ট্রাম্পের পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে
আহসান রাজীব বুলবুল । সূত্র : দেশ রূপান্তর, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। যুদ্ধবিগ্রহ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক ইনফ্লেশন, দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জীবনযাত্রার মানবৃদ্ধি, বেকারত্ব - সব মিলিয়ে বিশ্ব এক কঠিন সময় পার করছে। স্বাভাবিকভাবেই যেখান থেকে বাংলাদেশ মুক্ত নয়। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক নতুন নতুন সিদ্ধান্তের কারণে প্রভাব পড়ছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ এখন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। যার মধ্যে কানাডা, মেক্সিকো উল্লেখযোগ্য। কানাডার পণ্যের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্যারিফ আরোপিত হওয়ায় কানাডার সাধারণ নাগরিকদের খরচ বছরে উনিশশ ডলার বেড়ে যাবে। কানাডার চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে কানাডার অর্থনীতির জিডিপি ২.৬ শতাংশ সংকুচিত হবে।
হোয়াইট হাউজের নিয়মিত প্রেস বিফ্রিংয়ে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লাভিট সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন যে, কানাডার পণ্যের ওপরে ২৫ শতাংশ ট্যারিফ ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হচ্ছে। এরই মধ্যে যা কার্যকর হয়ে গেছে। কানাডা এবং মেক্সিকো এই দুই দেশের পণ্যের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ এবং চায়নার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ হারে ট্যারিফ আরোপিত হবে। কানাডার ফেডারেল সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে, এখন পর্যন্ত তারা কোনো অফিসিয়াল অর্ডার বা লেটার পায়নি।
তবে কানাডার সরকারের পক্ষ থেকে ইউএস বর্ডারের সঙ্গে বিভিন্ন আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার দল, কেবিনেটের সদস্য এবং কানাডার বিভিন্ন প্রদেশের প্রিমিয়ারদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ ও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে, কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ট্যারিফ প্রতিরোধ করা যায়? ইতিমধ্যেই কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাবলিক সেফটি মিনিস্ট্রার ওয়াশিংটনে অবস্থান করে রিপাবলিকান ল’ মেকারদের কনভিন্স করার জন্য আলাপ-আলোচনা করছেন।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউজের প্রতিনিধি কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সাংবাদিকদের বলেন, তার উচিত ছিল সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলা, হোয়াইট হাউজকে ফোন দেওয়া। কিন্তু তিনি তা না করে পত্রপত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন, পাল্টা ব্যবস্থা নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এসব না করে তিনি সরাসরি কথা বলতে পারতেন। ট্যারিফ আরোপিত হওয়ার ব্যাপারে হোয়াইট হাউজের প্রতিনিধি আরও বলেন, অবৈধ ফেনটানিল ড্রাগ এবং অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে কানাডা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হয়েই ব্যবস্থা নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব অনুযায়ী, ফ্যানটানিল ড্রাগ বেশি ব্যবহারের কারণে বছরে আমেরিকাতে এক লাখেরও বেশি লোক মারা যায়। তবে কানাডা সরকার বলছে যে, নির্দিষ্ট যে পরিমাণ ফেনটানিল ড্রাগ আমেরিকায় যায় তার লেস দ্যান ওয়ান পারসেন্ট কানাডা বর্ডার দিয়ে যাচ্ছে। মেজরিটি যাচ্ছে মেক্সিকো বর্ডার দিয়ে। ফেনটানিল ড্রাগ মূলত আসে চীন থেকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ট্রেডের ক্ষেত্রে কানাডা এবং মেক্সিকো উভয় দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে, কাজেই একটা ব্যবস্থা নিতেই হবে।
হোয়াইট হাউজের প্রতিনিধি বলেন, এটা কানাডার বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। এই লেখা তৈরি করা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত কানাডার কোন কোন পণ্যের ওপরে ট্যারিফ আরোপিত হবে, তা স্পষ্ট করে জানায়নি। কানাডার অয়েলের ওপরে ট্যারিফ আরোপ করবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই অফিস অর্ডার হওয়ার পর তা জানা যাবে। অন্যদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকার তৈরি আছে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে। তবে তা হবে যুক্তিসঙ্গত। ট্যারিফ আরোপিত হওয়ার ফলে কানাডা পাল্টা ব্যবস্থা নিলে, অবধারিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিও সংকুচিত হবে। আমেরিকার হিসাবে জানা যাচ্ছে, এর ফলে তাদের মোট জিডিপির ১.৬ শতাংশ সংকুচিত হবে।
অন্যদিকে আমেরিকা ও কানাডার বর্ডারে প্রতিদিন গড়ে ৩.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য সীমান্ত পারাপার হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪টি অঙ্গরাজ্যের সবচাইতে টপ এক্সপোর্ট ডেস্টিনেশন হচ্ছে কানাডা। ফলে কানাডা যদি পাল্টা ব্যবস্থা নেয় তাহলে আমেরিকার অর্থনীতি ও নাগরিকদেরও একই অবস্থা হবে। অর্থনৈতিকভাবে আমেরিকার নাগরিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ইকোনমিক ডেটা অনুযায়ী জিডিপির সাইজে নবম বৃহত্তম অর্থনীতি হচ্ছে কানাডা, এর ২.১৬ ট্রিলিয়ন হচ্ছে মোট ইকোনমি। অপরদিকে আমেরিকার জিডিপি হচ্ছে ২৫.৪৩ ট্রিলিয়ন।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে। এ ছাড়া নতুন সাহায্য অনুমোদনও বন্ধ রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও বিদেশি দূতাবাসগুলোতে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। তবে জরুরি খাদ্য সহায়তা এবং ইসরায়েল ও মিসরে সামরিক সহায়তা এ সিদ্ধান্তের বাইরে রয়েছে। বিবিসি বলেছে, দেশটির ফাঁস হওয়া অভ্যন্তরীণ নথি থেকে সম্প্রতি এমন তথ্য জানা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন।
এরপরই বিদেশি সহযোগিতা বন্ধের বিষয়টি সামনে আসে। ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, আগামী ৯০ দিনের জন্য সব মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যেসব বৈদেশিক সহযোগিতা স্থগিত করা হয়েছে সেগুলো বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নোটিসে উন্নয়ন সহায়তা থেকে সামরিক সহায়তা পর্যন্ত সবকিছুর ওপর প্রভাব পড়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এ স্থগিতাদেশ জরুরি খাদ্য সহায়তা এবং ইসরায়েল ও মিসরের জন্য সামরিক তহবিলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
ফাঁস হওয়া নথির বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে। জানা যাচ্ছে, পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নতুন তহবিল অনুমোদিত হবে না বা বিদ্যমান কোনো চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না বলে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ পর্যালোচনা শেষ না হয় একই সঙ্গে চলমান প্রকল্পের কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পর্যালোচনার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট চুক্তির শর্তানুযায়ী, কর্মকর্তারা যেন অনতিবিলম্বে কাজ বন্ধের নির্দেশনা জারি করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন পররাষ্ট্রনীতি নিশ্চিত করতে সব বিদেশি সাহায্যের বিস্তারিত পর্যালোচনা ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এই পর্যালোচনা নিশ্চিত করবে যে, সব সাহায্য যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষা করছে কী না? তিনি আরও বলেন, বিদেশে আমাদের ব্যয় শুধু তখনই হওয়া উচিত, যদি তা আমেরিকাকে নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক সিনিয়র কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই নোটিস যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে বিদেশি সাহায্য কর্মসূচির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশ্ব জুড়ে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ার কথাটি একবার ভাবুন এটি অনেক বড় একটি বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন জশ পল। তিনি ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত অস্ত্র সরবরাহে কংগ্রেসের সম্পর্ক দেখভাল করতেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইউএসএইড মিশনের সাবেক পরিচালক ডেভ হার্ডেন বিবিসিকে বলেন, এই পদক্ষেপ ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ যা বিশ্ব জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে মানবিক এবং উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচিগুলোকে স্থগিত করে দিতে পারে। তিনি জানান, বিদেশি সহায়তা বন্ধের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পানীয়, স্যানিটেশন এবং আশ্রয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পে পড়তে পারে।
এটি শুধু সহায়তা স্থগিতই নয় বরং ইতিমধ্যেই দেশটির অর্থায়নে চলমান চুক্তিগুলোর কাজ বন্ধেরও নির্দেশ প্রদান করে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও স্বাক্ষরিত নথিতে সহায়তা স্থগিতের পক্ষে যুক্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমান বিদেশি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি কার্যকর এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কি না এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, তা মূল্যায়ন করা অসম্ভব। তবে জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য তিনি ছাড়পত্র জারি করেছেন।
অর্থাৎ গাজা ও অন্যান্য যেসব জায়গায় খাদ্যসংকট চলছে, সেখানে জরুরি খাদ্য সহায়তা অব্যাহত থাকবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্রবিরতির পর মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সুদানের মতো বিশ্ব জুড়ে খাদ্যসংকটের ঘটনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে। মার্কিন সরকারের নীতিতে নিজের প্রভাব রাখতে প্রেসিডেন্টদের মূল হাতিয়ার এক্সিকিউটিভ অর্ডার বা নির্বাহী আদেশ। ক্ষমতা নেওয়ার পর সেই হাতিয়ার ব্যবহারে এক মুহূর্তও দেরি করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুরুতেই একশর বেশি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার দেওয়া তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র ২০২৩ সালে প্রায় ১৮০ দেশে ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তা কেবল যে মানবিক সহায়তা তা নয়, বরং এর উদ্দেশ্য বহুবিধ। এটা বলা যেতে পারে যে, আমেরিকার অর্থ সহায়তা হয়তো চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ‘বিদেশে আমাদের ব্যয় শুধু তখনই হওয়া উচিত, যদি তা আমেরিকাকে নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করে।’
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৈদেশিক সহায়তাসংক্রান্ত ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশকে প্রতি বছর দেওয়া সহায়তার পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। এর আগের বছরগুলোতে আড়াইশ থেকে তিনশ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটা প্রায় ৪৯০ মিলিয়ন ডলার। ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা ইউএসএইডের তথ্য বলছে, এই অর্থ যেসব খাতে ব্যবহৃত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে খাদ্যনিরাপত্তা ও কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, পরিবেশ ও জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের জরুরি সহায়তার জন্যও বরাদ্দ রয়েছে এতে।
অন্যান্য বরাদ্দ বন্ধ হয়ে গেলেও, রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও পুষ্টি কার্যক্রমের অর্থায়ন বজায় থাকবে, ইউএসএইডের বরাতে এমনটি জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। কর্মসূচির ব্যাপ্তি ও বিপুল কর্মী সংখ্যার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে পরিচিত ব্র্যাক। বাংলাদেশভিত্তিক সংস্থাটির কাজ রয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর বাংলাদেশসহ মোট চারটি দেশে নয়টি কর্মসূচি স্থগিত করেছে সংস্থাটি। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, ‘বাংলাদেশে মার্কিন অর্থায়নের ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করেছেন তারা। এর মধ্যে তিনটি প্রোজেক্ট সরাসরি আমরা বাস্তবায়ন করি, তিনটি অন্য এনজিও দিয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের তহবিলের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশের আরেকটি উন্নয়ন সংস্থার একজন কর্মকর্তা তার এবং প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘তাদের দুটি প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মীদের কয়েকজনকে হোম অফিস করতে বলা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই একটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সবার মধ্যে।’ অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে যে চাপের সম্মুখীন করেছে, ভবিষ্যতে তা আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। মূলত বেকারত্বই বিভিন্ন দেশের সাধারণ মানুষকে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলাম লেখক