ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় বাড়তে পারে ব্রেন্টের দাম
সূত্র : বণিক বার্তা, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এখনো অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এখনো অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এর মধ্যে চলতি ও আগামী বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দামের পূর্বাভাস সংশোধন করেছে মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস। এ সময় এটির দাম আগের পূর্বাভাসের তুলনায় বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর রয়টার্স।
সর্বশেষ প্রতিবেদনে গোল্ডম্যান স্যাকস জানায়, ২০২৫ ও ২০২৬ সালে ব্রেন্টের গড় দাম হতে পারে যথাক্রমে ব্যারেলপ্রতি ৭৮ ও ৭৩ ডলার, আগের দেয়া পূর্বাভাসে যা ছিল ৭৬ ও ৭১ ডলার। এর আগে একটি নোটে মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংকটি জানায়, আগামী এপ্রিল-মে মাসে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
এছাড়া গোল্ডম্যান স্যাকস সর্বশেষ প্রতিবেদনে উন্নত অর্থনীতিগুলোর সংগঠন ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাণিজ্যিক মজুদ কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। এ সময় মজুদ কমে দৈনিক গড়ে ৪ কোটি ৮০ লাখ ব্যারেল হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এর পেছনে ভূমিকা রাখবে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য ওপেকবহির্ভূত দেশগুলোর নিম্নমুখী উত্তোলন।
গোল্ডম্যান স্যাকস আরো জানায়, ইরান ও রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে যদি জ্বালানি তেলের সরবরাহ দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেল কমে, তাহলে ব্রেন্টের দাম অস্থায়ীভাবে ব্যারেলে ৯৩ ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। তবে গোল্ডম্যান স্যাকস সতর্ক করেছে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ট্রাম্প যদি সব ধরনের পণ্যের আমদানিতে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে ব্রেন্টের দাম ব্যারেলে ৬০ ডলারের নিচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম আরো কমিয়ে আনতে ওপেকভুক্ত (পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন) দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর মধ্যে ওপেক ও রাশিয়াসহ অন্যান্য সহযোগী দেশ নিয়ে গঠিত সংগঠন ওপেক প্লাসের বৈঠক আজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বৈঠকে তাদের নিজস্ব উত্তোলন বৃদ্ধির পরিকল্পনা পরিবর্তন করার সম্ভাবনা কম বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চার সূত্র জানিয়েছে।
যদিও আরো দুটি সূত্র জানায়, ‘এখনো এ বিষয়ে কিছু বলা কঠিন।’ তবে এ বিষয়ে সৌদি আরবের কমিউনিকেশনস অফিস ও ওপেক কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এদিকে ওপেক প্লাস সদস্যভুক্ত দেশ কাজাখস্তান গত সপ্তাহে জানায়, তারা ট্রাম্পের মার্কিন জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবে। এছাড়া এ বিষয়ে একটি যৌথ পদক্ষেপ নেবে।
বর্তমানে ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো দৈনিক গড়ে ৫৮ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন কমিয়ে রেখেছে, যা বৈশ্বিক মোট সরবরাহের প্রায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসেবে ২০২২ সাল থেকে উত্তোলন কমাচ্ছে সংস্থাটি।