কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

অপারেশন সিঁদুর সফলতা-ব্যর্থতা

এটি স্পষ্ট যে, চীন অপারেশন সিঁদুরের আগে এবং সময় পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল। স্যাটেলাইট অ্যাক্সেস, রাডার তথ্য এবং বৈদ্যুতিক যুদ্ধের তথ্যাদি রিয়েল টাইমে পাকিস্তান পেয়েছে। তাই ভারত আক্রমণ চালানোর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তান পাল্টা আঘাত করতে পেরেছে। মো: বজলুর রশীদ [সূত্র : নয়া দিগন্ত, ১ জুন ২০২৫]

অপারেশন সিঁদুর সফলতা-ব্যর্থতা

অপারেশন সিঁদুরের পর বেশ কিছুদিন পার হলো। পক্ষে-বিপক্ষে বিবৃতির জোয়ার এবং গুজব চার দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। যেমন- পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও সোস্যাল মিডিয়া জানিয়েছে, তারা ভারতের উন্নতমানের ছয়টি বিমান এবং এস-৪০০ ধ্বংস করেছে। ভারতের মিডিয়া প্রচার করেছে, তারা পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে, যার ফলে সেখানে ভূমিকম্প হয়েছে এবং তেজস্ক্রিয়তার পারমাণবিক রূপান্তর শুরু হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, জঙ্গিরা হামলা চালালে কূটনীতি বা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে না, অলআউট যুদ্ধ হবে। তাই ভারত দাবি করে, লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মহম্মদ, আইএসআই এবং পাক সেনাদের পরিকল্পনা বদলাতে হবে। নতুবা মোদির ভাষায়, ‘গোলি মার দেঙ্গা’।

 

 

এই যুদ্ধে চীনের সহায়তায় ইলেকট্রনিক ও আকাশযুদ্ধে শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে পাকিস্তান। বলা হচ্ছে, ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাকিস্তানের আক্রমণে অকার্যকর হয়েছে এবং ব্রহ্মস ভাণ্ডারে সুনির্দিষ্ট আঘাত দিয়ে চমকে দিয়েছে। অপারেশন সিঁদুর যে ভারতের জন্য কূটনৈতিক জয় ছিল না, তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। ভারতের বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে; কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লেজার আইতে তার অক্ষমতা দেখা গেছে। নেতাদের বড় বড় আলাপ উন্মোচিত হয়েছে যা অনেক ক্ষেত্রে অবাক করার মতো। যেমন, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতে গিয়েছিল ভারত। তাহলে যুদ্ধবিরতি কেন হলো? কেউ যুদ্ধবিরতি চাইলেও ভারত তা মানল কেন? কেউ সেটি জানে না। সরকারের বিরুদ্ধে ভারতীয়রা এ জন্য ফুঁসছেন, বিক্ষোভ করছেন, বিচার চাইছেন।

 

 

আর এখন নেতারা বিশ্বকে এ কথা বলছেন, এটি লজ্জার যে- আমেরিকা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। না ভারত, না পাকিস্তান। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারত বিশ্বগুরুর স্তর থেকে পতিত হয়ে খাদে পড়েছে। মি. জয়শঙ্কর ট্রাম্পের অভিষেকের সময় সামনের সারিতে বসেছিলেন; কিন্তু যখন সময় এলো তখন তিনি পাকিস্তানকে ঠেলে দিতে পারলেন না। মিথ্যা কূটনৈতিক কথা চালিয়ে কাশ্মির ইস্যুকে আন্তর্জাতিকীকরণ করার চেষ্টা চালিয়েছে ভারত, হাজার বছরের পুরনো কাশ্মির সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। মধ্যস্থতার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। চেষ্টা করেছিলেন এরদোগান, চেষ্টা করেছে চীন। ভারত বলেছে, কোনো আলোচনা হবে না। তবে পাকিস্তান এটিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। ভারতকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে আলোচনার জন্য, ভারত গো ধরে রয়েছে। এবার পাকিস্তান-আফগানিস্তান-চীন আলোচনায় বসছে, এতে ক্ষিপ্ত হয়েছে মোদি সরকার। ভারতের যোগাযোগ, সদিচ্ছা, কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছিল অপারেশন সিঁদুর, পরে দেখা গেল তারাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল সব দিক থেকে। এমনকি পরম বন্ধুও নিস্পৃহ আচরণ করছে।

 

 

বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত, পাকিস্তানকে আইএমএফের ঋণ না দিতে লবিং করেছে। ভারতের সেই চাপও বিফলে গেছে। জয়শঙ্করের অর্জন শূন্য। পাকিস্তানকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে জয়শঙ্করের লেজার চোখ নীরব এবং অপারেশন সিঁদুর ভারতের পররাষ্ট্র নীতির অন্তঃসারশূন্যতা ও ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা ফাঁস করে দিয়েছে। ভারতের মহিলারা তামাশা করে বলেছেন, ‘সিন্দুর নেহি হ্যায় তো কেয়া হুয়া, কঙ্গন হে, আব কঙ্গন অপারেশন হোগা।’

 

 

অপারেশন সিঁদুরের সময় চীন, তুরস্ক ও আজারবাইজান পাকিস্তানকে সমর্থন করেছে, অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) বিবৃতি দিয়েছে, ভারতের অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভারতের মিডিয়া প্রচার করেছে, পহেলগাম হামলার পেছনে রয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান, জাতিসঙ্ঘ ও যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছে প্রমাণ। ভারত কোনো প্রমাণ আজো দিতে পারেনি। আর এই ভিত্তিহীন অভিযোগের কারণেই ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তান পেয়েছে চীনের লৌহ কঠিন বন্ধুত্ব, আরো পেয়েছে তুরস্ক, আজারবাইজান ও আফগানিস্তানের তালেবান মিত্রদের। ভারত কী পেলো? জাতিসঙ্ঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কথা না হয় তুললাম না। কোয়াডের কী হলো? আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া- এ ভারতের মিত্ররা কোথায় গেল? বহু বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী মোদি এসব দেশে প্রচুর ভ্রমণ করেছেন, নানা ফোরামে কথা বলে প্রচুর করতালি পেয়েছেন। তারা কেন প্রয়োজনের সময় কথা বলল না!

 

 

গদি মিডিয়ার হেডলাইন দেখে সবাই অবাক। ভারতীয়রা ভেবেছেন, পৃথিবী ভারতের পক্ষে আছে; কিন্তু পরখ করলে দেখা যাবে, পহেলগাম ঘটনার পর সব সেন্টিমেন্ট যা ভারতের পক্ষে ছিল, সেটি বদলে গেছে। ভারতীয় নেতারা ভেবেছে, বিশ্ব পাকিস্তানের নিন্দা করবে, একঘরে করে দেবে; কিন্তু যখনই ভারত সীমান্তের ওপারে আক্রমণ করল, তখনই সব সমর্থন উধাও।

 

 

অপারেশন সিঁদুরের পর মাত্র দু’টি দেশ ভারতের পক্ষে কথা বলেছিল। ইসরাইল ও ফ্রান্স, তাও শীর্ষ পর্যায়ে নয়। ভারতে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ৭ মে পোস্ট করে বলেন, ইসরাইল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ও ভারতের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ভারতকে সমর্থন করেন। তবে উভয়ই সংযম ও উত্তেজনা প্রশমনের কথা বলেছেন। যুদ্ধের সময় ইসরাইল ছাড়া কোনো দেশ বলেনি যে, তারা ভারতের সাথে আছে। পাকিস্তানের অন্তত তিনটি সহযোগী দেশ প্রকাশ্যে ভারতের বিরোধিতা করেছিল। চীন, তুরস্ক ও আজারবাইজান শুধু পাকিস্তানের প্রতি সমর্থনই ব্যক্ত করেনি, ভারতের সামরিক পদক্ষেপের নিন্দাও করেছে। জানা গেছে, চীনা ও তুর্কি বিশেষজ্ঞরা তাদের প্রদত্ত অস্ত্র পরিচালনার কাজে সহায়তার জন্য পাকিস্তানে এসেছেন। ভারতের পক্ষে ইসরাইল শুধু মৌখিক সমর্থন দিয়েছে।

 

 

এখন প্রশ্ন ওঠে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে ভারত একা কেন? বিদেশ সফর থেকে কী এসেছে? কেন পররাষ্ট্রনীতি আশানুরূপ কার্যকর হয়নি?

 

 

কূটনৈতিকভাবে ভারত অনেক কিছু করেছে, তার সুফল আসেনি কেন? ভারত জি-২০ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল, বহু বছর ধরেই দেখা গেছে, বিশ্বের বাজারে ভারতের ভাবমর্যাদা বেড়েছে। প্রচার করা হয়েছে, ভারতের পাসপোর্ট দেখে মানুষ শিউরে উঠছে, ভারত বিশ্বনেতা হয়ে উঠেছে, ভারত বিশ্বের বড় অবস্থানে এসেছে ইত্যাদি।

 

 

আজ যেন সব জোট ভেস্তে গেছে। সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে সাপোর্ট না পেলে কী লাভ? আজ ধর্মপ্রচারক বা অংশীদার কেউই ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। কূটনীতিতে একটি কথা প্রচলিত আছে, কূটনীতি এমন একটি শিল্প যেখানে আপনাকে বেশি কথা না বলে কম কথা বলতে হবে। যখন জোট গঠনের কথা বলা হয় তখন মিত্রদের সন্ধান করতে যেতে হয় কেননা, সবাই মিত্র চায়। যুক্তরাষ্ট্র যখন সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালায়, সেটি হুথি, ইরাক, লিবিয়া বা আফগানিস্তান যেখানেই হোক না কেন, তারা সবসময় ন্যাটো বা যুক্তরাজ্যের সাথে যায়। মধ্যপ্রাচ্যে আঘাত হানার জন্য আবার যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্সের সাথে যায়। রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে তখন বেলারুশ, ইরান ও উত্তর কোরিয়া জোটের সহায়তা নেয়। ভারত যদি জোট তৈরি না করে তবে অনেক ক্ষেত্রে, বিশেষত যুদ্ধে একা যাওয়া ঠিক কাজ নয়। জয়শঙ্কর এক বিবৃতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের অবস্থান উচ্চ নৈতিক ভিত্তিতে ন্যায়সঙ্গত করার চেষ্টা করেছিলেন... রাশিয়া স্পষ্টতই আগ্রাসী ছিল এবং অনেক দেশ এর সাথে একমত হয়েছিল। কিন্তু জয়শঙ্কর সাহেব কিভাবে নৈতিকতার দিক থেকে উঁচু জায়গা নিতে চান!

 

 

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন, বিশ্ব একই কাজ করেছিল। সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কেউ পক্ষ নেয়নি। তারা পাকিস্তানের জন্য করেছে, অন্যরা নিরপেক্ষতা বেছে নিয়েছে।

 

 

স্বাধীনতার সময় বিদেশী চাপ থেকে ভারত তার সার্বভৌমত্ব বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, সবাই ভেবেছিল ভারত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুবা সোভিয়েত ইউনিয়নে যোগ দেবে; কিন্তু ভারত যুগোস্লোভিয়া, মিসর, ঘানা ও ইন্দোনেশিয়ার সাথে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়ে ওঠে। সেই সময় টিটো, নেহরু, নাসির ও সুকর্নের মতো নেতারা বলেছিলেন, তারা কাউকে তাদের দিকে থাবা বাড়াতে দেবেন না। কোনো ব্লকের অংশ হবেন না। মোদি সরকার কি এই নীতি বহাল রেখেছে?

 

 

১০০ কোয়াডের মধ্যে ১০০টি কোয়াডকে চীন দৃশ্যত এশিয়ান ন্যাটো বলে অভিহিত করেছিল। আতঙ্কে কাঁপছিল চীনও। এই কোয়াডের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন জয়শঙ্কর। এটি স্পষ্ট যে, কোয়াডকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছিল, যতক্ষণ না চীনের সাথে আমেরিকা ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলছে।

 

 

যখনই আমেরিকা বুঝতে পারল যে, ভারতের প্রয়োজন আছে, তখনই এই জোট একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পরিণত হয়। যেখানে কেউ সময়মতো সাড়া দেয় না। নতুন জোট গড়ার সুযোগ রয়েছে ভারতের। কোয়াডের মতো নয়, যেখানে প্রয়োজনের সময় সবাই অদৃশ্য হয়ে যায়, তবে এটি তৈরি করতে ভারতের অনর্থক ঔদ্ধত্যের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং সত্যিকারের কূটনীতি ব্যবহার শুরু করতে হবে। ভারতের নিরাপত্তা চাহিদা এবং চীনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভারতের পদক্ষেপ জরুরি হলেও ভারত কি সঠিকভাবে এগোচ্ছে? শুধু লেজার চোখ আর কর্কশ জবাব দিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনীতি করা যায় না। কর্কশ কথাবার্তা ও ব্যবহার শুধু শিশুরা এড়িয়ে চলে না, দেশও পৃথক হয়ে যায়।

 

 

জনগণকে বোকা বানানোর বিষয়ে প্রশাসনে একটি প্রক্রিয়া কাজ করে। তবে, এখন জনগণ সে অবস্থানে নেই। সবাই তথ্য মহাসড়কের দরজায় দাঁড়িয়ে। হিসাব করে কথা না বললে নেতা নয়- সাধারণ মানুষও ক্ষেপে যায়, প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ভারত শুধু বিদেশী শক্তির মোকাবেলা করছে না, দেশের অভ্যন্তরে আছে ডিজিটাল সন্ত্রাসবাদী, যারা ভারতের বিদেশ সচিবকে ট্রোল করে, তার মেয়ের নম্বর ফাঁস করে, কারণ মিশ্রী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন যেন এটি তার সিদ্ধান্ত। আইএএস এবং আইএফএসের নিন্দা করেছে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। কে বা কারা তথ্য ফাঁস করেছে, তার প্রমাণ স্পষ্ট কিন্তু সরকার নীরব।

 

 

এটি স্পষ্ট যে, চীন অপারেশন সিঁদুরের আগে এবং সময় পাকিস্তানকে সাহায্য করেছিল। স্যাটেলাইট অ্যাক্সেস, রাডার তথ্য এবং বৈদ্যুতিক যুদ্ধের তথ্যাদি রিয়েল টাইমে পাকিস্তান পেয়েছে। তাই ভারত আক্রমণ চালানোর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তান পাল্টা আঘাত করতে পেরেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, চীনের সাথে সংঘর্ষ করা যাবে না, কারণ তারা বড় অর্থনীতির দেশ। আমেরিকার সামনে আরতির প্লেট হলেও চীনের সামনে নীরবতা। পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করতে চাইলে ভারতের অনেক কিছু করতে হবে। মানুষের সাথে কূটনৈতিকভাবে কথা বলা শুরু করতে হবে।

 

চীন ভারতের সবচেয়ে বড় সামরিক ও অর্থনৈতিক কূটনৈতিক হুমকি। পাকিস্তানের জন্য ভারতের কৌশল তৈরি করতে হবে। এসব ফ্ল্যাশপয়েন্ট থেকে ভারতকে শিখতে হবে আত্মপ্রচারে ডুবে থাকলে অন্যকে নিয়ে মজা করে কোনো লাভ নেই। ভারত নিজ মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, আন্তর্জাতিক মিডিয়া কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে? মিডিয়ায় অর্থ দিয়ে সবকিছু উদ্ধার হয় না। সাম্প্রতিক ভুয়া তথ্য প্রচার করে সম্মান খোয়ানো তার বড় প্রমাণ। ভারত তুরস্কের বিপক্ষে কথা বলে তাকে ত্যাগ করার জন্য পড়শিদের উদ্বুদ্ধ করছে। এতে তুরস্কের কোনো ক্ষতি হবে কি?

 

বরং তুরস্ক ভারতবিরোধী দেশগুলোকে অস্ত্র দেবে। আবার চীনকে থামাবে কিভাবে এবং ১০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি বন্ধ হবে কিভাবে? হাওয়াবাজি করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। নির্বাচনে জেতার জন্য অপারেশন সিঁদুর ঠিকমতো কাজ না করায় শক্তি জাহির করার জন্য মোদি সরকার পাকিস্তানকে কোনো পানি দেবে না বলেছে, পাকিস্তান জানিয়েছে, পানি বন্ধ করা মানে যুদ্ধ শুরু করা, তাই পাকিস্তান যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু করতে পারে। তাহলে মোদি সরকার কি অপারেশন সিঁদুরের মতো নতুন কোনো অপারেশন শুরু করতে চায়?

 

 

লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব ও গ্রন্থকার