কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে

[সূত্র : কালের কণ্ঠ, ১৪ জুন ২০২৫]

নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে

আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গতকাল শুক্রবার লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে উভয় পক্ষ এ বিষয়ে প্রায় একমত। সৌহার্দ্যপূর্ণ এই বৈঠকের ফলে নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনীতিতে যে সংশয়, সংকট দেখা দিয়েছিল তার অবসান হচ্ছে নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেবলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা। যদিও রোজার আগে নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা এবং সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন।

 


কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন কমিশনের আরো আগে নির্বাচন করার প্রস্তুতিও রয়েছে। সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতিও অসম্ভব নয়।
লন্ডনের ওই বৈঠকে কী ফলাফল আসতে পারে তা জানার অপেক্ষায় ছিল দেশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রত্যাশাও ছিল ইতিবাচক।

 


এ বৈঠকে বিএনপি ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি থেকে সরে আসে এবং প্রধান উপদেষ্টাও রোজার পর এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা থেকে সরে আসতে সম্মত হন। সে ক্ষেত্রে আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কারণ রোজা শুরু হতে পারে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে।
বৈঠকের ফলাফল দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বস্তি দিলেও যে কয়েকটি দল এপ্রিলে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানায়নি, তারা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

 


 
সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দেড় ঘণ্টার বৈঠক : গতকাল লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা) বৈঠকটি শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টা) বৈঠক শেষ হয়। বৈঠক শেষে তারেক রহমান ডরচেস্টার হোটেল ত্যাগ করেন। এ সময় তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠককে ঐতিহাসিক বলে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ড. ইউনূস জাতিকে দিকনির্দেশনা দেবেন বলেও জানান তিনি।

 

 

গাড়িতে ওঠার আগে তিনি হোটেলের সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা নেতাকর্মীদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। তার আগে বাংলাদেশ সময় ১টা ৫০ মিনিটে গাড়িযোগে হোটেলে পৌঁছেন তারেক রহমান। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের কর্মকর্তারা। বৈঠক শুরুর আগে কুশল বিনিময়ের সময় তারেক রহমান তাঁর মা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ‘সালাম’ পৌঁছে দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে এবং তিনি কেমন আছেন তা জানতে চান।

 

জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘চলছে, টেনেটুনে চলছে।’ তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে একটি কলম ও দুটি বই উপহার দেন। একটি বই হলো পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গের ‘নো ওয়ান ইস টু স্মল টু মেক আ ডিফারেন্স’। আরেকটি বই ‘নেচার ম্যাটারস’। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির এবং প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম। পরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের একান্ত বৈঠক হয়।

 


যৌথ বিবৃতি : বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টার দিকে উভয় পক্ষের প্রতিনিধিরা প্রেস ব্রিফিং করে যৌথ বিবৃতি দেন। এতে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে খলিলুর রহমান, বিএনপির পক্ষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। প্রেস ব্রিফিংটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

 

 

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন জনাব তারেক রহমান লন্ডনে সফররত প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে তাঁদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জনাব তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াও মনে করেন ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন যে তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে। জনাব তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার এই অবস্থানকে স্বাগত জানান এবং দলের পক্ষ থেকে তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধান উপদেষ্টাও জনাব তারেক রহমানকে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য ধন্যবাদ জানান।’

 

 

প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘জুলাই সনদ’ ও সংস্কার নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এসব বিষয়ে অলরেডি আলোচনা চলছে। আমাদের সিদ্ধান্ত আছে যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা জুলাই সনদ ও সংস্কার দুটিই করব। আমরা নিশ্চিত, খুব কম সময়ের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’

 

নির্বাচনের সঠিক তারিখ ঘোষণা সম্পর্কে খলিলুর রহমান বলেন, এতে কোনো সমস্যা নেই। নির্বাচন কমিশন শিগগিরই একটি তারিখ ঘোষণা করবে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই কাজটি করব। শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরেও এই কাজ অব্যাহত থাকবে।’

 

 

তিনি আরো বলেন, সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে সেগুলো সংস্কার হবে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের আগেও সংস্কার হবে, পরেও হবে।

বৈঠকে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি আলোচনার বিষয় বলে মনে করি না। উনি সময়মতো দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন।’

 

 

শেখ হাসিনাসহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচার শেষ না করেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, যৌথ বিবৃতিতেই এর উত্তর রয়েছে। এতে পর্যাপ্ত অগ্রগতির কথা বলা হয়েছে।

 

 

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সংস্কারের আগে নির্বাচন চায় না জানালে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে এখানে আলোচনার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।’

 

জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি নির্বাচন-পরবর্তী সিদ্ধান্তের বিষয়। যাঁরা নির্বাচিত হবেন তাঁদের সিদ্ধান্তের বিষয়।

 

লন্ডনের ওই বৈঠক সম্পর্কে গতকাল ঢাকার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকের আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে প্রধান ছিল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেখানে তারেক রহমানের প্রস্তাব ছিল, প্রধান উপদেষ্টা আগামী এপ্রিলে নির্বাচনের যে সময় ঘোষণা করেছেন সেটি উপযুক্ত সময় ধনয়। ফলে সময়টিকে তিনি আরো এগিয়ে নিয়ে আসতে বলেছেন এবং জাতি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে লক্ষ করেছে প্রধান উপদেষ্টা এতে সম্মত হয়েছেন। তিনি ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেছেন।

 

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বিভিন্ন দলের প্রতিক্রিয়া : গতকালের ওই বৈঠক সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৈঠকের যৌথ বিবৃতি থেকে এই ইঙ্গিত স্পষ্ট যে রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে অন্য দলগুলোর মতামত জানার প্রয়োজন হতে পারে। তা না হলে প্রশ্ন উঠতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা এবং সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে বলা যায় যে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত। কারণ নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে। রোজার আগে সংস্কার ও বিচারের পর্যাপ্ত অগ্রগতিও অসম্ভব নয়।’

 

 

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ বা সময়টা নিয়েই তো সমস্যাটা ছিল। সেটা নিয়ে তো সমাধান হয়ে গেল। এখন সরকার পক্ষ বলছে যে বিচার, সংস্কার, জুলাই ঘোষণাপত্র করা হবে। সেটা করুক। রাজনৈতিক দলগুলো তো বলেছে যে সহযোগিতা করবে। দৃশ্যত যা দেখা যাচ্ছে তা ভালো হয়েছে। আর এর ভেতরে কোনো কিছু থাকার সুযোগ দেখছি না। আর সংস্কার একেকজন একেক রকমে চান। কিন্তু দুঃখজনক হলো সংস্কার নিয়ে গত ৯ মাসেও অগ্রগতি নেই। সংস্কার নিয়ে ইউনূস সাহেব বেশি আর কমের কথা বলেছিলেন, এটা আর কোনো বিষয় থাকল না। আর সংস্কার করছি কেন? ভালো নির্বাচনের জন্যই তো।’

 

 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা কাজ করছিল। বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দল এ বছর ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। প্রধান উপদেষ্টার এপ্রিলে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা রাজনীতিতে একটি চাপা উত্তেজনা তৈরি করেছিল। আজকের (শুক্রবার) বৈঠকে জনাব তারেক রহমান ডিসেম্বর থেকে সরে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টাও শর্ত সাপেক্ষে তা বিবেচনার কথা বলেছেন। নিজস্ব অবস্থানকে যৌক্তিক কারণে পুনর্বিবেচনা করার এই ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

 

 

বিবৃতিতে এ কথাও বলা হয় যে তারেক রহমান দেশের রাজনীতির একক প্রতিনিধিত্ব করেন না। তাঁদের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ হলেও আক্ষরিক অর্থে এটা দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে একজন রাজনৈতিক নেতার সংলাপ। বিএনপির মতামতের ভিত্তিতে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়াও শোভনীয় নয়।

 

 

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকার এরই মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ঘোষণার যে তারিখ দিয়েছে সেই জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার এবং বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি হলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই। তবে নির্বাচনের আগে অবশ্যই জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।’

 

 

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের সময় এগিয়ে নিয়ে আসা এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে বিচার ও সংস্কারের কাজে দ্রুতই পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করার যে আলোচনা হয়েছে, সেটাকে আমরা ইতিবাচক বলে মনে করি। এই বৈঠকের ফলে নির্বাচনের পাশাপাশি সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির কাজটি এখন যথাযথ মনোযোগ পাবে বলে আমরা আশা করি।’

 

 

১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, এই বৈঠক সব আশঙ্কার অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে যে ফলপ্রসূ ঐকমত্য হয়েছে, তা অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশের মানুষের জন্য এনেছে স্বস্তির বার্তা, আশার আলো।

 

 

তাঁরা বলেন, ‘সমগ্র বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সংযোগ ঘটিয়ে এপ্রিল থেকে সরে এসে নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে নির্বাচন আয়োজনে ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।’ নেতারা আরো বলেন, আজকের এই বৈঠক যেন শুধু কথার কথা না থাকে, সংস্কার ও বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের এই সৌহার্দ্য ও সহমতের মধ্য দিয়ে জয় হবে গণতন্ত্রের, জয় হবে বাংলাদেশের, জয় হবে জনগণের।

 

 

গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালে রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে বলে প্রধান উপদেষ্টা যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন আমরা তা স্বাগত জানাই।’

 

 

এ ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির মধ্যে মৌলিক সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হওয়া প্রয়োজন বলেও যে অভিমত তিনি ব্যক্ত করেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই  ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা দূর হবে।