উত্তেজনার মধ্যেই কানাডা সফরে যাচ্ছেন রাজা চার্লস
[সূত্র : কালের কণ্ঠ, ২৬ মে ২০২৫]

ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ২৬-২৭ মে কানাডা সফরে যাচ্ছেন। এই সফর এমন একটা সময়ে হচ্ছে, যখন কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন এবং কানাডিয়ান পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন।
৭৬ বছর বয়সী এই রাজা ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন।
তার এই ভাষণের মাধ্যমে কানাডার নতুন সংসদের সূচনা হবে এবং সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে।
তবে কানাডাকে ‘৫১তম মার্কিন অঙ্গরাজ্য’ বানানোর বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যে কিছু বলেননি ব্রিটিশ রাজা চার্লস। কমনওয়েলথের অংশ হিসেবে তিনি কানাডারও রাষ্ট্রপ্রধান। অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাজপরিবারের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবেই পরিচিত।
ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘ এক বছর লড়াই করা রাজা চার্লস কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির আমন্ত্রণে ২৭ মে কানাডার পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরুর দিনে ‘থ্রোন স্পিচ’ (সিংহাসনের ভাষণ) দিতে সম্মত হয়েছেন। এই ভাষণে নতুন মধ্য-বামপন্থী সরকারের অগ্রাধিকারের দিকনির্দেশনাগুলো তুলে ধরা হবে। চার্লসের সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন রানি ক্যামেলিয়া।
বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ব্রিটিশ রাজা ও রানি এই সফর নিয়ে খুবই আশাবাদী।
যদিও এটি সংক্ষিপ্ত, তবে আমরা আশা করছি তা হবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।’
অন্যদিকে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজা চার্লসের ভাষণ ‘কানাডাকে শক্তিশালী করে তোলার সরকারের পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক সম্মান, যা আমাদের সময়ের গুরুত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
সাধারণত এই ভাষণ পাঠ করেন গভর্নর জেনারেল, যিনি কানাডায় ব্রিটিশ রাজার প্রতিনিধিত্ব করেন। সর্বশেষ ১৯৭৭ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ নিজে কানাডায় এই ভাষণ দেন।
রাজা চার্লসের এটি ২০তম কানাডা সফর, তবে সিংহাসনে আরোহণের পর প্রথম। রানি ক্যামেলিয়ার ষষ্ঠ সফর এটি, তবে রানি হিসেবে তিনিও যাচ্ছেন প্রথমবার।
সোমবার দুপুরে অটোয়ার ল্যান্সডাউন পার্কে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ সফর শুরু হবে, যেখানে কানাডার বহুজাতিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হবে। পরবর্তী সময়ে রাজা চার্লস প্রধানমন্ত্রী কারনি ও গভর্নর জেনারেল মেরি সাইমনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
গভর্নর জেনারেলের সরকারি বাসভবনে রিদু হলে রাজা চার্লস একটি গাছ রোপণ করবেন এবং কানাডার ১০টি প্রদেশের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ও আঞ্চলিক কমিশনারদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত এক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন। আগামী ২৭ মে, পূর্ণ সামরিক গার্ড অব অনারসহ রাজা ও রানি ২৮টি ঘোড়ায় টানা রথে চড়ে সিনেটে পৌঁছবেন এবং বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ‘থ্রোন স্পিচ’ দেবেন।
সফরের শেষ দিনে রাজা চার্লস অজানা সৈনিকের কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন।
উল্লেখ্য, ক্যান্সারে আক্রান্ত রাজা চার্লস বর্তমানে সাপ্তাহিক চিকিৎসা নিচ্ছেন, আর সে জন্য সফরের সময় একজন কানাডীয় চিকিৎসক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী কারনি গত এপ্রিলের শেষ দিকে দায়িত্ব নেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি কানাডার সার্বভৌমত্ব রক্ষাকে মূল অঙ্গীকার হিসেবে তুলে ধরেন।