অর্থবছর (২০২৫-২৬) : এডিপি বাস্তবায়নে বড় ধাক্কা
ড. মিহির কুমার রায় [প্রকাশিত: জনকণ্ঠ, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫]

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ করেছে সরকার। বাজেটের এই আকার গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় সাত হাজার কোটি টাকা কম। নতুন অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হচ্ছে দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, এডিপিতে বরাদ্দ কমছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের এই আকার অক্ষুণ্ন থাকলে স্বাধীনতার পর এটিই হবে প্রথম বাজেট, যেটি আগের অর্থবছরের তুলনায় আকারে ছোট হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, রাজস্ব আহরণে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হওয়া এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান কমে যাওয়ার পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দেওয়ার কারণে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের বাজেট আকারে কিছুটা ছোট হচ্ছে। বাজেটের আকার কমলেও গত অর্থবছরের তুলনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে। গত অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। পরে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রবণতা না থাকায় তা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়। তবে চলতি অর্থবছরের জন্য এই লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে করা হচ্ছে পাঁচ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করছে অর্থবিভাগ।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার বড় হলেও বাস্তব অগ্রগতি একেবারেই হতাশাজনক। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই সরকারের উন্নয়ন ব্যয় আশঙ্কাজনকভাবে ধীর হয়ে পড়েছে। মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন যেমন প্রত্যাশার তুলনায় অনেক পিছিয়ে, তেমনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বয় ঘাটতি, প্রশাসনিক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর-এই পাঁচ মাসে উন্নয়ন ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের মাত্র ১১.৭৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে একই সময়ে ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ২১৫ কোটি টাকা বা ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় পিছিয়ে আছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ থেকে স্পষ্ট হচ্ছে, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প যেন এগোচ্ছেই না। সরকারি তহবিল, বৈদেশিক সহায়তা ও সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন- প্রকল্প বাস্তবায়নে উন্নয়ন ব্যয়ের এ তিন উৎসের প্রতিটিতেই মন্থরতা লক্ষণীয়।
শুধু অর্থবছরের সার্বিক পরিস্থিতিই নয়, এডিপির মাসওয়ারি অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নভেম্বর মাসের তথ্য আরও ভাবনার। এই এক মাসে বাস্তবায়ন হয়েছে ৮ হাজার ১৬৫ কোটি টাকার মতো, যেখানে আগের বছরের নভেম্বরেই ব্যয় ছিল ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি। এক মাসেই ব্যয় কমে গেছে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ, প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রগতির হার মাত্র ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই ধীরগতি কোনো স্বাভাবিক মৌসুমি প্রবণতা নয়। বরং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার ভেতরে জমে থাকা নানা অচলাবস্থার ফল।
প্রকল্প অনুমোদনে বিলম্ব, টেন্ডারপ্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া, দক্ষ ঠিকাদারের অভাব, মাঠপর্যায়ে প্রকৌশল বিভাগগুলোর সংকোচন- এসব মিলেই উন্নয়ন ব্যয় জমে থাকছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকার পরিবর্তনের পর প্রশাসনে তৈরি হওয়া মন্থরতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধা। আইএমইডি কর্মকর্তারা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে পুরো প্রশাসনিক কাঠামো এক ধরনের অচল অবস্থায় ছিল, যার ধাক্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ব্যয়ে বৈষম্যও স্পষ্ট। বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও সংসদবিষয়ক সচিবালয় মন্ত্রণালয় পাঁচ মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। কিছু বিভাগ অগ্রগতি দেখালেও, তা সমগ্র চিত্র বদলে দেওয়ার মতো নয়। বিপরীতে খাদ্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ ১৩২.৭৮ শতাংশ ব্যয় করেছে, যা বরাদ্দের চেয়েও বেশি ব্যয়। এটি চলমান প্রকল্পগুলোর প্রকৃত অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইএমইডির মতে, প্রকৃত ব্যয় ও আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যকার এ ধরনের ব্যবধান ভবিষ্যতে প্রকল্প মূল্যায়নকে আরও জটিল করে তুলবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, ‘বাস্তবায়নের হার স্পষ্টতই কম।
শুধু সংখ্যা নয়, কেন এই অবস্থা, সেটাই এখন সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন।’ বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন থাকায় ব্যবস্থাপনায় আরও ধীরতা দেখা দিতে পারে। ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী এ প্রসঙ্গে বলেন, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত কিছুটা ধীরতা দেখা গেলেও এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। নির্বাচনকালীন প্রশাসন সাধারণত ঝুঁকিনির্ভর হয় না। ফলে প্রকল্পের গতি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, প্রশাসনিক দ্বিধা এবং মাঠপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণহীনতা মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, তা দিয়ে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন- এমনটি ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনের ভেতরেও। চলতি অর্থবছরে এডিপি বরাদ্দ ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম পাঁচ মাসে যে গতি দেখা গেছে, তাতে বছরের শেষে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন আদৌ সম্ভব হবে কি না, সে প্রশ্ন এখন তীব্র হয়ে উঠছে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনিক ব্যস্ততা বাড়বে, মাঠের কাজে মনোযোগ কমবে। এমন আশঙ্কা থেকেই সরকার এবার আগেভাগে পদক্ষেপ নিয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের গতি ধরে রাখতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা আরএডিপি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে ছয় মাস আগে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, এবারের লক্ষ্য ডিসেম্বরের মধ্যেই সংশোধিত এডিপি চূড়ান্ত করা। অর্থাৎ, অর্থবছর শেষ হওয়ার অনেক আগেই উন্নয়ন বাজেটের কাঠামো দাঁড় করাতে চায় সরকার। যেন নির্বাচনের সময় প্রকল্পের কাজ থমকে না যায়।
এ লক্ষ্যে ইআরডি থেকে এ সম্পর্কিত একটি চিঠি ইতোমধ্যে ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বৈদেশিক অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পগুলোর ঋণ ও অনুদান বরাদ্দ নির্ধারণের জন্য নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বৈঠক হবে। ইআরডির সচিবের সভাপতিত্বে আগামী ২ থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত এনইসি ভবনে অনুষ্ঠিত হবে এসব বৈঠক। চিঠিতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে নিজ নিজ প্রকল্পের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ চাহিদা তুলে ধরতে বলা হয়েছে। যেখানে সতর্ক করে ইআরডি বার্তা দিয়েছে, নির্ধারিত সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তথ্য না দিলে পরে আর সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের বছরে সরকারি প্রকল্পে সাধারণত কিছুটা ধীরগতি আসে। মাঠের কর্মকর্তারা নির্বাচনি দায়িত্বে ব্যস্ত থাকেন। ফাইল ঘুরতে সময় লাগে। অনেক প্রকল্পে কাজ থেমে যায়। এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই এবার আগাম আরএডিপি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চ মাসে এই তথ্য জানতে চাওয়া হতো।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট এডিপির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি আসবে স্থানীয় উৎস থেকে। আর বৈদেশিক সহায়তা থাকবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা। সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত- ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির এক-চতুর্থাংশের বেশি। এরপর রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত- ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি, শিক্ষা- ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি, গৃহায়ন ২২ হাজার ৭৭৬ কোটি এবং স্বাস্থ্য খাত- ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। তবে এসব বরাদ্দের বিপরীতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগভিত্তিক প্রকল্প অনুমোদনের হার ততটা আশাব্যঞ্জক নয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে মাত্র তিনটি একনেক সভা হয়েছে। সেখানে ৩৫টি প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে মাত্র ২২ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার। ফলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় মনে করছে, এখনই গতি না আনলে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা কঠিন হবে। গত অর্থবছরের অভিজ্ঞতাও তেমন ভালো নয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি শেষ পর্যন্ত নেমে আসে ২ লাখ ২৬ হাজার ১৬৫ কোটিতে। কিন্তু সেখান থেকেও বাস্তবায়িত হয় মাত্র ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার এডিপি। অর্থাৎ, এক-তৃতীয়াংশ অর্থই অব্যবহৃত থেকে গেছে।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই সরকার এবার চাইছে পরিকল্পনা ও অনুমোদনের কাজ আগেভাগে শেষ করতে। নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক চাপ থাকলেও উন্নয়নের গতি যেন থেমে না যায়, এই লক্ষ্যেই নতুন ছন্দে এগোচ্ছে আরএডিপি প্রণয়নের প্রক্রিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ সফল হলে নির্বাচনের সময়ও উন্নয়ন কার্যক্রম সচল থাকবে। আর ব্যর্থ হলে আগের বছরের মতোই বাজেট বাস্তবায়ন থেকে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যাবে।
পরিকল্পনা কমিশন সংস্কার চায় অর্থনৈতিক কৌশল পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত টাস্কফোর্স। এক্ষেত্রে ৭ দফা সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পাশাপাশি কার্যক্রমেরও সংস্কার করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনঃনির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণ’ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন জমা দেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। সেখানে দেওয়া হয়েছে এসব সুপারিশ। টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে দেখা যায়, পরিকল্পনা কমিশনকে একটি বাজেট-কেন্দ্রিক ইউনিট থেকে বের করে আনার কথা বলা হয়েছে। এর বিপরীতে একটি ব্যাপক পরিকল্পনা সংস্থায় রূপান্তরকরণ, অভিজ্ঞ ও সফল অবকাঠামো এবং ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনাবিদদের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পরিকল্পনা কমিশনের কাঠামোগত সংস্কার জরুরি প্রয়োজন বলে মনে করছে টাস্কফোর্স। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো, লিভারেজ থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, সেক্টরাল প্ল্যানের কাস্টোডিয়ান, একটি জাতীয় প্রকল্প ড্যাশবোর্ড তৈরি, একটি কার্যকর ওয়েবসাইট তৈরি: স্টাফিং প্যাটার্ন পুনর্গঠন ও বৈশ্বিক সর্বোত্তম অনুশীলনের ওপর ভিত্তি করে সংস্কার বাস্তবায়ন।
সূত্র জানায়, প্রাপ্ত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করারই বর্তমান পরিকল্পনা কমিশনের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ-১৫ অনুযায়ী পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের সব অঞ্চলের সব নাগরিকের দ্রুত জীবনমান উন্নয়ন নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এটি সঠিকভাবে করতে ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি গঠন করা হয় ‘বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন’। এই কমিশন গঠিত হয় একজন চেয়ারম্যান, একজন ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং তিন জন সদস্য নিয়ে। পরিকল্পনামন্ত্রী পদাধিকার বলেই কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা এবং নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য মন্ত্রীর পদ মর্যাদায় একজন ডেপুটি চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। সদস্যরা ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়। তখন সচিব পদমর্যাদায় প্রধানদের দিয়ে ১০টি বিভাগ তৈরি করা হয়েছিল। পরে কিছুটা সংস্কারের মাধ্যমে বর্তমানে চারটি বিভাগ তৈরি করা হয়। এছাড়া বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত করা হয়।
লেখক : অধ্যাপক ও গবেষক, সাবেক ডিন
সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা