উন্নত বাংলাদেশ গঠনে : শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রদর্শন
মো. ইলিয়াস হোসেন [সূত্র : প্রতিদিনের বাংলাদেশ, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫]

বাংলাদেশের রাষ্ট্রগঠনের ইতিহাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এক আলোচিত এবং বিতর্ক-উত্তীর্ণ রূপকার। তিনি শুধু একজন সামরিক কর্মকর্তা বা রাষ্ট্রনায়ক নন, বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পুনর্জাগরণ, বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশ এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর পুনর্নির্মাণে অসাধারণ ভূমিকা রাখা একজন দূরদর্শী নেতা। তার উত্থান, রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি আজও বাংলাদেশের রাষ্ট্রজীবনে আলোচনার কেন্দ্রে।
২৫ মার্চের গণহত্যার পর জাতি যখন নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে, তখন চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমানের সেই ঐতিহাসিক স্বাধীনতার ঘোষণা জাতিকে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে নতুন শক্তি দেয়। তার কণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বৈশ্বিক স্বীকৃতি পেতে সহায়তা করে। অতঃপর ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।
তবে স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র পরিচালনায় দুর্বলতা, অরাজকতা, একদলীয় শাসন, অর্থনৈতিক ধস ও দুর্নীতির বিস্তার-সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে অচল করে দিতে থাকে। ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান দেশে প্রত্যাবর্তন করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত জাসদের বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, গুম, হত্যা, খাদ্য গুদাম-পাটগুদামে আগুন, রাস্তাঘাটের যানবাহন ধ্বংস, থানা লুটসহ আওয়ামী লীগের নিজ দলের নেতাদের লুটপাট, চোরাচালান এবং ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি কারণে অতিষ্ঠ হয়ে ১৯৭৪ সালের ২৮ ডিসেম্বরে শেখ মুজিবুর রহমান দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) কায়েম করেন। এতে বাকস্বাধীনতাসহ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব হয়, যা সাধারণ জনগণ মেনে নিতে পারে নাই। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর তরুণ সেনাবাহিনীর প্যারালাল রক্ষীবাহিনী তৈরি করে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বিচারিতার আচরণ করেন। ওই সময়ে রক্ষীবাহিনী ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ নানাবিধ অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।

রক্ষীবাহিনী প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে বলে আন্থনি মাসকারেনহাসের গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। এতসব ঘটনায় সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরেও ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পরিস্থিতি সামলে নিতে শেখ মুজিব ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি বাতিল করে রাষ্ট্রপতি-শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে নিজেই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং একক ক্ষমতার অধিকারী হন। পরবর্তী ঘটনা আমরা কমবেশি সবাই জানি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় নিগৃহীত সামরিক অফিসার দ্বারা বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। ফলে দেশজুড়ে রাজনৈতিক শূন্যতা, প্রশাসনিক ভাঙন, বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতার পালাবদলও চলতে থাকে। প্রথমে মোশতাক সরকার, তারপর ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফের সামরিক নেতৃত্ব, ইত্যাদির কারণে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
৭ নভেম্বর তারিখে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টসহ দেশের বিভিন্ন সেনা স্থাপনায় ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতে দেশের ইতিহাসে এক অনন্য ও নাটকীয় মোড় আসে, সংঘটিত হয় তাৎপর্যপূর্ণ সিপাহি-জনতার এক ঐতিহাসিক বিপ্লব। এই বিপ্লবের মূল স্লোগান ছিলÑ ‘সৈনিক-জনতার ঐক্য’। অনেকেই একে ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’ বলে আখ্যা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই দিনটিকে তাই জাতীয় ঐক্য, শৃঙ্খলা ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের এই দিনটি শুধু একটি সেনা বিদ্রোহের স্মৃতি নয়, বরং এক নতুন রাজনৈতিক দিকনির্দেশনার জন্মদিন। সেই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই আবির্ভূত হন এক নতুন নেতৃত্ব, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, যিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা, যার দায়িত্ববোধ ও দৃঢ়তায় দেশ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক মুক্তি ও জাতীয় আত্মপরিচয় পুনর্গঠনে নতুন দিকনির্দেশনা পায় এবং দেশ নতুন স্থিতির পথে অগ্রসর হয়। সামরিক-রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়েই একজন সংস্কারক, রাষ্ট্রপুনর্গঠক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিকল্প হিসেবে তিনি আত্মপ্রকাশ করেন, যার রাষ্ট্রদর্শন ও বাস্তববাদী পদক্ষেপ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে।
জেনারেল জিয়া সামরিক বাহিনীর মধ্যেও একজন দৃঢ়, সৎ ও পেশাদার অফিসার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নেতৃত্বে চট্টগ্রামে স্বাধীনতার ঘোষণা এবং পরবর্তী সময়ে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে তার ভূমিকা ছিল গৌরবময়। দেশ যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বহীন, প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়া, অর্থনীতি বিপর্যস্ত, ঠিক ওই সময়ে জেনারেল জিয়ার আগমন ছিল অনেকটা উদ্ধারকের মতো। তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, প্রশাসনে স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় ঐক্যের বার্তা প্রদান। তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ দেশকে পুনর্গঠন করা, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার।’ একজন চৌকস এবং বুদ্ধিদীপ্ত সেনা কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ৭ নভেম্বরের ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতি অত্যন্ত দক্ষতা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করে সেনাবাহিনীর মধ্যে আস্থা অর্জন এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, কারণ এটি ছিল একদিকে সেনা-জনতার ঐক্যের প্রতীক, অন্যদিকে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সূচনা। ৭ নভেম্বর-পরবর্তী সময়েই জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন।
১৯৭৫ সালের পূর্ববর্তী সময়কালে একদলীয় বাকশাল পদ্ধতিতে গণতন্ত্র কার্যত স্থগিত ছিল। জেনারেল জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৭৭-৭৮ সালে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র’ পুনঃপ্রবর্তিত হয়। রাজনীতিতে নতুন দলসমূহ আত্মপ্রকাশের সুযোগ পায়, সংবাদপত্রে সেন্সরশিপ শিথিল হয় এবং সাধারণ জনগণের মতপ্রকাশের পথ খুলে দেওয়া হয়। জেনারেল জিয়া নিজে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। এই পুনর্গঠিত রাজনৈতিক পরিবেশে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে জনগণের ভূমিকা পুনরায় প্রতিষ্ঠা পায়। জেনারেল জিয়ার শাসনামলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ ধারণার প্রবর্তন।
তার সময়েই প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিচয়ের ধারণায় বড় ধরনের রূপান্তর ঘটে। তিনি ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ তত্ত্ব প্রবর্তন করে বাঙালিত্বের ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক সীমা ছাড়িয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রীয় পরিচয় নির্ধারণ করেন। ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত সময়কালে রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল, যা বাংলাদেশকে ভারতের আঞ্চলিক প্রভাব বলয়ে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছিল বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন। জেনারেল জিয়া এই ধারণায় পরিবর্তন এনে বলেন, আমরা কেবল বাঙালি নই, আমরা বাংলাদেশিÑ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক। এই ধারণার মাধ্যমে তিনি ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি ও ভৌগোলিক বাস্তবতার সমন্বয়ে একটি নতুন জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ নিজেদের এক স্বতন্ত্র পরিচয়ে দেখতে শুরু করেÑ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে, যেখানে আত্মমর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বার্থই সর্বোচ্চ।
প্রেসিডেন্ট জিয়ার অন্যতম বড় অবদান ছিল অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ। যুদ্ধবিধ্বস্ত ও আমলাতান্ত্রিকভাবে জটিল রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে তিনি দেশকে বাস্তববাদী অর্থনীতির পথে চালিত করেন। তার নীতি ছিলÑ ‘উৎপাদনই উন্নয়নের মূল’। তার সময়ে কৃষিক্ষেত্রে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সার, বীজ, সেচ ও কৃষিঋণ সহজলভ্য করা হয়। কৃষকদের উৎসাহ দিতে ‘প্রতি ইঞ্চি জমি চাষযোগ্য করার’ কর্মসূচি চালু হয়। শিল্প ও বাণিজ্যে বেসরকারি খাতের ভূমিকা বৃদ্ধি পায়; সরকারি মালিকানাধীন অনেক প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণ করা হয়। বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে নীতিগত সংস্কার আনা হয়। একই সঙ্গে গ্রামীণ উন্নয়নে ‘গ্রামীণ উন্নয়ন বোর্ড’ ( বিআরডিবি) পুনর্গঠন, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি এবং স্বনির্ভরতাভিত্তিক পল্লী উন্নয়ন মডেল চালু হয়। উপজেলাভিত্তিক প্রশাসন কাঠামোর ধারণা পরবর্তীকালে তার নীতি থেকেই জন্ম নেয়।
এই বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নতুন গতিপথে নিয়ে যায়, যার ফল আমরা পরবর্তীকালে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দেখতে পাই। বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রেও আঞ্চলিক ভারসাম্য ও স্বাধীন কূটনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ নীতি গ্রহণ করেছিলেন। তার সময়েই দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান, ভারত, চীন এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বিত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব হয়। বিশেষ করে :
১. মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়া, যার ফলেই রেমিট্যান্স অর্থনীতি বিকশিত হয়।
২. জাতিসংঘে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং শান্তিরক্ষী কার্যক্রমের ভিত্তি তৈরি হয়।
উন্নয়ন চিন্তার বীজ ‘আত্মনির্ভর বাংলাদেশ’Ñ এই চেতনা কেবল প্রেসিডেন্ট জিয়ার নেতৃত্বেই সম্ভব হয়েছিল। তার সময়েই দেশ প্রথমবারের মতো আত্মনির্ভর উন্নয়ন ভাবনার দিকে মনোযোগী হয়। তার জনপ্রিয় স্লোগানÑ ‘বিশ্বাস, শৃঙ্খলা, কর্ম’ কেবল প্রশাসনিক নীতি নয়Ñ একটি জাতীয় চরিত্র নির্মাণের আহ্বান ছিল। তিনি মনে করতেন, রাষ্ট্রকে চলমান রাখতে রাজনৈতিক স্থিতি ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা দুই-ই প্রয়োজন। ফলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারে জনসম্পৃক্ততা এবং উৎপাদনমুখী অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়, যার প্রতিফলন আমরা পরবর্তী তিন দশকে দেখেছি। তবে ৭ নভেম্বরের ঘটনাকে ঘিরে কিছু বিতর্কও রয়েছে। কেউ একে ‘মুক্তি সেনাদের আত্মপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন, আবার অনেকে মনে করেন এটি ছিল ক্ষমতার পুনর্বিন্যাস মাত্র। কিন্তু বাস্তবতা হলোÑ অস্থির রাষ্ট্রব্যবস্থাকে তিনি স্থিতিশীল করে একটি কার্যকর প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন। তার আমলে ‘স্বাধীনতার পরিধি’ কেবল রাজনৈতিক নয়Ñ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক বাস্তবতায় প্রসারিত হয়। পরবর্তীকালের উন্নয়ন, গণতন্ত্রের বিকাশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের পরিচিতির মূল বীজ রোপিত হয়।
সুতরাং বলা যায়, ৭ নভেম্বরের সেনা বিদ্রোহ কেবল ইতিহাসের এক বেদনাদায়ক অধ্যায় নয়, বরং তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচনাবিন্দু, যার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক, দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়কÑ জেনারেল জিয়াউর রহমান।