সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিলের আর্থ-রাজনৈতিক প্রভাব
সিন্ধু পানিচুক্তি ছিল ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের একটি অন্যতম স্থিতিশীল ভিত্তি। এর বিলুপ্তি উভয় দেশের জন্যই বিপর্যয়কর পরিণতি বয়ে আনতে পারে-ড. মো: মিজানুর রহমান [সূত্র : নয়া দিগন্ত, ০৮ মে ২০২৫]

সিন্ধু দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী, যার ওপর নির্ভর করে পাকিস্তান ও ভারতের এক বিশাল জনগোষ্ঠী। এই নদীর গুরুত্ব এবং দুই দেশের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ১৯৬০ সালের ‘সিন্ধু পানিচুক্তি’ অনুযায়ী দুই দেশের পানিবণ্টন নীতির ভিত্তি স্থাপিত হয়। তবে পানিবণ্টন ঘিরে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। সা¤প্রতিক উত্তপ্ত পরিবেশে চুক্তির ভবিষ্যৎ আবারো প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
সিন্ধু নদীর উৎপত্তি তিব্বতের কৈলাস পর্বতমালার মানস সরোবর হ্রদ থেকে। এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় তিন হাজার ২০০ কিলোমিটার যা তিব্বত থেকে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির হয়ে পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আরব সাগরে পড়েছে। এর শাখা হলো- ঝিলম, চেনাব, রবি, বিয়াস, শতদ্রু। এই সিন্ধু সভ্যতা (৩৩০০-১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো শহরের জন্ম দেয়। সিন্ধু নদীর পানি পাকিস্তান এবং ভারত উভয় দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্ব বিবেচনায় ১৯৬০ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওয়াহেরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের মধ্যে সিন্ধু পানিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাতে ভবিষ্যতে পানি নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি না হয়। চুক্তির মধ্যস্থতাকারী ছিল বিশ্বব্যাংক এবং চুক্তির মূল বিধান অনুযায়ী পূর্ব দিকের নদী রবি, বিয়াস, শতদ্রু ভারতের ব্যবহারের জন্য এবং পশ্চিম দিকের নদী সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব পাকিস্তানের ব্যবহারের জন্য। ভারত পশ্চিমের নদীতে সীমিত কৃষিকাজ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালাতে পারবে তবে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। কোনো বিরোধ দেখা দিলে তা নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত সালিশি ও আন্তর্জাতিক আদালতে সমাধানের বিধান রাখা হয়েছে। এক কথায় বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সফল আন্তঃদেশীয় চুক্তি।
এই চুক্তি ভারতের একতরফা বাতিল আইনসঙ্গত নয়। কারণ, আন্তর্জাতিক আইনের (ভিয়েনা কনভেনশন অন দ্য ল অব ট্রিটিজ, ১৯৬৯) অধীনে, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল করা বৈধ নয় যদি না চুক্তিতে তার বিধান থাকে। সিন্ধু নদীর এই পানিচুক্তিতে সে বিধান নেই। এছাড়াও চুক্তির সমঝোতা এবং বিবাদের সমাধান আন্তর্জাতিক সালিশি ও বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সা¤প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০২৫ সালে ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তি বাতিলের নোটিশ পাঠানো হয়। পাকিস্তান এই নোটিশ গ্রহণ না করে বরং এই উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করে এবং জাতিসঙ্ঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বিষয়টি উত্থাপন করে। চুক্তি বাতিলের নোটিশ দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান আস্থার ভিত নড়বড়ে করে দিয়েছে। চলমান কাশ্মির ইস্যু, সীমান্ত সংঘর্ষ এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগের পর চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দু’দেশের সম্পর্ক আরো উত্তপ্ত করে তুলেছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রায় স্থগিত পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্ক (ঝঅঅজঈ) ও অন্যান্য আঞ্চলিক উদ্যোগ স্থবির হয়ে পড়েছে।
সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিলের প্রভাব এবং সম্ভাব্য বিকল্প
সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে পাকিস্তান। কারণ সিন্ধু নদীর ভাটিতে অবস্থিত দেশটির মোট কৃষি উৎপাদনের প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভর করে এই নদীর পানির ওপর (পাকিস্তান কাউন্সিল অব রিসার্চ ইন ওয়াটার রিসোর্সেস- চঈজডজ)। দেশের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সিন্ধু অববাহিকা থেকে আসে। সিন্ধু অববাহিকায় বসবাস করে ৭০ শতাংশ জনগণ। বিশ্বের বৃহত্তম সেচব্যবস্থার একটি অংশ সিন্ধু অববাহিকায়, যেখানে ১৪ মিলিয়ন হেক্টর জমি সেচ হয়। পানিচুক্তি বাতিল হলে দুই কোটি একর জমি সরাসরি পানিসঙ্কটে পড়বে। খরিফ ও রবি মৌসুমের শস্য, বিশেষ করে গম, ধান, তুলা এবং চিনাবাদামের উৎপাদন ২০-২৫ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসবে। কৃষি ও জ্বালানিভিত্তিক শিল্পে ধস নামবে, ফলে দেশের জিডিপি ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে যার পরিমাণ হতে পারে প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। দুই দেশের সম্মিলিত জিডিপি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। বেসামরিক অবকাঠামো যেমন বাঁধ, বিদ্যুৎকেন্দ্র, সেতু ইত্যাদি ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা আছে। সিন্ধু নদী অববাহিকায় অবস্থিত তারবেলা, মঙ্গলা এবং অন্যান্য জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পাকিস্তানের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩২ শতাংশ সরবরাহ করে।
কৃষিজ উৎপাদন কমে গেলে খাদ্যসঙ্কট বাড়বে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী প্রায় ছয় কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে সিন্ধু, পাঞ্জাব এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকরা বিপদে পড়বে। কৃষি খাতে কর্মরত প্রায় ৪ কোটি মানুষ পানিসঙ্কটের কারণে আয় হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে। বেকারত্ব ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। প্রাদেশিক পর্যায়ে, বিশেষ করে সিন্ধু ও পাঞ্জাবের মধ্যে পানি বিতরণ নিয়ে টানাপড়েন ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
মিঠা পানির প্রবাহ কমে লবণাক্ততার মাত্রা বাড়বে, বিশেষ করে সিন্ধু ডেল্টা অঞ্চলে। সিন্ধু ডেল্টার আয়তন ইতোমধ্যেই বিগত ৫০ বছরে ৯২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। পানিসঙ্কটের ফলে এই ধ্বংসের হার আরো বাড়বে। সিন্ধু নদীর বিখ্যাত ডলফিনসহ অনেক বিরল জলজ প্রাণী হুমকির মুখে। পানি সরবরাহ কমে গেলে সিন্ধু অববাহিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। প্রতি বছর পাকিস্তানে ৭২ হাজার হেক্টর কৃষিজমি মরুকরণ প্রক্রিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে, চুক্তি স্থগিত হলে এই হার দ্বিগুণ হতে পারে। এক কথায় সিন্ধু পানিচুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার অন্যতম স্তম্ভ। এর স্থগিতাদেশ পাকিস্তানের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে, যার প্রভাব অর্থনীতি, সমাজ এবং পরিবেশের সর্বস্তরে পরিলক্ষিত হবে।
সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিলে ভারতে প্রভাব
ভারত যেহেতু সিন্ধু নদীর বাঁধের উজানে সুতরাং ভাটির পাকিস্তানের মতো ততটা খারাপ প্রভাব পড়বে না; বরং অনেক ক্ষেত্রে ভারতের কৃষি, শিল্প এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভালো প্রভাব পড়বে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা বাড়বে। পানিচুক্তি বাতিল হলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় নদীগুলোর পানি ব্যবহার করে সেচের সুযোগ বাড়বে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলোতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা হ্রাস পাবে। পানির নতুন উৎস ব্যবহারে কৃষকরা উপকৃত হবে।
তবে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহে হস্তক্ষেপের ফলে পরিবেশগত ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে, যা জীববৈচিত্র্য ও নদীনির্ভর বাস্তুতন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। হিমালয়ের গ্লেসিয়ার দ্রুত গলনের ফলে নদীর পানির প্রবাহে পরিবর্তন আসতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে পানির সরবরাহে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে পারে। তবে পরিবেশগত ভারসাম্য ও প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্কের দিক থেকে এটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। একতরফা চুক্তি বাতিল করলে ভারতের আন্তর্জাতিক ভাবমর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা বা চাপের সম্মুখীন হতে পারে।
রাজনৈতিক প্রভাব
সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল পাকিস্তান-ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে এর প্রভাব অর্থনীতি, সমাজ, পরিবেশসহ সর্বস্তরে পরিলক্ষিত হবে। এ ছাড়াও আঞ্চলিক রাজনীতিতেও বেশ প্রভাব পড়তে পারে, যেমন চীন-পাকিস্তান মিত্রতা আরো বৃদ্ধি পাবে যা ভারতকে বেকায়দায় ফেলতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পেতে পারে এমনকি নদী-সম্পদ নিয়ে ভারত-নেপাল, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেও উত্তেজনা সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চুক্তি বাতিলের ফলে সীমান্তে সামরিক উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বাড়তে পারে। পানি নিরাপত্তার সঙ্কট পাকিস্তানের জন্য অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে, যা সামরিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদ (ওঝঝও) ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে বলেছে, সিন্ধু পানিচুক্তি বাতিল হলে যুদ্ধের সম্ভাবনা ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ভারত) রিপোর্ট করে, সীমান্তে আংশিক সঙ্ঘাতের সম্ভাবনা ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। তবে সম্ভাব্য যুদ্ধের ধরন হতে পারে সীমিত যুদ্ধ বা ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ধাঁচের আক্রমণ। পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ঝুঁকি, যেখানে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ভয়ও রয়েছে।
একান্তই যুদ্ধ হলে- দুই দেশের সম্মিলিতভাবে এক মাসের যুদ্ধে ২০ লাখ+ মানুষ মারা যেতে পারে। (স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঝওচজও)। প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শরণার্থী সঙ্কটে পড়তে পারে। নদীগুলোর দখলের জন্য বাঁধ ধ্বংস অথবা নদীদূষণের আশঙ্কা। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব ত্বরান্বিত হবে। এই যুদ্ধের ফলে চীন, আমেরিকা, রাশিয়াসহ বড় শক্তিগুলো হস্তক্ষেপ করতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদে অস্থিতিশীল হতে পারে।
মোট কথা, পানিচুক্তি স্থগিতের ফলে যুদ্ধ শুরু হলে উভয় দেশের জীবন-সম্পদ, পরিবেশ এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হবে যা কোনো দেশের জন্যই কাম্য নয়। সুতরাং এই কঠিন সম্ভাব্য সঙ্কট এড়ানোর জন্য বিকল্প সমাধান হতে পারে, দুই দেশ চুক্তির শর্তাবলি নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে আপডেট করা। আধুনিক বাস্তবতা বিবেচনায় এনে নতুন চুক্তি স্বাক্ষর; দ্বিপক্ষীয় সংলাপ পুনরুজ্জীবিত করা এবং সর্বোপরি পানি ব্যবস্থাপনাকে অরাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে আলাদা রাখা।
এছাড়াও বিরোধ এড়াতে নিরপেক্ষ ফোরাম যেমন জাতিসঙ্ঘ, বিশ্বব্যাংক বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করা যেতে পারে। পানির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত সহযোগিতার জন্য যৌথ সংস্থা গঠন করা যেতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার (বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানসহ) একটি বৃহত্তর নদীসংক্রান্ত চুক্তি করা যেতে পারে। সর্বোপরি পানিসঙ্কট মোকাবেলায় জল সংরক্ষণ ও নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে যৌথ বিনিয়োগ করা যেতে পারে। নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় সংলাপের মাধ্যমে সম্ভাব্য বিরোধগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে সমাধান করা এবং জাতীয় স্তরে পানি নিরাপত্তাকে জাতীয় নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে নীতিমালা তৈরি করা যেতে পারে।
সর্বোপরি, সিন্ধু পানিচুক্তি ছিল ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের একটি অন্যতম স্থিতিশীল ভিত্তি। এর বিলুপ্তি উভয় দেশের জন্যই বিপর্যয়কর পরিণতি বয়ে আনতে পারে। জীবন, সম্পদ, পরিবেশ এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার দিক থেকে যুদ্ধ সর্বনাশা হতে পারে। বর্তমান সঙ্কট নিরসনে কূটনৈতিক তৎপরতা এবং বাস্তবমুখী সমঝোতাই একমাত্র বিকল্প। ভবিষ্যতের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পক্ষকেই সংযম ও দূরদর্শিতা দেখাতে হবে। নতুবা এই সঙ্কট দুই দেশেরই ভবিষ্যৎকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে পারে। পাশাপাশি সঙ্কটাপন্ন করে তুলতে পারে দক্ষিণ এশিয়াকে।
লেখক : অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট