অনুমতি নিয়ে ভাইভা রুমে ঢুকে সালাম দিলাম। আমাকে বসতে বললেন। ধন্যবাদ দিয়ে বসলাম। চেয়ারম্যান : আচ্ছা তুমি তো ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসে পড়ালেখা করেছ। তার মানে তুমি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিষয়ে এক্সপার্ট! (কিছু না বলে মুচকি হাসি দিলাম।)
আচ্ছা বলো তো, ওভার ইনভয়েস ও আন্ডার ইনভয়েস কী?
—স্যার, ওভার ইনভয়েস হলো আমদানীকৃত পণ্যের পরিমাণ এবং মূল্য বেশি দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ বিদেশে পাচারের একটা অবৈধ পন্থা। আর আন্ডার ইনভয়েস হলো রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের পরিমাণ এবং মূল্য কম দেখিয়ে দেশে কম অর্থ নিয়ে আসা এবং অতিরিক্ত অর্থ বিদেশে জমা রাখার অবৈধ পন্থা।
এখন বলো, ট্যাক্স বা কর কত প্রকার ও কী কী? উদাহরণ দাও। —স্যার, ট্যাক্স বা কর মূলত দুই প্রকার। প্রত্যক্ষ কর ও পরোক্ষ কর। আয়কর, জমির খাজনা—এগুলো হলো প্রত্যক্ষ কর। আর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হলো পরোক্ষ কর।
এক্সটার্নাল-১ : আচ্ছা, এটা তোমার কততম বিসিএস?
—স্যার, এটা আমার দ্বিতীয় বিসিএস।
প্রথম বিসিএসের কী অবস্থা?
—স্যার, প্রথম বিসিএসে (৪০তম) প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হইনি।
তাহলে দ্বিতীয় বিসিএসে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করে ভাইভা দিচ্ছ? বাহ! আচ্ছা বলো, স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ কয়টি ও কী কী?
—স্যার, স্মার্ট বাংলাদেশের স্তম্ভ ৪টি। যেমন—স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট গভর্নমেন্ট।
স্মার্ট সিটিজেন বলতে তুমি কী বুঝো?
—স্যার, স্মার্ট সিটিজেন হলো প্রযুক্তিতে দক্ষতাসম্পন্ন জনগণ, যারা দক্ষতার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে শহর ও গ্রামের ব্যবধান দূর করবে।
দৈনন্দিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা তাদের কাজকে সহজ করে তুলবে।
ঠিক আছে, ভাষা আন্দোলন তো আমাদের জাতীয় জীবনের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। বলো তো, ভাষা আন্দোলনের ফলে বাঙালিদের মধ্যে কী জাগ্রত হয়েছিল।
—স্যার, ভাষা আন্দোলনের ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ জাগ্রত হয়েছিল। বাঙালির মুক্তির আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়েছিল। আর এর মাধ্যমে ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ’৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬ সালের ছয় দফা, ’৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ’৭০ সালের নির্বাচন হয়। সবশেষে ’৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি শোষণ থেকে মুক্তি পেয়েছে।
এক্সটার্নাল-২ : স্মার্ট বাংলাদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এর ইতিবাচক প্রভাব কী হবে?
—স্যার, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এর প্রভাব অনেক। যেমন—রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, বিদেশি বিনিয়োগকে আকর্ষণ করবে,
বাণিজ্য কার্যক্রম সহজ হবে। অর্থাৎ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বাণিজ্য প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছ হবে।
তোমার জেলা কোনটি? আর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে তোমার জেলার অবদান কী?
—স্যার, আমার জেলা সাতক্ষীরা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমার জেলার অবদান অনেক। আমার জেলায় প্রচুর চিংড়ি উৎপাদিত হয়, যা বিদেশেও রপ্তানি হয়। প্রতিবছর সুস্বাদু আম্রপালি আম এবং টালি বিদেশে রপ্তানি হয়। এর ফলে উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।
চেয়ারম্যান : ঠিক আছে, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। তোমার ভাইভা শেষ।
সহকারী জেলা কমান্ড্যান্ট, ৪১তম বিসিএস