অর্থনীতিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে স্টার্টআপ
বাংলাদেশের বাজারকে ‘ফ্রন্টিয়ার বাজার’ বলা হয়, যেখানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নজর থাকে। মানুষ স্মার্টফোন, ইন্টারনেটসহ নানান প্রযুক্তির সাথে অভ্যস্ত হচ্ছে। বড় বাজার গড়ে উঠছে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সেটি বুঝতে পারছেন। পাশাপাশি স্টার্টআপের দিকে দেশের বড় বড় ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানের আগ্রহও বাড়ছে। দেশের স্টার্টআপ সেবা এখনো ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। একে বিকশিত করতে সরকারকে সে অনুযায়ী অবকাঠামো অর্থাৎ ডিজিটাল গ্রাহক তৈরির পথ করে দিতে হবে-রেজাউল করিম খোকন। সূত্র : নয়া দিগন্ত, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনের স্টার্টআপ কানেক্ট অধিবেশনে দেশী-বিদেশী তরুণ ও উদ্ভাবনী উদ্যোক্তারা অংশ নিয়েছিলেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য এম্পাওয়ারিং ইনোভেশন কানেকটিং অপরচুনিটি। স্টার্টআপ খাতের নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে শুধু স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন জোগান দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে স্টার্টআপ খাতের এ তহবিল বিতরণ করা হবে। দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে উদ্ভাবনী, স্টার্টআপ উদ্যোগের চাহিদা বেশি। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে স্টার্টআপ খাতে এখনো বিনিয়োগ কম। ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায় করার লাইসেন্স পাওয়াসহ সরকারি লালফিতার দৌরাত্ম্য বেশ রয়েছে। প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। সুযোগ দিলে দেশে বিকাশের মতো ১০টি ইউনিকর্ন বানানো সম্ভব। বিকাশের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এটি করতে পারি। স্টার্টআপগুলোর লাভ এক দিনেই আসে না। আমাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে, আরো অধ্যবসায় করতে হবে।
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী স্টার্টআপ কোম্পানি শপআপ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর সরবরাহকারী কোম্পানি ‘সারি’-এর সাথে একীভূত হয়ে নতুন কোম্পানি গঠন করেছে। নতুন সেই কোম্পানির নামকরণ করা হয়েছে ‘সিল্ক’ গ্রুপ। নতুন গ্রুপ গঠনের পরপরই ১১ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ডলারের বর্তমান বিনিময় হার ১২২ টাকা হিসাবে দেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৩৪২ কোটি টাকা। মূলত সৌদিভিত্তিক কোম্পানি সারির সাথে শপআপ শেয়ার সোয়াপ বা অদলবদলের মাধ্যমে একে অপরের সাথে একীভূত হয়ে নতুন কোম্পানি গঠন করেছে। বাংলাদেশের শপআপ ও সৌদি আরবের সারি একে অপরের সাথে একীভূত হলেও কোম্পানি দু’টি নিজ নিজ নামে নিজ নিজ ক্ষেত্রে ব্যবসায় চালিয়ে যাবে।
সৌদি আরবে ৩০ লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি। এসব প্রবাসী বাংলাদেশী যাতে সৌদি আরবে বসে সহজে বাংলাদেশের পণ্য পেতে পারেন, সে লক্ষ্যে সৌদি প্রতিষ্ঠান সারির সাথে শপআপকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশী পণ্য রফতানি হলেও তা পরিমাণে খুবই কম ও তা কয়েকটি কোম্পানির হাতে। আমাদের রফতানির এ পরিসর বড় করতে হবে। দেশের ছোট উদ্যোক্তারাও যাতে দেশটিতে তাদের উৎপাদিত পণ্য রফতানির সুযোগ পান, সেই পথ তৈরি করতেই এ উদ্যোগ নিতে হবে। সারি ও শপআপ একে অপরের সাথে একীভূত হয়ে সিল্ক নামে যে কোম্পানি গঠন করেছে, সেটির কার্যক্রম সৌদি আরবের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের আরো কিছু দেশে ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সম্ভাবনাময় এ খাতে দেশী-বিদেশী অনেক উদ্যোক্তাই এগিয়ে আসছেন।
স্টার্টআপ হচ্ছে এমন কোনো নতুন উদ্যোগ, যারা একেবারেই নতুন ধরনের (ইউনিক) পণ্য বা পরিষেবা নিয়ে কাজ করে। যে পণ্য বা পরিষেবার বাজার আছে এবং যার বিকল্প নেই। স্টার্টআপের উদ্যোক্তারা এমন ভাবনা নিয়ে আসে, যার সমাজে চাহিদা আছে কিন্তু জোগান নেই। অর্থাৎ হ্যালো টাস্কের মতোই। শহুরে জীবনে গৃহকর্মীর সহায়তা সবারই প্রয়োজন। এর বিকল্প নেই। তাই অ্যাপের মাধ্যমে ডাকলেই এখন চাহিদা অনুযায়ী গৃহকর্মী হাজির হবে হ্যালো টাস্ক। এক কথায় বলা যায়, স্টার্টআপ হচ্ছে সমাজের প্রচলিত সমস্যার সমাধানভিত্তিক ব্যবসায়। বিশ্বব্যাপীই স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ কমছে। বাংলাদেশের স্টার্টআপেও তার প্রভাব পড়ছে। দেশের উঠতি পর্যায়ের স্টার্টআপ হ্যালো টাস্ক এখন পর্যন্ত কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। যার বেশির ভাগই এসেছে দেশের বাইরে থেকে। ফোর্বসের বর্ষসেরা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল বাংলাদেশী দূরবীক্ষণ অ্যাপ শিখো।
বিশ্বজুড়ে স্টার্টআপের যে উত্থান ঘটেছে তার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের মেধাবী তরুণরাও যুগোপযোগী স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সারা বিশ্বে দেশের একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি গড়ে তুলেছে। বৈশ্বিক স্টার্টআপ মানচিত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সংযোজন শিখো। ২০১৯ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকেই বাংলাদেশে শেখার বিপ্লব ঘটানোর লক্ষ্যে হাইপার-লোকালাইজড ডিজিটাল লার্নিং ইকোসিস্টেম তৈরি করে যাচ্ছে শিখো। দেশজুড়ে সব শিক্ষার্থীর জন্য মানসম্মত শিক্ষা সহজলভ্য করতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশে ২০১৩ সালের পর থেকে স্টার্টআপের ধারণা বিস্তৃত হতে থাকে। ২০২০ থেকে ২০২১ সালে ১০ গুণ বিনিয়োগ বেড়েছে এতে। স্টার্টআপে যেসব বিনিয়োগ আসছে, তার ৯৫ শতাংশের বেশি বিদেশী বিনিয়োগ। স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগের ৭০ শতাংশের বেশি হয়েছে ফিনটেকে (আর্থিক প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান)। এরপর লজিস্টিক ও মোবিলিটিতে ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ই-কমার্স ও রিটেইলে প্রায় ৬ শতাংশ, স্বাস্থ্য খাত আড়াই শতাংশ, কনজ্যুমার সেবায় ২ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিতে ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ বিনিয়োগ এসেছে।
যেকোনো স্টার্টআপ থেকে বিনিয়োগকারীরা সবার আগে যা আশা করে, তা হলো ব্যবসায় প্রসার করতে পারার সম্ভাবনা। সে জন্য সবার আগেই প্রয়োজন, একটি বড় বাজার বা মার্কেট নিয়ে কাজ করা। বড় অর্থাৎ শুধু কতজন গ্রাহক আছেন তা নয়; বরং মোট কত টাকার ব্যবসায় করা সম্ভব, সেটি। কোনো কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা থেকে নিজের কোনো বিজনেস আইডিয়া থেকে কিছু শুরু করাকেই বলা যেতে পারে স্টার্টআপ। একটি স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা কিংবা উদ্যোক্তা তার দেখা স্বপ্ন থেকে নতুন কোনো একটি কিছু সমাজকে উপহার দেয়, যা ইতঃপূর্বে ছিল না কিংবা কেউ করেনি।
স্টার্টআপ যে এমন হতে হবে কেউ আগে কখনো করেনি, এমনও কিন্তু নয়। স্টার্টআপগুলো এমনও হতে পারে, সেই ধারণাগুলো ইতঃপূর্বেও ছিল, তবে সেটিকে নতুন ধাচে ভিন্ন কোনো উপায়ে শুরু করা হয়েছে। উন্নত বিশ্বে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, কোনো স্টার্টআপ খুব অল্প সময়ে বিকশিত হয়ে সেটি একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতেও রূপান্তরিত হয়েছে। ফেসবুক যখন মার্ক জাকারবার্গ শুরু করেছিলেন, তখন কিন্তু তিনি ভাবেননি ফেসবুক এত বিপুল সম্প্রসারিত হবে। তবে আজ আমরা দেখছি, মার্ক জাকারবার্গ এই স্টার্টআপ পৃথিবীর অন্যতম বড় আইটি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। আর ফেসবুক (বর্তমান মেটা) হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট।
টাকা লেনদেনের জন্য কিংবা যাতায়াত খরচের ঝক্কিঝামেলা পোহানোর চেয়ে মুহূর্তেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লেনদেন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দেশের মানুষের কাছে। ক্রমান্বয়ে মোবাইল ব্যাংকিং এখন দেশের মানুষের ভরসার জায়গায় পরিণত হয়েছে। ২০১০ সালে শুরু হওয়া মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশ দেশের প্রথম সফল স্টার্টআপ। এরপর একে একে আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান উঠে আসে। স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগে গাড়ি থেকে শুরু করে গৃহস্থালি কাজের লোক খোঁজা সব কিছুই এখন হাতের মুঠোয়। সম্ভাবনাময় এ খাতে দেশী-বিদেশী অনেক উদ্যোক্তাই এগিয়ে আসছেন। তবে এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এখনো বেশ পিছিয়ে। দেরিতে শুরু করার কারণেই তুলনামূলক কম এগিয়েছে দেশ। অবশ্য এ খাতে বৈপ্লবিক সাফল্য সময়ের ব্যাপার। স্টার্টআপ বিনিয়োগে বাংলাদেশের উপরে আছে এশিয়ার পাঁচটি দেশ। বাংলাদেশে স্টার্টআপ বিনিয়োগ বাড়াতে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এখন পর্যন্ত ১১টি হাই-টেক পার্কে অবকাঠামো নির্মাণ হয়েছে। প্রতিটি অবকাঠামোতেই একটি ফ্লোর স্টার্টআপের জন্য ফ্রি দেয়া হচ্ছে। এ জন্য তাদের কোনো অর্থ দিতে হয় না। এমনকি বিনামূল্যে বৈদ্যুতিক সরবরাহ, ইন্টারনেট, ট্রেনিং, মেন্টরও দেয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, বিশেষ স্টার্টআপদের ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সিড ফান্ড ফ্রি একটি বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এখন দেশের বাইরের অনেক কোম্পানিও এসেছে স্টার্টআপদের ফান্ডিংয়ের জন্য। সরকার ফ্রিল্যান্সারদের পাশাপাশি স্টার্টআপদেরও স্বীকৃতির ব্যবস্থা করেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য তাদের বিশেষ আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুঁজি সরবরাহ দিয়ে ব্যাংকগুলো বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে এ ক্ষেত্রে। নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্টার্টআপ ফান্ড নিয়ে কাজ করছে। কারণ, ১০০টি স্টার্টআপের মধ্যে পাঁচটি সফল হয় আর তার মধ্যে দু-একটি হয় বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান। এটি হলেও তা অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরনের উন্নয়ন ঘটতে পারে।
এত সুবিধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ কেন এখনো এশিয়ার তলানিতে? বাংলাদেশ শুরুই করেছে অনেক পরে। বাংলাদেশর পাঁচ বছর আগে ভারত শুরু করেছে, স্বাভাবিকভাবেই তারা বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তবে আগামী পাঁচ বছর পর তুলনামূলক বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার হার ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে। বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণে নয়; বরং একটি আনুপাতিক হারে আমরা ভারতকে ছাড়িয়ে যাব। শুরুর বিবেচনায় দেশের স্টার্টআপে বিনিয়োগ এখন পরিপক্ব হচ্ছে। এ খাতে সরকার ও ব্যক্তি খাতের সমন্বয়ের একটা ব্যাপার ছিল। আমাদের স্টার্টআপদের তখন দেশের ব্যাংকই বিশ্বাস করত না, বিদেশী বিনিয়োগ আসবে কীভাবে? তাই গত দুই বছর ধরে ভালো করছে স্টার্টআপ উদ্যোগগুলো।
আমাদের পরিপক্বতা অর্জনের সময় এখন। সামনের দিনগুলোতে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ সমন্বয় হলে এ খাতে আমাদের সম্ভাবনা ব্যাপক। স্টার্টআপদের বিষয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নতুন করে ভাবা উচিত। আমাদের দেশে স্টার্টআপ বিনিয়োগের পথচলা বেশি দিনের নয়। মূলত এ কারণেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা পেছনে আছি। তরুণ প্রজন্মের নিত্যনতুন ব্যবসায় ধারণার সন্নিবেশ ঘটিয়ে অর্থনীতিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে স্টার্টআপ।
আমাদের তরুণ প্রজন্ম স্টার্টআপ বিজনেসে এগিয়ে এসেছে। তারা মূলত আইসিটি-নির্ভর স্টার্টআপ ফার্ম নিয়ে কাজ করছে। আর স্টার্টআপ ফার্ম মানে কিন্তু এমন নয় যে, ১০০টি শুরু করলে ১০০টিই দাঁড়িয়ে যাবে। আমাদের যদি ১০-২০ শতাংশ সফল হয় তাহলেও অনেক। আমাদের নতুন প্রজন্মের তরুণ বয়সী ছেলেমেয়েরা অসাধারণ মেধাবী। তাদের মধ্যে নিত্যনতুন আইডিয়া, নতুন নতুন ব্যবসায় উদ্যোগের অসাধারণ চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এক সময় এ খাত গার্মেন্টসকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। আইসিটি ডিভিশনের পাশাপাশি বিডা থেকেও এদের নিয়ে ভাবা জরুরি।
উন্নত বিশ্বে স্টার্টআপরাই সমাজকে এগিয়ে নিয়েছে। সরকারও সে লক্ষ্যে এগিয়েছে। স্টার্টআপ নীতিমালার খসড়া হয়েছে, এখন পর্যালোচনা হচ্ছে; যেখানে স্টার্টআপের জন্য সরকারের কোন সংস্থার কী ভূমিকা এবং ব্যাংক থেকে যাতে তারা ঋণ পায়, সে বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকবে।
করোনা মহামারীর পরই বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। এই সময়টায় মানুষের প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ে। যার ফলে ই-কমার্স, স্বাস্থ্য খাতকেন্দ্রিক পরিষেবার চাহিদার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট স্টার্টআপগুলোও নিজেদের মেলে ধরে। এ ছাড়া গত এক দশকে স্টার্টআপ সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দেশের মানুষের জীবনে নানামুখী পরিবর্তন এনেছে। বিকাশ, পাঠাও, শপআপ, চালডাল এখন ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে।
বাংলাদেশের বাজারকে ‘ফ্রন্টিয়ার বাজার’ বলা হয়, যেখানে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নজর থাকে। মানুষ স্মার্টফোন, ইন্টারনেটসহ নানান প্রযুক্তির সাথে অভ্যস্ত হচ্ছে। বড় বাজার গড়ে উঠছে এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সেটি বুঝতে পারছেন। পাশাপাশি স্টার্টআপের দিকে দেশের বড় বড় ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানের আগ্রহও বাড়ছে। দেশের স্টার্টআপ সেবা এখনো ঢাকা ও চট্টগ্রামকেন্দ্রিক। একে বিকশিত করতে সরকারকে সে অনুযায়ী অবকাঠামো অর্থাৎ ডিজিটাল গ্রাহক তৈরির পথ করে দিতে হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক