কল করুন

কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স

ভিন্ন চোখে কাশ্মীর যুদ্ধ

মেজর (অব.) ড. নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ [সূত্র : কালবেলা, ১৩ মে ২০২৫]

ভিন্ন চোখে কাশ্মীর যুদ্ধ

প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটেছে কাশ্মীরকেন্দ্রিক পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতির। যে প্রেক্ষাপটে কোনো কলামিস্ট একটি লেখা শুরু করেন এবং যখন লেখাটা ছাপা হয়েছে, এর মাঝেই ঘটে গেছে অনেক কিছু, যার প্রভাব দুটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে উপমহাদেশের অন্যান্য দেশ, এমনকি বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। আবার গত ১০ মে প্রত্যাশিতভাবে মার্কিন মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধবিরতি ছিল অবাক করার মতো। গত মাসের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা কেন্দ্র করে এ যুদ্ধের সূত্রপাত। হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত এবং ১৭ জন আহত হন। কী উদ্দেশ্যে, কারা এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।

 

 

 

১৯৪৭ সাল থেকে পাকিস্তান প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশটির সেনাবাহিনীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে। রাজনীতিবিদ বা গণতান্ত্রিক সরকার উত্তপ্ত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশ চালাতে পারবে না, বরং তা পারবে একমাত্র সেনাবাহিনী—এমন বয়ান ও পরিস্থিতি তৈরি পাকিস্তানের রাজনীতি ও সেনাশাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ সেনাশাসন কোনো কারণে বেকায়দায় পড়লেই পাকিস্তানের কোথাও না কোথাও বড় গোলযোগ হয় এবং সন্ত্রাসী হামলা ঘটে কাশ্মীর অঞ্চলে। এরপর ত্রাণকর্তা রূপে আবির্ভূত হয় ইমেজ হারানো সেনাবাহিনী। কাশ্মীর ছাড়াও আফগান সীমান্তসহ পাকিস্তানের বহু অঞ্চলে হঠাৎই গজিয়ে ওঠে জঙ্গি বাহিনী এবং তাদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে দাঁড়ায় মসজিদ, দরগা এমনকি ঈদগাহ মাঠ। আর এমন জঙ্গিদের দমন করতে এগিয়ে আসে সেনাবাহিনী। অথচ এমন সেনাবাহিনীর একটি সুপরিচিত সেনানিবাসের পাশেই ছিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক নিষিদ্ধ উগ্র সংগঠন আল-কায়দার প্রাণপুরুষ ওসামা বিন লাদেনের বসবাস।

 

 

 

 

চলতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্য ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি) পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে অবস্থিত দারুল উলুম হাক্কানিয়া নামক মুসলমানদের একটি ধর্মশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে প্রখ্যাত ধর্মীয় নেতা হামিদুল হক হাক্কানিসহ ৮ জন প্রাণ হারান। আর আহত হন ২০ জন। একই ঘটনার ১১ দিন পর (১১ মার্চ) বেলুচিস্তানে ৪৫০ জন যাত্রীসহ আস্ত একটি যাত্রীবাহী ট্রেন অপহরণ করে জঙ্গিরা। পরে সেনাবাহিনী আটকে পড়া ট্রেনযাত্রীদের উদ্ধার করে। এ প্রক্রিয়ায় ৩৩ জন অপহরণকারীসহ ৬৪ জন নিহত হয়। আর নানা মাত্রায় আহত হয় আরও ৩৮ জন।

 

 

 
 

এক মাস পর এপ্রিলের ১৫ তারিখে আইএসকেপি সদস্যরা উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে বিস্ফোরক ব্যবহার করে আক্রমণ করে নিরাপত্তারক্ষী বহনকারী বাসের ওপর। বেলুচিস্তানের মাসটাং জেলায় সংঘটিত এ ঘটনায় মৃত্যু ঘটে ৩ সৈনিকের আর আহত হয় আরও ২০ জন। এরপর ২৫ এপ্রিল পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে আফগান জঙ্গিদের ঠেকাতে গুলি চালায় পাকিস্তানি সেনারা। ফলাফল—৭১ জঙ্গির করুণ মৃত্যু এবং বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার।

 
 
 
 

অতিসম্প্রতি (৮ মে, ২০২৫) তথাকথিত জঙ্গিগোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) দুটি জেলায় পৃথক দুটি হামলা চালায় সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে। ফলে শহীদ হয় ১৪ জন। এর দুদিন আগেও (৬ মে) কাচ্চি শহরে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে চলাচলরত সেনাবহরের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও সাতজন নিহত হয়।

 

 

 

এসব ঘটনার পাশাপাশি পাকিস্তানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে বড় রাজনৈতিক সমাবেশ হয় ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর। স্বামী ইমরানকে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে জেলে রাখায় তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসান (পিটিআই) ‘ফাইনাল কল’ নামের এই আন্দোলন শুরু করে। ওপরে উল্লিখিত কারণসমূহের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি সেনাবাহিনী বিশেষত সেনাপ্রধান জেনারেল আসিফ মুনির ইমেজ সংকটে পড়েন। তাই ইমেজ উদ্ধারে সেনাবাহিনীর পক্ষে কিছু ঘটানো ছিল অতি সম্ভাবনাময় বা অবধারিত।

 

 

 

পাকিস্তানে যখনই সেনা সমর্থিত বা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বিশেষত গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু হয়, তখনই হয় কাশ্মীর সীমান্ত উত্তপ্ত অথবা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে মসজিদ, দরগা কিংবা ঈদের দিনে ঈদগাহ মাঠে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তখন একমাত্র অবলম্বন হয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আর চুপসে যায় জমে ওঠা গণআন্দোলন। এবারের কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার দায় পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায় কাশ্মীরি জঙ্গিদের ওপর আরোপের যুক্তি হিসেবে অতীতের এ ইতিহাস বারবার উচ্চারিত হয়।

 

 

 

অন্যদিকে, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিশেষত নির্বাচনের সঙ্গে কাশ্মীর সীমান্তসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা ও জাতিগত দাঙ্গার যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শেষে ১৯৪৭-৪৮ সালে কাশ্মীরকেন্দ্রিক প্রথম পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ হয়। ১৯৪৭ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৪৯ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ যুদ্ধ জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি রেখা (বর্তমানে নিয়ন্ত্রণরেখা বা লাইন অব কন্ট্রোল নামে পরিচিত) নির্ধারণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এ যুদ্ধের পর ১৯৫১ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত প্রথম লোকসভা বা জাতীয় নির্বাচনে জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস ৪৮৯টি আসনের মধ্যে ৩৬৪ আসনে জয়লাভ করে।

 

 

 

ভারতে ১৯৫৭ সালে দ্বিতীয় এবং ১৯৬২ সালে তৃতীয় লোকসভা নির্বাচন হলেও পাকিস্তানে জাতীয় পর্যায়ে ওই ১২ বছরে কোনো নির্বাচন হয়নি। তখন পাকিস্তানের সর্বত্র নির্বাচনের দাবি ওঠে।‌ এমনই এক প্রেক্ষাপটে ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর আক্রমণ করে এবং ‘অপারেশন জিব্রাল্টার’ নামে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ভারতও পাল্টা জবাব দেয়। এর মধ্যে ১৯৬৭ সালে ভারতে চতুর্থ লোকসভা নির্বাচন হয়। এতে জয়লাভ করেন ক্ষমতাসীন ইন্দিরা গান্ধীর দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস। আর অনিশ্চিত হয় পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন। এতে ভারতের ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা একই সঙ্গে সন্তুষ্টি লাভ করেন। আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকে পৃথিবীর ভূস্বর্গ নামে পরিচিত কাশ্মীরের সুন্দর মানুষগুলো।

 

 

 

অন্যদিকে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মোট ৩১৩টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬২টি আসনের মধ্যে ১৬০টি আসন লাভ করে। দেশের অপরাংশ অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তানের পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ১৫১টির মধ্যে ৮১টি আসন লাভ করে।‌ তখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানের জান্তা সরকার কাশ্মীর সীমান্ত ও পূর্ব পাকিস্তানে একসঙ্গে যুদ্ধ বাধায়। নয় মাসের যুদ্ধের ফলে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ, কিন্তু পরাধীন থেকে যায় কাশ্মীরের জনগণ।

 

 

 

আবার ভারতের পঞ্চম লোকসভা নির্বাচন হয় ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে, অর্থাৎ পূর্ব-পাকিস্তান ও কাশ্মীরে যুদ্ধ শুরুর আগমুহূর্তে। এ যুদ্ধের আগে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে জাতীয় ঐক্য ও একটি শক্তিশালী সরকার ব্যবস্থার অত্যাবশ্যকীয়তার কথা ভোটারদের সামনে তুলে ধরে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস। এর ফলে তারা লোকসভা অর্থাৎ সংসদের ৩৬০টি আসনে জয় নিশ্চিত করে।

 

 

১৯৯৯ সালে কাশ্মীর সীমান্তে কারগিল যুদ্ধ হয় মে, জুন ও জুলাই মাসে। এ যুদ্ধে ভারতের জয় হয় বলে ধরা হয়। যুদ্ধের দুই মাস পর ভারতে ১৩তম লোকসভার নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি জোট পূর্বের নির্বাচনে প্রাপ্ত ১৪১টি আসনের রেকর্ড অতিক্রম করে ১৮০টি আসন লাভ করে। এ যুদ্ধে হেরে যাওয়ায় পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। আর অস্থিরতা দমনের নামে পাকিস্তান মুসলিম লীগের পক্ষে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফকে তাড়িয়ে ক্ষমতায় আসেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। অপরিবর্তিতই থাকে কাশ্মীরবাসীর অবস্থান।

 

 

 

২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো জঙ্গি দমনের নামে পাকিস্তান সীমান্তে ঢুকে পড়ে এবং খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে তথাকথিত জঙ্গি আস্তানায় বোমা হামলা চালায়। তখন সর্বাত্মক যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। উভয় দেশে এ বিমান হামলার এক মাস পর শুরু হয় ভারতীয় ১৭তম লোকসভা নির্বাচন। যুদ্ধ পরিস্থিতি ও জাতীয় ঐক্যের স্লোগানবিশিষ্ট এ নির্বাচনে নিশ্চিত হয় নরেন্দ্র মোদির জয় ও তার দল বিজেপির ৩০৩টি আসন লাভ হয়।

 

 

 

সম্প্রতি কাশ্মীর যুদ্ধের আগে পাকিস্তানের ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে সর্বাত্মক আন্দোলনের কথা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারতে মোটাদাগে যে সমস্যাগুলো বিরাজ করছিল, তার মধ্যে ওয়াকফ বিল নিয়ে বিতর্ক, মিজোরামে বিক্ষোভ, বিশ্বজুড়ে স্বাধীন খালিস্তান বা শিখদের পৃথক রাষ্ট্র গড়ার প্রচেষ্টা, নাগরিকত্ব বিতর্ক এবং কাশ্মীরের রাজনৈতিক মর্যাদা ও সেনা নিয়ন্ত্রণ ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তদুপরি আমেরিকা থেকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে ভারতীয়দের হাত বেঁধে দেশে ফেরত পাঠানো এবং কানাডার সঙ্গে বিজেপি সরকারের টানাপোড়েন ছিল বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো। অনেক বিশ্লেষকের দৃষ্টিতে উপরোক্ত কারণে বিজেপি সরকার কোণঠাসা হয়ে পড়ছিল। এর মধ্যে আবার এগিয়ে আসে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচন, যা পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের পটভূমি তৈরি করে বলে সর্বজনবিদিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০২৫ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে প্রাদেশিক নির্বাচন হবে বিহার রাজ্যে। আর ২০২৬ সালের মের মধ্যে প্রাদেশিক নির্বাচন হবে আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু ও পশ্চিম বাংলায়। এসব নির্বাচনের ঠিক এক বছর আগে চলতি মে মাসে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ ও আমেরিকার মধ্যস্থতায় হঠাৎ যুদ্ধবিরতির বিষয়টি ইতিহাস অচিরেই মূল্যায়ন করবে।

 

 

 

অন্যদিকে ফ্রান্সের ডিঅ্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন কোম্পানি থেকে ২৬টি রাফায়েল জঙ্গি বিমান কেনার ব্যবস্থা করেছিল ভারতের বিমানবাহিনী। বিভিন্ন সূত্রে দাবি, ভারতকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩৬টি রাফায়েল জঙ্গি বিমান সরবরাহ করে ফ্রান্সের এ কোম্পানি। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো ভারত সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের অহংকার বলে পরিচিত রাফায়েল যুদ্ধবিমান পাঠায় সাম্প্রতিক কাশ্মীর যুদ্ধে, যেখানে তিনটি রাফায়েল বিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান। এতে শেয়ার মার্কেটে দ্রুত কমতে থাকে রাফায়েল নির্মাতা ডিঅ্যাসল্টের শেয়ারমূল্য। এক দিনেই এ শেয়ারের মূল্য ৬ শতাংশ কমে বলে তথ্য পাওয়া যায়।

 

 

 

অন্যদিকে ফ্রান্সের অত্যাধুনিক রাফায়েল জঙ্গি বিমান ধ্বংসের দাবিদার পাকিস্তানের থাকা পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান জে-১০। এই জে-১০ যুদ্ধবিমানের নির্মাতা চীনের চেংডু এয়ারক্রাফট করপোরেশন। রাফায়েল ভূপাতিত হওয়ার পর থেকে এ কোম্পানির শেয়ারমূল্য ক্রমেই বাড়তে থাকে এবং এক দিনে শেয়ারের মূল্য ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ার রেকর্ড সৃষ্টি হয়। কোনো বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে জে-১০ যুদ্ধবিমানের প্রথম ব্যবহার হয় কাশ্মীরে, যার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সব সংবাদমাধ্যম। আর এ কথা সবার জানা যে, পাকিস্তানের প্রায় ৮০ ভাগ যুদ্ধ সরঞ্জাম চীনের তৈরি ও সরবরাহ করা। চীনের কথাতেই পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু করে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। আবার চীনা বিমান নির্মাতা কোম্পানির আকাশচুম্বী সাফল্য ও শেয়ারবাজারে তোলা ঝড় সামাল দিতেই আমেরিকা দ্রুত যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছে বলেও ভাবছেন কেউ কেউ। আবার সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও জমে গিয়েছিল কাশ্মীর ঘিরে। যুদ্ধের অনেক অজানা বিষয় হয়তো অচিরেই জানান দেবে এ মাধ্যমগুলো। কারণ সেখানেও আছে লাইক, শেয়ার, ভিউ অর্থাৎ টাকা-কড়ির হিসাব। কিন্তু হিসাব করে কেউ বলতে পারে না, শান্তির সুবাতাস কবে বইবে কাশ্মীরের ভূস্বর্গে।

 

 

লেখক: অবসরপ্রাপ্ত মেজর

গবেষক, বিশ্লেষক ও কলামিস্ট