অভ্যুত্থান-পরবর্তী ছাত্র-যুবসমাজের প্রতি
ছাত্র ও যুবসমাজের প্রতি সাধারণ মানুষের সতর্ক আবেদন, গোটা জাতির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতি আপনারা বিশ্বস্ত থাকুন। সব দ্বন্দ্ব, বিদ্বেষ, হিংসা, বিভেদ অতিক্রম করে জাতীয় ঐক্যের প্রশ্নে ইস্পাত কঠিন দৃঢ় থাকুন। প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। তরুণদের প্রতি প্রত্যয়ী থাকুন। বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম ও গণতন্ত্রের সংগ্রামের ভারসাম্য নিশ্চিত করুন। বিভেদের সুযোগে পলাতক স্বৈরাচার ও দেশজ স্বৈরাচার যেন সর্বনাশের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় এ বিষয়ে সদা সতর্ক থাকুন-ড. আবদুল লতিফ মাসুম । সূত্র : নয়া দিগন্ত, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কবি হেলাল হাফিজ বলেছেন, ‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। এটি যথার্থই সত্যি যে, যুবকরাই পৃথিবীর ইতিহাস পাল্টে দিয়েছে। শিশু মন অবুঝ থাকে। কৈশোর উদ্দীপনায় কেটে যায়। আর জীবনের পরিপূর্ণতা আছড়ে পড়ে যৌবনে। তখন একজন যুবক স্বার্থ, সুবিধা ও সম্পদকে অবজ্ঞা করতে শেখে। তার সাথে যদি সংমিশ্রণ ঘটে আদর্শ ও নৈতিকতার তাহলে বিজয় অনিবার্য। আবারো এই কথার প্রমাণ মিলল ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে। যেখানে রাজনৈতিক শক্তির ব্যর্থতা ছিল, সেখানে ছাত্র-যুবকরা সফল হলো। এর নিশ্চয়ই অন্তর্নিহিত কারণ আছে। একজন আবু সাঈদ যখন জীবন দেয় তখন কোনো জাগতিক স্বার্থ-সুবিধা তাকে প্ররোচিত করে না; বরং সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব তাকে সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমা দেয়। সামগ্রিকভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাগতিক আন্দোলন ছিল। রক্ত ও ত্যাগের মহিমা আন্দোলনকে জাগতিকতার ঊর্ধ্বে স্থাপন করে। অধিকার, মানবিকতা ও দেশপ্রেম আন্দোলনের চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়ায়। শক্তিতন্ত্রের বিপরীতের গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষা তাদের প্রলুব্ধ করে। রাষ্ট্রযন্ত্রের পরতে পরতে জমে থাকা জঞ্জাল তাদের পীড়িত করে। তাই সুউচ্চ কণ্ঠে উচ্চারিত হয় সংস্কারের দাবি।
ছাত্র-যুবকরাই বাংলাদেশের ইতিহাস নির্মাণ করেছে। ভাষা আন্দোলন থেকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনে ছাত্ররাই নেতৃত্ব দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা সেই আন্দোলনের নীতিমালা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ত্রিদলীয় ঐক্যজোটের অঙ্গীকার রক্ষা করা হয়নি; বরং সেই সময় থেকে ছাত্র-যুবকদের রাজনৈতিক সোপান হিসেবে ব্যবহারের মাত্রা বেড়েছে। আওয়ামী আমলে তা হয়েছে নগ্ন, নোংরা ও বেপরোয়া। এভাবে ছাত্র ও যুবসমাজের চরিত্রকে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে এমন কোনো হীন অপরাধ নেই, যা তাদের পেটোয়া বাহিনী করেনি। তাদের ক্ষমতার প্রথম যুগে মানুষ লাল, নীল ও সবুজ বাহিনী দেখেছে। অবশেষে নির্লজ্জভাবে হেলমেট বাহিনী দেখেছে। রাজনৈতিকভাবে অভ্যুত্থানকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করেনি।
রাষ্ট্রক্ষমতায় সিদ্ধ আইন ও শৃঙ্খলাবাহিনীকেও অগ্রাহ্য করেছে; বরং কাউয়া কাদের বলেছে, ওদের মোকাবেলার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। তার মানে হচ্ছে এই যে, নাজিবাদী ও ফ্যাসিবাদী শক্তির মতো রাষ্ট্রযন্ত্র ও দলতন্ত্রকে একাকার করে ফেলেছে। স্মরণ করা যেতে পারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করার কারণে।
রাজনৈতিকভাবে নাগরিক সাধারণকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। অর্থনৈতিকভাবে রাষ্ট্রকে পঙ্গু করে ফেলা হয়। ব্যাংকব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। রাষ্ট্রযন্ত্রটি অবাধ লুটপাটের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়। সাংস্কৃতিকভাবে প্রতিবেশীর গোলাম হওয়ার প্রয়াস নেয়া হয়। শিক্ষাব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদের বক্তব্য প্রচার করা হয়। বুদ্ধিজীবীরা ক্রীতদাসের মতো বুদ্ধি বিক্রি করতে থাকেন। গোটা জাতি নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে আদর্শহীন পঙ্গু হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুথানের গহিন গভীরে জাতির আদর্শ ও মূল্যবোধ উদ্ধারের সুস্বপ্ন ছিল। অবাক হওয়ার বিষয়, যে স্লোগান তাদের শেখায়নি কেউ, তা উচ্চারিত হয়েছে একান্ত হৃদয় থেকে। কেউ আদেশ করেনি উৎপাটনের। অথচ সমূলে উৎপাটিত হয়েছে জনরোষে। মসজিদের শহরকে যারা মূর্তির শহরে পরিণত করতে চেয়েছে তারাই হয়েছে বিতাড়িত। আর এসবই ছিল ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের অনুক্ত অধ্যায়। একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে খুব স্বাভাবিকভাবেই অনুরণিত হবে তাদের ভাষা ও আশা। ভারতীয় গণমাধ্যম একে দেখেছে মৌলবাদের উত্থান হিসেবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, প্রগতিশীল রাজনীতির প্রবক্তা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে তারা মাওলানা ইউনূস বলে তিরস্কার করতেও দ্বিধাবোধ করেনি। অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিংবা এর পারিপার্শ্বের সাথীরা কখনো কোনোভাবে চরমবাদের কথা বলেনি। বাংলাদেশকে তারা সবসমই ওভাবেই চিত্রিত করতে চেয়েছে। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় তাদের ‘র’ বলেছিল- এ দেশে নাকি মৌলবাদীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ। তথ্যটি ছিল মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এভাবেই তারা হস্তক্ষেপের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে এবং দূরের শক্তিকে কাছে টেনে এনেছে। ঘটিয়েছে এক-এগারোর ঘটনাবলি। এখন তারা ট্রাম্পের কৃপা নিয়ে সোল এজেন্সির পারমিট পেতে চাইছে আবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তথা গণবিপ্লবের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছেÑ বাংলাদেশকে নিয়ে এ ধরনের আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মূলোৎপাটন।
আস্থা ও আনন্দের কথা যে, আমাদের ছাত্র-যুবকরা দৃশ্যমানভাবে এখনো নীতি ও আদর্শের ওপর সুদৃঢ় রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, পরিকল্পনা তো কেবল তখনই সফল হয় যখন বিশ্বাস দৃঢ় থাকে। যদি সে পরিকল্পনার সাথে যুক্ত থাকে একনিষ্ঠতা তাহলে তা সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছবেই। সফলতার জন্য আরো প্রয়োজন প্রবল আগ্রহ-উদ্দীপনা। আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র-জনতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করার জন্য যথার্থ প্রস্তুতি ও সঠিক কর্মপন্থা তাদের রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য তাদের প্রথম যা কর্তব্য তা হচ্ছে ক. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সুস্পষ্টতা; খ. নির্দিষ্ট লক্ষ্যের প্রতি একনিষ্ঠতা ও একাত্মতা; গ. আগ্রহ ও উদ্দীপনা; ঘ. কার্যকর কর্মপন্থা। যেকোনো কর্মপ্রচেষ্টার মূল ভিত্তি হলো প্রাণবন্ত হৃদয়। একাত্মতা ও একনিষ্ঠতা তখনই সম্ভব যখন হৃদয় হবে অমলিন। যা সে বিশ্বাস করে তার ভিত্তি হবে সুদৃঢ়। কর্মের ভিত্তি হলো অবিচল সঙ্কল্প। আর এসব গুণ তো তারুণ্যের মধ্যে দীপ্তি ছড়ায়। প্রাচীন ও আধুনিক সময়ের যেকোনো জাতির বিপ্লবের যুবকরাই চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীর যেকোনো পরিবর্তনের নব-উত্থানে চালিকাশক্তি তরুণ-যুবারাই।
বাংলাদেশ তো বটেই, বর্তমান পৃথিবীর দিকে দিকে যে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে আরব বসন্ত কিংবা অন্যত্র সেখানে রক্ত ঢেলে দিয়েছে যুবকরাই। বাংলাদেশের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। রক্তের বিনিময় আল্লাহ সুবনাহুতায়ালা সবসময়ই যে সফলতা দিয়ে থাকেন তার প্রমাণ তো আমরা পেয়েছি। তাই বিপ্লব-পরবর্তী সময় ছাত্র ও যুবসমাজের দায়িত্ব বেড়েছে অনেক। তাদের ব্যক্তিগত রেষারেষি, দ্বন্দ্ব ও বিদ্বেষ যেন বিপ্লবের আদর্শকে ম্লান না করে। রক্তের বিনিময়ে আমানতের এক বিশাল দায় তাদের ওপর বর্তেছে এটি তাদের মনে রাখতে হবে। তাদের যেকোনো ক্ষমতায়ন ও জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশে অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে তারা যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করেছে, তা তাদের জন্য কর্মের উদাহরণ হয়ে থাকবে। ছাত্র হিসেবে তাদের সীমাবদ্ধতা এবং বাংলাদেশ সমাজ ও রাজনীতির নিরিখে উপলব্ধি করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের মুক্তি ও সামগ্রিক সংস্কারে তারা যে দৃঢ়তা দেখিয়েছে তা অব্যাহত রাখতে হবে। যেহেতু, অতীতের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়, তাদেরকে রাজনৈতিক অথবা অরাজনৈতিক উপায়ে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ সমাজের অতীত ও বর্তমান বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে এই উপলব্ধি আসে যে, এখানে যেমন আরাম-আয়েশের লালিত পালিত প্রজন্ম আছে, তেমনি আছে গরিব ঘরের সন্তানরা। এক দল স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে চায়, আরেক দল চায় বৈষম্যের অবসান। সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামটি কঠিন ও কঠোর। গণ-অভ্যুত্থানের সরকারটি যদি হতো সংবিধানবহির্ভূত, তাহলে বিপ্লব পদবাচ্য কিছু হতে পারত। যেহেতু, সামাজিক টানাপড়েনের কারণে সেটি সম্ভব হয়নি, সেহেতু ভারসাম্যের পথেই ছাত্র-যুবকদের এগোতে হবে। এভাবেই তারা কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ নির্মাণ করতে পারবে। জনগণ বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের জন্য তারা সুউচ্চ মর্যাদা ও সমুন্নত অবস্থান নির্ণয় করতে পারবে। নাগরিক সাধারণ বিশ্বাস করে, সে সক্ষমতা তারা অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের এই ক্রান্তিকালীন সময়ের ক্ষমতাকেন্দ্রিক হওয়ার পরিবর্তে ছাত্র-যুবসমাজ দেশপ্রেমকেন্দ্রিক হবেÑ এটিই সঙ্গত প্রত্যাশা। রাষ্ট্রচিন্তকরা মনে করেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী এই সময়টি ছাত্র-যুবকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তীকালে এই সুযোগটি আর নাও আসতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এবং প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদরা একই কথা বলছেন। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তাদের মমত্ব লালন করতে হবে। ক্ষমতা যেটুকু আছে আর ভবিষ্যতে তা যদি আরো আসে তাহলে তা দায়িত্বই মনে করতে হবে। সত্যের পথে, ন্যায়ের পথে তাদের অবিচল দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এসব নীতিমালায় যদি থাকে তারা আবদ্ধ, তা হলে আল্লাহর সাহায্য এবং জনগণের আস্থা তারা লাভ করবে। গণতান্ত্রিকভাবে দ্বিমত পোষণ করা অন্যায় নয়। অন্যায় তাই যদি দ্বিমতকে শত্রুতাজ্ঞান করা হয়। বাংলাদেশ সমাজের বিভ্রান্তি, কোন্দল ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব একটি অপ্রিয় সত্য। ন্যায়তা, দৃঢ়তা ও নেতৃত্বের স্বচ্ছতা দিয়ে নেতিবাচক রাজনীতিকে ইতিবাচকভাবে পরিবর্তিত করার দায়িত্ব ছাত্র-যুবদের। কারণ তারা এখনো জটিলতা কুটিলতায় নিক্ষিপ্ত হয়নি।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী ছাত্র-যুবসমাজের প্রথম করণীয় হচ্ছে
ক. চিন্তার পুনর্গঠন : বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে একটি অস্থির সময় অতিক্রম করছি আমরা। ছাত্র-যুবসমাজের আদর্শ ও নৈতিক ব্যক্তিত্ব গঠন এখন সময়ের দাবি। তাদের আবেগ অনুভূতিতে, কাজকর্মে, আচার-আচরণে যেন ফুটে ওঠে একজন আদর্শ যুবকের প্রতিচ্ছবি।
খ. পরিবার গঠন : ‘চ্যারিটি বিগিনস এট হোম’। আগে ঘর, তবে তো পর। পরিবারই হলো আমাদের জীবন গঠনের প্রথম প্রয়াস। সুতরাং ভবিষ্যৎ আদর্শ ও নৈতিক পরিবার গঠনে পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হতে হবে।
গ. সমাজ গঠন : ব্যক্তিজীবন, পারিবারিক জীবন গঠন করার পর সামাজিক জীবন গঠনে মনোযোগী হতে হবে। পুরো সমাজের চিন্তা-চেতনা, আবেগ-অনুভূতি, আকিদা-বিশ্বাস, আখলাক-চরিত্র, কাজকর্ম এবং আচার-আচরণ যেন আদর্শ ও নৈতিকতার আদলে গড়ে ওঠে।
ঘ. রাষ্ট্র গঠন : অভ্যুত্থান-পরবর্তী ছাত্রসমাজ বৈষম্যবিরোধী রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। তারা চাচ্ছে আগে পর্যাপ্ত সংস্কার সাধন, পরে নির্বাচন। রাজনৈতিক দল বিশেষত সবচেয়ে জনপ্রিয় দলটি মনে করে, সংস্কারের জন্য অনির্দিষ্টকাল সময় দেয়া যায় না। বাংলাদেশ বাস্তবতায় তাদের কথায়ও যৌক্তিকতা আছে। সুতরাং উভয়ের চাওয়া ও পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারসাম্য নিশ্চিত হতে হবে।
ঙ. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব : সবচেয়ে বড় কথা আমরা দেশের সংস্কার চাই। দেশই যদি না থাকে তাহলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গ্যারান্টি থাকবে কিভাবে! সুতরাং, সব কথার শেষ কথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
অবশেষে ছাত্র ও যুবসমাজের প্রতি সাধারণ মানুষের সতর্ক আবেদন, গোটা জাতির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতি আপনারা বিশ্বস্ত থাকুন। সব দ্বন্দ্ব, বিদ্বেষ, হিংসা, বিভেদ অতিক্রম করে জাতীয় ঐক্যের প্রশ্নে ইস্পাত কঠিন দৃঢ় থাকুন। প্রবীণদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। তরুণদের প্রতি প্রত্যয়ী থাকুন। বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম ও গণতন্ত্রের সংগ্রামের ভারসাম্য নিশ্চিত করুন। বিভেদের সুযোগে পলাতক স্বৈরাচার ও দেশজ স্বৈরাচার যেন সর্বনাশের কারণ হয়ে না দাঁড়ায় এ বিষয়ে সদা সতর্ক থাকুন।
লেখক : অধ্যাপক (অব:), সরকার ও
রাজনীতি বিভাগ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়