২৪/২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৩.৩ শতাংশে নেমে এসেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে, যা মহামারী-পূর্ব গড়ের চেয়ে কম। এই হ্রাস মূলত ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রতিকূল প্রভাব প্রতিফলিত করেছে। নানা বাড়ন্ত অনিশ্চয়তা এবং উৎপাদনের উপকরণের ব্যয় বৃদ্ধি বেসরকারি বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করেছে। অন্যদিকে মূলধনী পণ্য আমদানিতে ধীরগতির কারণে শিল্প উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি ২০২৫/২৬ অর্থবছরে ৪.৯ শতাংশ এবং ২০২৬/২৭ অর্থবছরে ৫.৭ শতাংশে বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে, চলমান মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে তা কমে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

 

 

বাড়ছে সামরিক ব্যয়, কমছে দান : স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (ঝওচজও) অনুসারে, ২০২৪ সালে, বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় বেড়ে ২.৭১৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৯.৪ শতাংশ বেশি। এই বৃদ্ধি ‘কোল্ড ওয়ার’ সমাপ্তির পর বছর-ওয়ারি হিসেবে এই প্রথম সবচেয়ে বেশি বাড়ল। বলাবাহুল্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক ব্যয়কারী দেশ, তার পরেই রয়েছে চীন এবং রাশিয়া।  ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপন্স (ওঈঅঘ) এর এক হিসাব অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৪ সালে পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য বিশ্বব্যাপী ব্যয় ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পরিতাপের বিষয় হলো, সারা পৃথিবীতে যখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, সেই সময় দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ না বেড়ে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, জি-৭ দেশগুলো উন্নয়নশীল বা গরিব দেশের জন্য যে সাহায্য বরাদ্দ করে, তার চেয়ে অস্ত্রের পেছনে তারা ৬২ গুণ বেশি ব্যয় করে। এদিকে, বিশ্বব্যাংকের মতে, আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা (দৈনিক ১.৯০ মার্কিন ডলারের নিচে আয়) অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে। আর, বাংলাদেশে ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। তাদের মধ্যে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের অবস্থা গুরুতর। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে (২০২৪) এই চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৩ সালে, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী দাতব্য প্রতিষ্ঠান থেকে দান পেয়েছে আনুমানিক ৫৫৭.১৬ বিলিয়ন ডলার। এটি ২০২২ সাল থেকে প্রায় ২ শতাংশ বেশি। আরেক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী দাতব্য দানের বাজার ২০২৪ সালে প্রায় ৫৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় বেশি। তবে, মার্কিন গ্যালাপ (একটি আমেরিকান বহুজাতিক বিশ্লেষণ এবং উপদেষ্টা সংস্থা) উল্লেখ করেছে যে, টাকা দেওয়ার লোকদের সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় বর্তমানে ৩৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এই ৫৩০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে উত্তর আমেরিকা অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা থেকে এসেছে মোট আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ বা প্রায় ২১২ বিলিয়ন ডলার। এদিকে, ৭৯টি দেশে পরিচালিত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭৮ কোটি মানুষ প্রতি রাতে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমোতে যান।

 

 

স্টাগফ্লেশনের মূল চরিত্র : অর্থনীতিতে উচ্চ-মুদ্রাস্ফীতি হবে। এ সময়ে পণ্য ও পরিষেবার দাম দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটি জনমানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস করে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দেয়। স্টাগফ্লেশন অনেক বেশি বেকারত্ব বাড়ায়। সাধারণ মুদ্রাস্ফীতির সময়কালের (যা সাধারণত কম বেকারত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত) বিপরীতে, স্থবিরতা বা স্টাগফ্লেশন ব্যাপক বেকারত্ব সৃষ্টি করে। শ্রমবাজারে শ্রমিকের চাহিদা কমে যায়। এ সময় ধীর বা নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি মন্থর বা এমনকি সংকুচিত হতে থাকে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ কম করে এবং উৎপাদনশীলতা স্থবির হয়ে পড়ে। শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি হ্রাস পায়, মুদ্রাস্ফীতি আয় থেকে লাভ কমিয়ে দেয়। এমনকি যদি নামমাত্র মজুরি একই থাকে বা সামান্য বৃদ্ধি পায়, তবুও জীবনযাত্রার ব্যয় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আমরা জানি, ১৯৭০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থবির মুদ্রাস্ফীতির কারণ ছিল আচমকা তেলের দাম বেড়ে যাওয়া, উচ্চ-মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের সঙ্গে ধীর প্রবৃদ্ধি।

লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ও অর্থনীতি বিশ্লেষক