চেয়ারম্যান: আপনি সমাজসেবা অধিদপ্তরে চাকরি করছেন?
—জি স্যার।
কোথায় পোস্টিং?
—সাটুরিয়া উপজেলা, মানিকগঞ্জ।
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সম্পর্কে জানেন? কী এটা?
—জি স্যার। একটি দেশে যখন কর্মহীন মানুষের তুলনায় কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তখন তাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলে।
অর্থাৎ ১৫-৬৪ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা বেশি থাকবে এবং তারা কর্মক্ষম হবে।
এই পর্যায় শেষ হলে কী হবে?
—স্যার, বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে।
তখন আমাদের জন্য কি ঝুঁকি তৈরি হবে না?
—জি স্যার, হবে।
এটি কিভাবে মোকাবেলা করবেন?
—২০৩৮ সালের মধ্যে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারব! স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বেরোতে পারলে আমার মনে হয় আমরা ঝুঁকি সামাল দিতে পারব।
আচ্ছা, বয়স্ক লোকের হার বেড়ে যাবে বললেন! তাহলে এবার বলুন, আপনারা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বয়স্কদের জন্য কী কী সুবিধা দিচ্ছেন?
—বয়স্ক ভাতা আগে মাসিক ৫০০ টাকা ছিল, এখন বছরে ৬০০ টাকা। আটটি বিভাগীয় শহরে প্রবীণ নিবাস স্থাপন করা হয়েছে। প্রবীণ উন্নয়ন নীতিমালা-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে, তাদের জন্য হাসপাতালে একটি আলাদা কর্নার করা হবে।
ফোরআইআর-এর নাম শুনেছেন? এটা কী?
—জি স্যার।
ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশন। এটি মূলত প্রযুক্তির উন্নয়ন ও উৎকর্ষতাকে নির্দেশ করে।
প্রবীণদের সংখ্যা বেড়ে গেলে তাদের ফোরআইআর-এর সঙ্গে কিভাবে সম্পৃক্ত করবেন?
—প্রবীণদের প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। তাদের এ বিষয়ে কর্মশালা বা প্রশিক্ষণ দেব। এ ছাড়া নিয়মিত ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির ব্যবহারের সুযোগ তৈরিতেও সহায়তা করব।
আচ্ছা এখন পর্যন্ত কতটা রেভল্যুশন (বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে) হয়েছে?
—৪টা।
এক্সটার্নাল-১: বলুন তো, শিল্প বিপ্লব কবে হয়েছে?
—ইংল্যান্ডে, ১৭৬০ থেকে ১৮৪০ সালে।
কত শতক বলে এটাকে।
—আঠারো শতক।
কী লাভ হয়েছিল এর ফলে?
—শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠে, নতুন নতুন উৎপাদন শুরু হয়। নতুন নতুন কলাকৌশল আবিষ্কৃত হতে থাকে। কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায় ও বেকারত্ব দূর হয়।
এটাকে কি ফোরআইআরের মতো মনে হচ্ছে?
—অনেকটাই স্যার। কারণ, ফোরআইআরের কারণে প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে আর শিল্পবিপ্লবের ফলে কলকারখানা গড়ে উঠেছে। শিল্পের পরিধিও বেড়েছে। শিল্পবিপ্লবের পরেও কি ঝুঁকি বেড়েছিল?
—জি স্যার।
কী কী ঝুঁকি বেড়েছিল?
—সামাজিক অপকর্মের হার বেড়ে যায়। শহরে মাদকাসক্ত মানুষের হার বেড়ে যায়, কিশোর অপরাধসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়।
সমাজকর্মের দার্শনিক মূল্যবোধ কী কী?
—অন্যের মতামতের প্রতি সম্মান করা, মূল্য ও মর্যাদার স্বীকৃতি দেওয়া, সবাই আমরা আলাদা বৈশিষ্ট্যের মানুষ এটা বিশ্বাস করা ইত্যাদি।
‘শিল্পবিপ্লব দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ’—কথাটি সমাজকর্মের আলোকে বুঝিয়ে দেন।
(আমি বিস্তারিত উত্তর দিলাম।)
সমাজসেবা অধিদপ্তর জনকল্যাণে সুনির্দিষ্ট দুটি কাজ করছে, সেগুলো কী কী?
—পল্লী সমাজসেবা কার্যক্রম (আরএসএস) ও নগর সমাজ উন্নয়ন (ইউসিডি)। [সঠিক উত্তর হবে শহর সমাজসেবা (ইউএসএস) ও ইউসিডি।]
এক্সটার্নাল-২: আপনারা ভাতা দেন, এ নিয়ে বহু সমস্যা হয়। স্থানীয় চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সমন্বয়ে সমস্যা হয়। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ, তাই না?
—জি স্যার।
সমাজকর্ম পড়ে ক্যাডার পছন্দক্রমের প্রথমেই বিসিএস প্রশাসন দিয়েছেন। আপনাকে ইউএনও পদে নিয়োগ দিলে কিভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবেন?
—সমাজসেবা অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করব। জনপ্রতিনিধিদের ডেকে মিটিং করব, সেমিনার করব। যারা উপকারভোগী, তাদের ডেকেও মিটিং করব। তাদের সেবা পেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না তা খোঁজ নেব। যদি তারা সেবা পেতে সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাহলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। ভাতার জন্য আবেদন এলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া বিধি মেনে কাজের পরামর্শ দেব। সব কিছু নিয়মিত মনিটরিং করব।
ঠিক আছে, আপনি এবার আসুন।
(আমার কাগজপত্রগুলো নিয়ে সালাম দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে এলাম।)