কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

সুয়েজ সংকট: বিশ্ব নেতৃত্বে অস্তিত্বের লড়াই

খন্দকার আপন হোসাইন [সূত্র : শেয়ার বিজ, ১৫ মে ২০২৫]

সুয়েজ সংকট: বিশ্ব নেতৃত্বে অস্তিত্বের লড়াই

সুয়েজের ধূসর মরুতে ১৯৫৬ সালে জš§ নেয়া সংকট, ইতিহাসের পাতায় রক্তাক্ত হস্তক্ষেপের ছায়া ফেলে। ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইসরায়েলের সম্মিলিত আক্রমণে মিসরের জাতীয়তাবাদী জ্বালানি জ্বলে উঠেছিল। আইজেনহাওয়ারের প্রশাসন তখন ঠান্ডা হাতে পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে দাঁড়াল। জাতিসংঘের মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের কণ্ঠস্বর প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে নির্ভীক ভূমিকা রাখল। ডলারের চাপে লন্ডন-প্যারিস পিছু হটে। সুয়েজ খালের জলে আমেরিকার আধিপত্যের প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠল। শীতল যুদ্ধের ছায়ায় ওয়াশিংটনের কৌশল বদলে গেল। মার্শাল প্ল্যানের সোনালি স্রোত ইউরোপকে পুনর্গঠিত করে তুলল। ট্রুমান ডকট্রিনের প্রতিশ্রুতি কমিউনিজমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলল। কোরিয়া, ভিয়েতনামে রক্তঝরা যুদ্ধের ময়দানে আমেরিকার সৈন্যরা বৈশ্বিক পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলো। কিন্তু মাটির নিচে সমাজতন্ত্রের আগুন নেভানো গেল না। কিউবার মিসাইল সংকটে কেনেডির দৃঢ়তায় বিশ্ব যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রান্তে দাঁড়াল।

 

 

 

১৯৭১ সালে ব্রেটন উডস ব্যবস্থার পতন। ডলারের স্বর্ণমান ছিন্ন। রিচার্ড নিক্সনের ঘোষণা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। পেট্রোডলারের যুগে ওপেকের সঙ্গে হ্যান্ডশেক। মধ্যপ্রাচ্যের বালিতে আমেরিকার পদচিহ্ন গভীর থেকে গভীরতর হলো। ইরানে শাহের পতন, হোস্টেজ সংকট ওয়াশিংটনের অহঙ্কারে চিরে দিল গভীর দাগ। রিগানের জমানায় ‘ইভিল এম্পায়ার’ সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাল। ফলে বার্লিন প্রাচীরের পতন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের বিচ্ছিন্নতা প্রকাশ্যে এলো। ১৯৯১ সালে বিজয়ের মালা পড়ল জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের গলায়। ‘নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ এর ঘোষণা দেয়া হলো। কিন্তু সোমালিয়ার মরুতে ব্ল্যাক হক ডাউন, বসনিয়ার গণহত্যা- নতুন বিশ্বব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা উন্মোচন করে দিল। বিল ক্লিনটনের আমলে গ্লোবালাইজেশনের জোয়ার। নাফটা, ওয়াটোর সম্প্রসারণ। তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবে সিলিকন ভ্যালি বিশ্বকে জয় করল। কিন্তু ৯/১১-এর ধোঁয়ায় আমেরিকার নিরাপত্তাবাদী চেতনা রূপান্তরিত হয়ে গেল। জর্জ ডব্লিউ বুশের ‘ওয়ার অন টেরর’। আফগানিস্তানের পাহাড়, ইরাকের মরুভূমিতে রক্তাক্ত পদযাত্রা। ইউএসএ প্যাট্রিয়ট অ্যাক্ট, গুয়ান্তানামো বেÑ স্বাধীনতার দেবী চোখে হাত বাঁধল। ইউরোপের পুরোনো মিত্ররা প্রশ্ন তুলল। পুতিনের রাশিয়া, শি জিন পিংয়ের চীন সুযোগ নিল। ২০০৮-এর অর্থসংকটে ওয়াল স্ট্রিটের লোভ বিশ্ববাজারে ধস নামাল। ওবামার ‘হোপ অ্যান্ড চেঞ্জ’ বারাকের রূপকথায় বিশ্ব আবারও উজ্জীবিত হলো।

 

 

 

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, ইরান পরমাণু চুক্তি- ওবামার বহুপাক্ষিকতাবাদ সত্ত্বেও ডেমোক্র্যাটিক দুর্বলতা প্রকাশ পেল সিরিয়ায় রাসায়নিক আক্রমণের নিষ্ক্রিয়তায়। ক্রিমিয়া দখল, দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা। আমেরিকার নেতৃত্বে বিশ্বাসে ফাটল ধরা শুরু হলো। ট্রাম্পের আগমনÑ লাল টাই, সাদা টুইটের ঝড়। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এর মন্ত্রে ন্যাটো, ইউএন-এর প্রতি অবজ্ঞা। প্যারিস চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানো, ইরান ডিল বাতিল। ট্যারিফ যুদ্ধে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাত। সবই রাতারাতি শুরু ও পাকাপোক্ত হয়ে গেল। মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর, মুসলিম নিষেধাজ্ঞাÑ আমেরিকার নৈতিক নেতৃত্বে মরীচিকা ধরাল। পুতিন-কিমের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করে নর্থ কোরিয়ায় হুমকির ডিপ্লোমেসি শুরু করলাল। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করে শেষপর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার মৃত্যুঘণ্টাই বাজিয়ে দিল। কুর্দিদের পরিত্যাগ, সিরিয়ায় রাশিয়ার প্রাধান্য ট্রাম্প যুগে মিত্র-শত্রুর পার্থক্য অস্পষ্ট থেকে স্পষ্ট করে দিল। টুইটারের ২৮০ অক্ষরে বৈদেশিক নীতিÑ বিশ্ব নেতৃত্বের পুনঃসংজ্ঞায়নে আমেরিকার ভূমিকা এখন প্রশ্নের ঘেরাটোপে। সুয়েজ থেকে ট্রাম্প ছয় দশকের পথচলা। এককালের নির্বিঘ্ন নেতৃত্ব আজ বিতর্কিত। বৈশ্বিক মঞ্চে চীনের উত্থান, রাশিয়ার পুনরুত্থান। জলবায়ু, মহামারি, সাইবার যুদ্ধÑ নতুন শতাব্দীর সংকটে বহুপাক্ষিক সমাধানের ডাক। আমেরিকা কি নেতা নাকি অংশীদার? প্রশ্নটি এখন খোলা। ইতিহাসের গর্ভেই উত্তর লুকিয়ে। সুয়েজের বালি আর ট্রাম্পের টুইটÑ দুই যুগের মধ্যেকার দূরত্ব যেন আকাশ-পাতাল। বিশ্ব এখন অপেক্ষায় কে ধরবে নেতৃত্বের হাল, কে লিখবে নতুন ইতিহাস?

 

 

 

আইজেনহাওয়ারের ডকট্রিনে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক হস্তক্ষেপের অধিকার। সোভিয়েত প্রভাব প্রতিহত করতে অস্ত্রের ঝনঝনানি। কিন্তু ভিয়েতনামের জঙ্গলে হারিয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্রের মহত্ব। প্রতিবাদী তরুণদের কণ্ঠে ‘মেক লাভ, নট ওয়ার’। ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারিতে নিক্সনের পতন- গণতন্ত্রের মুখোশ খসে পড়ল। কার্টার-এর সময়ে ইরানি বিপ্লবের আগুনে আমেরিকার আত্মবিশ্বাস ছাই। রিগানের স্টার ওয়ার্স উদ্যোগ মহাকাশে সামরিকায়নের হাতছানি। গর্ভাচেভের গ্লাসনস্ত-পেরেস্ত্রোইকা সোভিয়েতকে নরম করল। বার্লিন প্রাচীর ভাঙার মুহূর্তে বুশের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ। ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে বহুজাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব সাময়িক ঐক্যের ছবি। কিন্তু সোভিয়েত পতনের পর আমেরিকার একক পরাশক্তি হওয়ার গর্বে ফাটল ধরাল বিশ্বায়নের চাপ। ক্লিনটনের নেতৃত্বে অর্থনীতির উত্থান বাজেট উদ্বৃত্ত, শেয়ারবাজারের উল্লাস। কিন্তু মোনিকা লেভিনস্কি কেলেঙ্কারিতে নৈতিকতার মাপকাঠি ধস। চীনের সঙ্গে পিএসটিআর চুক্তি বিশ্বায়নের ফসল কাটা। ইয়ুগোস্লাভিয়ার বোমাবর্ষণে ন্যাটোর ভূমিকা মানবাধিকার রক্ষার নামে হস্তক্ষেপের নতুন নজির। কোসোভো, রুয়ান্ডা নিরাপত্তার দায়িত্বে আমেরিকার দ্বিধা।

 

 

৯/১১-এর ধ্বংসস্তূপে পেন্টাগনের প্রতিশোধ স্পৃহা। তালিবানবিরোধী জোটে পাকিস্তান-সৌদির সমর্থন। কিন্তু আল-কায়েদার ভূত ছড়াল ইরাক-আফগান সীমান্তে। ‘অ্যাক্সিস অফ ইভিল’ -এ গণবিধ্বংসী অস্ত্রের অস্তিত্ব প্রমাণিত হলো না। ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে অনাস্থার বীজ বপন করল বুশ। অবামার কায়রো ভাষণ- মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সেতুবন্ধনের প্রচেষ্টা। গুয়ান্তানামো বন্ধের অঙ্গীকার অপূর্ণ রয়ে গেল। ড্রোন হামলায় নাগরিক হতাহত নৈতিক দ্বন্দ্বে জর্জরিত নীতিনির্ধারকরা। আরব বসন্তে ওয়াশিংটনের দ্বিচারিতা গণতন্ত্রের সমর্থন নাকি স্বার্থরক্ষা? মিসরে মুরসির পতন, সিসির উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের নীরব সম্মতি। স্নোডেনের ফাঁস করা ডকুমেন্টস এনএসএ এর গোপন নজরদারির জাল। বিশ্বজুড়ে মিত্র-শত্রু নির্বিশেষে আস্থাহানির ঢেউ। সাইবার যুদ্ধে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ২০১৬ নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ে সংশয় সৃষ্টি করল। ‘ফেক নিউজ’-এর যুগে সত্যের সংজ্ঞা ম্লান হয়ে গেল। ডেমোক্রেসি ইনডেঞ্জার্ড গণতন্ত্রের মন্দিরে চিড় ধরল।

 

 

 

ট্রাম্পের অভিষেকে ‘আমেরিকান কার্নেজ’ এর প্রতিচ্ছবি। বৈশ্বিক জোটে অনাস্থা, বিলাসী জাতীয়তাবাদের উত্থান। প্যারিস চুক্তি প্রত্যাখ্যান জলবায়ু সংকটে নেতৃত্বের শূন্যতা। ডব্লিউএইচও, ইউনেস্কো থেকে সরে দাঁড়ানো বহুপাক্ষিকতাবাদের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেল। কভিড+১৯ মহামারিতে ট্রাম্পের অসংলগ্ন প্রতিক্রিয়া বিশ্বস্বাস্থ্যে নেতৃত্বের দেউলিয়াত্ব ঘোষণা করল। ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটে ট্রাম্পের পুতিন-প্রীতি। ন্যাটোর বাজেট বিতর্ক সামরিক জোটে ফাটল। সিরিয়ায় কুর্দি মিত্রদের পরিত্যাগ বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ। ইরানে সোলেইমানি হত্যা- যুদ্ধের প্রান্তে টালমাটাল সম্পর্ক। ট্রাম্পের ডিপ্লোমেসি- অপ্রত্যাশিত সাফল্য নাকি অস্থিরতার বীজ? ২০২০-এর নির্বাচনী বিভক্তি বাইডেনের জয়ে বৈশ্বিক স্বস্তি আনল। কিন্তু ক্যাপিটলে দাঙ্গা গণতন্ত্রের ভিত্তি কেঁপে উঠল। আফগানিস্তান থেকে পলায়ন ২০ বছরের যুদ্ধের পরাজয়ের মোহর। টিকটকের উত্থান প্রযুক্তি যুদ্ধে চীনের জয়। সেমিকন্ডাক্টর সংকট বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে আমেরিকার নির্ভরতা বৃদ্ধি পেল।

 

 

বাইডেনের বহুপাক্ষিকতাবাদের পুনরুজ্জীবন প্যারিস চুক্তিতে ফের ফিরে এলো। ন্যাটোর পুনরায় অঙ্গীকার করে ইউরোপের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ে তুলল। কিন্তু আফগানিস্তানের ধ্বংসস্তূপে আমেরিকার ইমেজ ক্ষয়িষ্ণুই হয়ে রইলো। চীনের সঙ্গে টেনশন- তাইওয়ান প্রণালিতে যুদ্ধজাহাজের মাতামাতি। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ শীতল যুদ্ধের স্মৃতিকে জাগ্রত করল। মহামারি, জলবায়ু, মুদ্রাস্ফীতি ত্রিমুখী সংকটে জর্জরিত বিশ্ব। আমেরিকার নেতৃত্ব এখন অংশীদারির খেলায়। জি-৭, জি-২০ তে চীনের প্রভাব নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ব্রিকস এর উত্থান পশ্চিমা কর্তৃত্বের বিকল্প সন্ধান। সুয়েজের সময়ের আমেরিকা ছিল নির্মাতা। ট্রাম্প-পরবর্তী যুগে সে মেরামতকারী। জাতীয়তাবাদ বনাম গ্লোবালিজম নতুন যুগের দ্বন্দ্ব। ইতিহাসের চাকা ঘুরছে কিন্তু দিকনির্দেশনা অস্পষ্ট। নেতৃত্বের মশাল এখন বহু হাতে।

 

 

 

স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তি ছিল একচেটিয়া আধিপত্যের স্বপ্ন। আজকের বহুমেরু বিশ্বে তা ম্লান। ফাইভ-জি প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। স্পেস এক্সের নক্ষত্রপুঞ্জে পৌঁছানোর প্রতিযোগিতা। চন্দ্রাভিযানে চীনের দুরন্ত পদক্ষেপ। সুয়েজ সংকটে ইউরোপের দুর্বলতা ছিল মহা সুযোগ। আজ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী। ইইউ-চীন বিনিয়োগ চুক্তি নতুন অর্থনৈতিক অক্ষ। ন্যাটো জোটে জার্মানির সামরিক ব্যয় মিত্রতার মধ্যে উত্তেজনা। লাতিন আমেরিকায় বামপন্থার জোয়ার যুক্তরাষ্ট্রের পিঠ দেয়ালে। নিকারাগুয়া, ভেনিজুয়েলা ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ। কিউবার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের প্রচেষ্টা অসম্পূর্ণ। ড্রাগ যুদ্ধে পরাজয় কলম্বিয়ায় কোকেন উৎপাদন রেকর্ড। আফ্রিকায় চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট উদ্যোগ ঋণের জালে জড়িত রাষ্ট্রগুলো। আমেরিকার আগোয়া চুক্তি ম্লান। রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপ নতুন প্রক্ষেপকের ভূমিকা পালন করা শুরু করল। ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সাহারা অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করল।

 

 

 

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল চীনের মালাক্কা প্রণালি অবরোধে ভয় ধরিয়ে দেয়। কোয়াড জোটে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সম্পৃক্ততা ও দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র-চীন নৌ-মাতামাতি যেন একইসূত্রে গাঁথা। তাইওয়ান প্রণালীতে টেনশনÍতৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রহেলিকা। জলবায়ু ন্যায়বিচারের দাবিতে গ্রেটা থুনবার্গের কণ্ঠ। আমেরিকার জ্বালানি নীতি জীবাশ্ম ইন্ধনে সমর্থনযোগ্য। নবায়নযোগ্য শক্তির দাবি। টেক্সাসের তুষারপাত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণ। ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল প্রকৃতির প্রতিশোধ। মেটাভার্সের ভার্চুয়াল রাজনীতি নতুন প্রজšে§র আদর্শ হয়ে উঠে। টুইটার-ফেসবুকের সেন্সরশিপ বিতর্কমুক্ত বাক স্বাধীনতার সীমারেখায় মাইলফলক সৃষ্টি করে। সুয়েজ সংকট থেকে ট্রাম্পের যুগ এই দীর্ঘ পথচলায় স্পষ্টভাবে ধরা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব নেতৃত্বের রূপান্তর। এক সময় যে দেশ ছিল স্বাধীনতার প্রতীক, আজ তার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে মিত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছেই। সময় বদলেছে, নেতৃত্বের ধরনও বদলেছে। কিন্তু দুনিয়া এখনও অপেক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কি আগের মতো নেতৃত্বে ফিরবে, নাকি নতুন শক্তিগুলো ভাগ করে নেবে সেই আসন? ইতিহাস বলবে শেষ কথা। তবে আজকের দুনিয়ায় নেতৃত্ব মানে শুধু শক্তি নয়, দায়িত্বও। যুক্তরাষ্ট্র কি সেই ভার নিতে প্রস্তুত? এ প্রশ্নটিই এখন সবচেয়ে জরুরি।

 

 

লেখক: শিক্ষক, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুল, শহীদ সালাহউদ্দিন সেনানিবাস ঘাটাইল, টাঙ্গাইল।