সম্পর্কের স্থিতিশীলতা নষ্টের আশঙ্কা নেই
ড. আব্দুল্লাহ হেল কাফি । সূত্র : প্রতিদিনের বাংলাদেশ, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের দিকেই গোটা বিশ্বের মনোযোগ কেন্দ্রিভূত ছিল। ওইদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেন। ২১ জানুয়ারি প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনই যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চারজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে এ তথ্য জানান ট্রাম্প নিজেই।
একই পোস্টে তিনি হাজারের বেশি কর্মকর্তাকে বরখাস্তের হুমকি দেন। ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, আগের প্রশাসনের নিয়োগ দেওয়া এক হাজারের বেশি ব্যক্তিকে চিহ্নিত ও অপসারণের লক্ষ্যে সক্রিয় প্রক্রিয়া চলমান। এই বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তাকে বরখাস্তের পেছনে ট্রাম্পের যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রকে আবার মহান করে তোলার বিষয়ে তার যে দৃষ্টিভঙ্গি, সেই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নন ওই ব্যক্তিরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচিও স্থগিতs ঘোষণা করেন সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ৯০ দিনের জন্য এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। তবে বৈদেশিক সহায়তা বন্ধের আদেশ মার্কিন তহবিলের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ দেশটির অনেক কর্মসূচি এরই মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসে তহবিল বরাদ্দ পেয়েছে। আর এসব অর্থ এরই মধ্যে বিতরণ অথবা ব্যয় করা হয়েছে।
এ ছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে আনার বিলে সই করেছেন। ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম দিনেই ট্রাম্পের নির্বাহী সিদ্ধান্তগুলো ইতোমধ্যে অনেকের মনে গুঞ্জন তুলেছে। বিশেষত, ক্ষমতা নেওয়ার আগে থেকেই তিনি অভিবাসনপ্রত্যাশী ও অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর কথাটি দৃঢ়কণ্ঠে জানিয়ে আসছিলেন। সমস্যা হলো, ট্রাম্পের প্রশাসনিক দল সঠিকভাবে তা বোঝাতে পারেনি। তবে তারা যে কাজ চালিয়ে গেছে তা স্পষ্ট।
ট্রাম্পের ক্ষমতা নেওয়ার পর আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য কেমন সময় অপেক্ষা করছে তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে সাধারণের তো বটেই, বিশেষজ্ঞদেরও। সংগত কারণেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা জরুরি। কারণ বাণিজ্যিক ও কৌশলগত কারণেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের রয়েছে বড় অংশীদারত্ব। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় রচিত হয়েছে। আদালতের রায়ে অপরাধ প্রমাণিত একজন ব্যক্তি হাজারো কটুবাক্যের মাধ্যমেও জনগণের ম্যান্ডেট আদায় করেছেন।
গত মে মাসে নিউইয়র্কের একটি জুরি ট্রাম্পকে ৩৪টি অপরাধমূলক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। অভিযোগগুলো ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রাপ্তবয়স্ক চলচ্চিত্র অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে নীরব থাকতে দেওয়া অর্থ প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত। যদিও ট্রাম্প এই সম্পর্কের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ইতঃপূর্বে নব নির্বাচিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাজা স্থগিতের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন নিউইয়র্কের ম্যানহাটন আদালতের বিচারক জুয়ান মেরচান। তিনি সেই বিচারক যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপরাধমূলক মামলার বিচার পরিচালনা করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ট্রাম্পের এই বিজয়ের পেছনে ডেমোক্র্যাটদের বিশ্বকেন্দ্রিক নীতিমালাই মূলত তাদের জন্য প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। এমন নয় যে, বাইডেন প্রশাসন কিছুই করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের সঙ্গে নির্বাহী প্রধানের বড় দূরত্ব ছিল। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রের ১২৮ বছরের নির্বাচনী ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ম্যান্ডেট পেলেন ট্রাম্প। ইলেকটোরাল, পপুলার ভোট, সাতটি সুইং স্টেট সহ সবগুলো জায়গায় রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সাফল্য পেয়েছেন। এ জায়গা থেকেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের অভিষেক বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
অথচ করোনাকালে তার নির্বাহী ব্যর্থতা বিচার করলে তাকে ইতিহাসের ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট বলতে হয়। ট্রাম্প এজন্য রাজনৈতিক অঙ্গনে আলাদা। কারণ ভাগ্য কোনোভাবে তাকে নাটকীয়তার ছোঁয়ায় রেখে যায়। এবার ট্রাম্প যে ম্যান্ডেট পেয়েছেন সেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সংকটকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। আবার এও সত্য, বিশ্বকেন্দ্রিক নীতিমালাও তার ছিল। দুটো বিষয়ে তিনি ভোটারের মনোযোগ টেনেছেন। প্রথমটি, সব ক্ষেত্রেই শান্তি প্রতিষ্ঠা আর দ্বিতীয়টা, বিশ্বে চলমান দুটো বড় সংঘাত থামানো। আমরা দেখেছি, জো বাইডেন প্রশাসন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
উল্টো তাদের মৌন সম্মতির কারণে ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেও আমরা দেখছি ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যভুক্ত না করে ওয়ার লবিকে জারি রেখেছে। তাতে মধ্যস্বত্বভোগীর মতোই অবস্থান করছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্প ইসরায়েল প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহুর ওপর যুদ্ধ বন্ধে চাপ দিয়েছেন। তিনি ইসরায়েলকে নয় বরং নেতানিয়াহুর আগ্রাসনকে চিহ্নিত করেছেন। এজন্যই মধ্যপ্রাচ্য কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যে লক্ষ্যে কাজ করছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া। সেদিক থেকে আশা করা যায়, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে ফেরার যে তাগিদ তাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন থাকবে
ট্রাম্প তার ভাষণে বলেছেনÑ ‘আই ওয়ান্ট টু বি আ পিস বিল্ডার অ্যান্ড স্টপ অল ওয়ার’। এখন দেখার বিষয় ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও তা কতটা কার্যকর হয়। এখানে বলে রাখা দরকার, বিগত দুটি বিষয়ে বিগত ডেমোক্রেটিক সরকারও বলা শুরু করেছিল। ফলে এটা ট্রাম্প সরকারের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কিছু নয়। এখন দেখার বিষয় রিপাবলিকান সরকার বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কোন নীতি গ্রহণ করে। তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রাধান্য পাবে, সে ধারণা করা অমূলক নয়। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের পূর্ণ সুবিধা তারা পাবে যখন এখানে স্থিতিশীল রাজনৈতিক শক্তি থাকবে। পশ্চিমা দেশগুলো এমনটিই চায়। কিন্তু দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে না তোলার ফলে বরাবরই বিষয়টি আমাদের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে থাকে।
ট্রাম্পের কথায় ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’। নিজের ভাষণে ট্রাম্প বলেছেনÑ ‘ডিক্লাইন অব আমেরিকা উইল স্টপ টুডে’। আমেরিকার মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা হয়েছে এই যুদ্ধ, বিভিন্ন জায়গায় সামরিক ঘাঁটি চালু রাখতে গিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষয়িষ্ণুতার ধারণাটি এখনও স্পষ্ট না। কিন্তু সমস্যা দেশটির অভ্যন্তরীণ। অবকাঠামো খাত নাজুক, দেশে উৎপাদন নেই বলা যায়। এই উৎপাদন বাইরের দেশে। এমন সময়ে ট্রাম্প স্বাস্থ্য খাতে বড় পরিবর্তন আনবেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রশক্তিদের বিনামূল্যে আর কিছু দেওয়া হবে না। এখন ওষুধের জন্য খরচ করতে হবে। এটা আমাদের জন্য একটু সমস্যার। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় অনেক জরুরি ওষুধ আমাদের কাছে আসে। তা কিনতে গেলে বাড়তি চাপ তৈরি হবে। এর মধ্যে আছে ন্যাটো।
ইউরোপকে ট্রাম্প বলেছেন, ন্যাটোর খরচে তাদের ব্যয় ৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। আমেরিকার ওপর ভরসা করে বছরের পর আর চলা যাবে না। এটা স্পষ্ট বোঝা যায়, ইউরোপ যদি ৫ শতাংশ ব্যয় বাড়ায়, তাহলে তারা আরও সক্রিয় অংশীদার হবে। কেবল আমেরিকার অনুগত হয়ে থাকবে না। এখানে প্রতিরক্ষায় তাদের ক্ষমতা বাড়া মানে আমেরিকার কথার বাইরে নিজেদের মতো সক্রিয় হওয়ার সুযোগ হবে। এর মানে, এই ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’-এর মধ্য দিয়ে পৃথিবী যে আবার মাল্টিপোলার ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে, তা ট্রাম্প গ্রহণ করে নিচ্ছেন।
আমেরিকা যেহেতু এখন আর মহান নেই, তাই এই ক্ষয় থামানো সম্ভব কেবল অংশীদারত্বের মাধ্যমে। এমনই একটা কাঠামো তৈরি করতে চাচ্ছেন ট্রাম্প। ইউরোপকে এখন ব্যয় করতে হবে। যা এত দিন তাদের পক্ষ হয়ে আমেরিকা করে আসছিল। এর কিছু নজির ইতোমধ্যে দেখা গেছে। ক্ষমতা গ্রহণের পরই ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিল বন্ধ করে দিয়েছেন। তার দাবি, এখানে আমেরিকা অনেক বেশি ব্যয় করে। অন্যরাও তো উন্নত হয়েছে, তারা দেবে না কেন? ব্যয় বেশি করলে কর্তৃত্বও বেশি থাকবে। মানে চীন তো এখন অনেক ধনী, তারা দেবে না কেন? চীন সেখানে ব্যয় বাড়ালে চীনের কর্তৃত্বও তো বাড়বে। তাহলে পরোক্ষভাবে হলেও তিনি মেনে নিচ্ছেন যে পৃথিবী আবার বহুমাত্রিক হতে যাচ্ছে। এখন এসবের কতটা ঘটবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে জনগণের ম্যান্ডেট স্পষ্ট। শান্তি ও আমেরিকাকে আবার ‘গ্রেট’ করা।
আর ট্রাম্প ফেরায় অভিবাসন প্রসঙ্গে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা হিস্পানিক অভিবাসন ঠেকানো। হিস্পানিক অভিবাসন বেড়েছে আমেরিকায়। অনেকে মনে করেন, শিগগিরই হয়তো হিস্পানিকরা হবে আমেরিকার বৃহত্তর ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ। ট্রাম্প রীতিমতো ‘বে অব মেক্সিকো’র নাম বদলে ‘বে অব আমেরিকা’ করতে চাচ্ছেন। তিনি মূলত মেক্সিকো বর্ডার নিয়েই ভাবছেন। কিন্তু দেশের অনেকেই যারা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চায় তারা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে। এমন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী বাস্তবতা আগে বুঝতে হবে।
ট্রাম্প বৈধ অভিবাসন বন্ধের কথা বলেননি। কারণ আমেরিকার অর্থনীতি, প্রযুক্তি আর গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো অভিবাসন ছাড়া টিকতে পারবে না। এই জায়গা থেকে আমাদের বিশেষ উদ্বেগের কারণ নেই। আমাদের বেশিরভাগই বৈধ অভিবাসন। বৈধ অভিবাসন পদ্ধতি থাকলে অবৈধ অভিবাসন কোনো দেশ ঠেকাতে চাইতেই পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন হওয়ার আগে ও পরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প দুটি টুইট করেছিলেন। এটা নতুন কোনো বিষয় নয়। বিগত সরকার ক্ষমতা থাকার সময়েও এ বিষয় আমেরিকার সরকার বিবেচনায় রেখেছিল। আরেকটা বিষয় যা টুইটে আছে, তা হলো ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে যাচ্ছেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এই সম্পর্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এটা স্পষ্ট রিপাবলিকান সরকার হয়তো বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচন চাইবে। ভারতে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত এ কথা আগেই বলেছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টি ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণে হয়তো তারা কিছুটা নমনীয় হতেও পারত। তবে আমেরিকার নতুন প্রশাসন হয়তো দ্রুত নির্বাচন চাইবে।
এ নিয়ে প্রথমে পশ্চিমারাও কথা বলতে শুরু করবে। আস্তে আস্তে দেখা যাবে, তারাও বিষয়টি স্পষ্ট বলতে শুরু করেছে। ফলে আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ফিরতে যে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামীর সম্ভাবনাকে ধরতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের জাতীয় স্বার্থ অক্ষুণ্ন করতে যা যা করার দরকার, সেগুলোই সামনে রাখে। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুরুত্ব বহন করে না।
ফলে আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদেও সম্পর্কের স্বাভাবিকতা বজায় থাকবে বলেই আশা করা যায়। অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার যে লক্ষ্যে কাজ করছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া। সেদিক থেকে আশা করা যায়, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে ফেরার যে তাগিদ তাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন থাকবে।