কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুত হচ্ছে ইসি

আজ অনানুষ্ঠানিক বৈঠক, আলোচনা হবে রোডম্যাপ ও অগ্রগতি নিয়ে, ভোটের তারিখ নির্ধারণ সরকারের আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পেলে - গোলাম রাব্বানী [সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১৫ জুন ২০২৫]

সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুত হচ্ছে ইসি

সরকারের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুত হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের প্রস্তুতি ও রোডম্যাপ নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশন অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার প্রথম দিনেই তারা আজ নির্বাচনি প্রস্তুতির অগ্রগতি জানতে বৈঠক করবেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা পেলেই ‘কমিশন সভা’ করবে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি। ওই বৈঠকে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হতে পারে।

 

 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে গত শুক্রবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে বৈঠক করেন।

 

 

বৈঠকে শেষে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টার কাছে আগামী বছরের রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তাব করেন। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, ওই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভালো হয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন- তিনি আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা গেলে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।

 

 

ইসি সূত্র জানিয়েছে, ভোটার তালিকা তৈরি; নির্বাচনি মালামাল কেনাকাটা; সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ; রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কার্যক্রমের অগ্রগতি জানতে আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়সহ আজকের বৈঠকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

 

 

গতকালই নির্বাচন কমিশন মৌখিকভাবে ইসি সচিবালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচনি প্রস্তুতির অগ্রগতি আজকের বৈঠকে উপস্থাপন করার জন্য। এ ক্ষেত্রে কোনো কাজের অগ্রগতি কতটুকু, তাও স্পষ্ট করে জানাতে বলা হয়েছে। সংসদীয় সীমানা নির্ধারণসংক্রান্ত কিছু জটিলতা থাকলেও তা দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করছে কমিশন।

 

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আজ (গতকাল) আমরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বসতে পারি। নির্বাচনসংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা হবে আশা করছি। সংসদ নির্বাচন নিয়ে আমাদের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) থাকবে। বছরজুড়েই আমাদের কাজ চলছে। আমরা আশা করছি, যে নির্বাচনি সময়সীমা বলা হয়েছে, তার মধ্যে আমরা (ইসি) নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুত হয়ে যাবে।

 

 

সূত্র জানিয়েছে, ২০২৬ সালে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করতে হলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ দিকে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এর পাশাপাশি এ বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ; চলতি জুনের মধ্যে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা; জুলাই-আগস্টের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

 

 

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একাধিক সম্ভাব্য তারিখ রেখেই এবারে তফসিল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচনি মালামাল কেনাকাটা থেকে শুরু করে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত সব কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা থাকবে রোডম্যাপে। সে অনুযায়ী নির্বাচনি প্রস্তুতি এগিয়ে নেবে ইসি সচিবালয়।

 

 

জানা গেছে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে নানান ধরনের সামগ্রী মুদ্রণ করতে কী পরিমাণ পেপার লাগবে, বাজেট কত হতে পারে এবং কেনাকাটা থেকে মুদ্রণে কত সময় লাগবে তা নিয়ে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন সামনে রেখে প্রয়োজনীয় কাগজ কেনাকাটা ও মুদ্রণ কাজ ভোটের আগে চার মাসের মধ্যে করার প্রস্তুতি রাখছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

 

 

সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় ১ লাখ ৬১ হাজার রিম কাগজ কেনা হয়েছিল। সেবার ৩৩ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছিল। এবার অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার রিম কেনার প্রয়োজন হতে পারে। শুধু কাগজ কেনায় ৩৬ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে। সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে ‘কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ’ অনুষ্ঠান করে তৎকালীন ইসি। এর আগে একাদশ সংসদ নিয়ে ২০১৮ সালে অক্টোবরের মাঝামাঝি কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সূচি অনুমোদন করে তৎকালীন কমিশন।